রাবি ভর্তি পরীক্ষা বাড়তি মানুষের চাপে ভাড়া দ্বিগুন

নিজস্ব প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিনিধি

২৪ জুলাই, ২০২২, ১ year আগে

রাবি ভর্তি পরীক্ষা বাড়তি মানুষের চাপে ভাড়া দ্বিগুন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা সোমবার (২৫ জুলাই) শুরু হবে। চলবে বুধবার (২৭ জুলাই) পর্যন্ত। কিন্তু এর আগেই গত শুক্রবার থেকে নগরীতে বেড়ে গেছে গাড়ি ভাড়া ও খাবারের দাম।

একই সাথে রয়েছে আবাসন সঙ্কটের সমস্যা। অনেকেই অভিযোগ করে বলছেন, ভর্তি পরীক্ষার সময় হলে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। প্রতিটি আবাসিক হোটেলে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী নুরুজ্জামান।

তিনি গতকাল শনিবার নগরীর রেলস্টেশন থেকে রাবি গেটে যান। এ সময় তাকে অটো ভাড়া দিতে হয়েছে ৩০ টাকা। ফিরতি পথে আসতে দিতে হয়েছে ৫০ টাকা। তিনি বলেন, রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গেটের ভাড়া ১৫ টাকা অথচ দিতে হলো ৩০ টাকা। সবার নিকট থেকেই ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে।

ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবকদের বাড়তি চাপের সুযোগ নিয়ে রাজশাহীতেঅতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে।নগরীর ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা যাত্রীদের মাঝে। এই অভিযোগ রয়েছে নগরবাসীর মধ্যে।

কাজলা থেকে সাহেব বাজার গামী একজন যাত্রী বলেন, আমি প্রতিদিন কাজলা থেকে সাহেববাজার যাই অটোরিকশায় করে। কাজলা থেকে সাহেব বাজারের ভাড়া আট টাকা। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে ১০ টাকা নেয়া হলেও শনিবার ১৫ থেকে ২০ টাকা অটোরিকশা ভাড়া নেয়া হচ্ছে। ভাড়া বেশি কেন নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে অটোরিকশা চালকরা দুর্ব্যবহার করছে। চালকরা বলছেন, ‘গেলে যান না গেলে না যান।’

অটোরিকশা ভাড়ার মতোই বেড়েছে খাবার হোটেলে বিভিন্ন খাদ্যের দাম। রাবি'র আবাসিক শিক্ষার্থী সোহান বলেন, শনিবার দুপুরে এলাকার পরিচিত ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের নিয়ে তালাইমারীর একটি খাবার হোটেলে গেলে সেখানেও খাবারের বেশি দাম ধরা হয়। সোহানের মতো রাজশাহীর বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁয় খাবারের দাম বৃদ্ধি শুরু করেছে বলে অভিযোগ করছেন ভোক্তারা।

ভোক্তারা বলছেন, অযৌক্তিক ভাবে দাম বৃদ্ধির কোন কারণ হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসছেন তারা সবাই আমাদের অতিথি। অতিথিদের সাথে এমন আচরণ করলে রাজশাহীর সম্মান ক্ষুণ্ন হবে।

নগরীর শিরোইল বাসটার্মিনাল এলাকার রেজাউল তার আত্মীয়ের জন্য দুই দিন ধরে আবাসিক হোটেলে সিট খুঁজছেন। শহরের প্রায় অধিকাংশ হোটেলে গিয়েও সিট পায়নি। কোথাও কোনো সিট নেই। এক আত্মীয় এবার ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসবে। তাই ২৫ তারিখের একটি সিট দরকার ছিল পাইনি বলে জানান তিনি।

রাজশাহী আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হাসান কবির বলেন, প্রতি বছরই এই সময়টায় এ ধরনের সংকট তৈরি হয়। আমরা হোটেল মালিকরা এই সময়টায় বিব্রত হই, বিড়ম্বনাতেও পড়ি। কারণ চেনাজানা অনেকেই আছেন, যারা হোটেলে সিট চান। আমরা পর্যাপ্ত সিট না থাকায় চাহিদা পুরনে ব্যর্থ।

ইজিবাইক ও অটোরিকশা সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, ভাড়া বেশি নেওয়ার বিষয়টি আমরা জানি না। তবে আমরা এখন জানলাম, খতিয়ে দেখা হবে।

ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ জানান, আমরা রোববার (আজ) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকাগুলো যাবো। সেখানে প্রতিটা হোটেল ও রেস্তোরাঁর খাবারের মান ও মুল্য তালিকা পর্যবেক্ষণ করবো। কোন ব্যবসায়ী যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে খাবারের মূল্যবৃদ্ধি করে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো। এই অভিযান ভর্তি পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অব্যহত থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরের কোনো দোকানে খাবারের অতিরিক্ত দাম কিংবা যানবাহনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন ইউনিটে চার হাজার ২০ আসনের বিপরীতে এবার ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিতে রাজশাহী আসবেন এক লাখ ৭৮ হাজার ২৬৮ পরীক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে আসবেন অভিভাবক। সব মিলিয়ে বাড়তি অন্তত প্রায় চার লাখেরও বেশি মানুষের চাপ পড়বে রাজশাহীতে।

পত্রিকাএকাত্তর /রবিউল ইসলাম

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news