ইসলামে আজান ও ইকামত নামাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের মাধ্যমে মুসলমানদের নামাজের আহ্বান জানানো হয় এবং জামাতে শৃঙ্খলা বজায় থাকে। তাই আজান বা ইকামত দেওয়ার সময় কোনো অংশ ভুলে যাওয়া বা বাক্য ছুটে যাওয়া—এ বিষয়ে শরিয়তের নির্দেশনা জানা অত্যাবশ্যক।
উলামায়ে কেরাম জানিয়েছেন, আজান বা ইকামতের কোনো বাক্য ছুটে গেলে তার করণীয় নির্ভর করে কখন ভুলটির কথা স্মরণ হলো তার ওপর। নিচে এ বিষয়ে স্পষ্ট বিধান তুলে ধরা হলো
আজান বা ইকামতের সময়ই ভুল ধরা পড়লে
যদি আজান বা ইকামত চলমান অবস্থায়, কিংবা শেষ করার ঠিক পরপরই মনে পড়ে যে একটি বাক্য বাদ গেছে—তাহলে ছুটে যাওয়া বাক্য থেকে শুরু করে বাকিগুলো আবার বলা হবে।এই অবস্থায় পুরো আজান বা পুরো ইকামত নতুন করে শুরু করার প্রয়োজন নেই।
কিছুক্ষণ পরে ভুল মনে হলে
যদি আজান বা ইকামত শেষ হওয়ার পর কিছুটা সময় পেরিয়ে ভুলটির কথা মনে পড়ে—তাহলে নতুন করে শুরু থেকে আজান বা ইকামত দিতে হবে।কারণ দীর্ঘ বিরতির পর অসম্পূর্ণ আজান পুনরায় ধরার নিয়ম নেই।
ফজরের আজানে বিশেষ বিধান
ফজরের আজানে রয়েছে অতিরিক্ত বাক্য—
“আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম” (নামাজ ঘুমের চেয়ে উত্তম)
এই বাক্যটি যদি ছুটে যায়—
আজানের ভেতরে বা ঠিক পরক্ষণে মনে হলে:ওই বাক্য থেকে পুনরায় বলা উত্তম।
তবে আজানের অনেকক্ষণ পর স্মরণ হলে:নতুন করে আজান দিতে হবে না। আগের আজানই যথেষ্ট হবে।
আজান ও ইকামতের গুরুত্ব
ইসলামে ফরজ নামাজের আগে আজান দেওয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা, যা ওয়াজিবের কাছাকাছি গুরুত্ব বহন করে। আর জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য ইকামত দেওয়া সুন্নত। আজান ও ইকামত ইসলামের অন্যতম পরিচয়বাহী নিদর্শন, তাই এগুলো যথাযথভাবে আদায় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সমাজে সাধারণত একজন মুয়াজ্জিন আজান ও ইকামত দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেন, আর ইমাম ইকামত শেষ হলেই নামাজ শুরু করেন। তাই মুয়াজ্জিনদের জন্য আজানের নিয়ম-কানুন সঠিকভাবে জানা বিশেষভাবে জরুরি।

