নবীজি (সা.)-এর চুল যেমন ছিল

ধর্ম ডেস্ক

ধর্ম ডেস্ক

৩ জুন, ২০২২, ১ year আগে

নবীজি (সা.)-এর চুল যেমন ছিল

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আরব-পুরুষদের রীতি ছিল লম্বা চুল রাখা। রাসুল নিজেও লম্বা চুল রাখতেন। তার চুল কখনো কানের মাঝামাঝি, কানের লতি কিংবা দুই কাঁধ পর্যন্ত লম্বা থাকতো। তার চুল কাঁধ ছাড়িয়ে আরো লম্বা হত বলে জানা যায়। (তিরমিজি, আশ-শামাইল আল-মুহাম্মাদিয়া: ৪৭-৫০; আবু দাউদ; ৪/৮১; আলবানি, মুখতাসারুশ শামাইল: ৩৪-৩৬)

কখনো এতদূর পর্যন্ত লম্বা হতো যে, তা বেণী বা গুচ্ছ করে রাখতেন। তার চাচাতো বোন উম্মে হানি (রা,) বলেন, ‘(মক্কা বিজয়ের সময়) আল্লাহর রাসুল যখন মক্কায় আগমন করলেন, তখন তার চুলে চারটি গুচ্ছ বা বেণী ছিল। (তিরমিজি, আস-সুনান ৪/২৪৬; আবু দাউদ, আস-সুনান : ৪/৮৩, ইবনু মাজাহ, আস-সুনান : ২/১১৯৯; ইবনু হাজার, ফাতহুল বারি : ৬/৫৭২, ১০/৩৬০; আলবানি, মুখাতাসারুশ শামাইল : ৩৫)

আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন, ‘তার চুল যখন লম্বা হতো তখন তিনি তা চারটি গুচ্ছে বিভক্ত রাখতেন।’ (যাদুল মা’আদ : ১/১৭০)

উল্লেখ্য যে, আরবিতে চুল জড়িয়ে বা বিনুনি করাকে "গাদীরাহ" বলে। হাদীসে "আরবায়ু গাদায়ের" চারটি গুচ্ছ ভাষাটি ব্যাবহার হয়েছে।

ইবনু হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, ‘অধিকাংশ সময়ে তার চুল এরূপ কাঁধের কাছাকাছি থাকত। কখনো তা আরো লম্বা হতো এবং ঝুলন্ত গুচ্ছে পরিণত হতো। তিনি সেগুলোকে বেণী বানিয়ে রাখতেন।’ তবে কাঁধ পর্যন্ত থাকা তার স্বাভাবিকতা ছিল। (ইবনু হাজার, ফাতহুল বারি : ১০/৩৬০)

হজ বা ওমরাহ ব্যতীত তিনি কখনো মাথার চুল মুণ্ডন করেছেন— বলে জানা যায় না। (ইবনুল কাইয়িম, যাদুল মা’আদ : ১/১৬৭, শামি, সিরাহ শামিয়াহ : ৭/৩৪৯-৩৫০)

সেজন্যই এ নিয়ে মতভেদ আছে— মুণ্ডন করা যাবে কি যাবে না। কোনো কোনো ফকিহ হজ-ওমরাহ ছাড়া মাথা মুণ্ডনকে মাকরুহ বলেছেন। দুই কারণে তাদের মতের পক্ষে এ প্রমাণ পেশ করেন। প্রথমত, রাসুল (সা.) নিজে কখনোই হজ-ওমরাহ ছাড়া মাথা মুণ্ডন করেননি। দ্বিতীয়ত - বিভিন্ন হাদিস থেকে মাথা মুণ্ডন আপত্তিকর বলে জানা যায়। সাহাবিগণ ছোট চুল রাখতেন; নেড়া করা পরিহার করতেন।

জাবির (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘হজ বা ওমরাহ ছাড়া মাথার চুল ফেলা যাবে না।’ (হাদিসটির সনদ দুর্বল; তাবারানি, আল মুজামুল আওসাত : ৯/১৮০)

দূর্বল হলেও বেশ কয়েক সনদে হাদিসটি উল্লেখ আছে। (তবে হাদীসের বর্ননা সূত্রের কেউ মিথ্যায় অভিযুক্ত নন)। আবু নু'আইমের বর্ণনায় হাদিসটি হলো, হজ বা ওমরাহ ছাড়া মাথার চুল ফেলা যাবে না। এছাড়া তা সৃষ্টি-বিকৃতি করা বলে গণ্য হবে।’ (আবু নুআইম, হিলইয়াতুল আউলিয়া : ৮/১৩৯)

লেখা:শায়খ আবদুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news