আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান মিয়ার রাজনৈতিক কিছু কথা

পত্রিকা একাত্তর

পত্রিকা একাত্তর

২৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ২ years আগে

আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান মিয়ার রাজনৈতিক কিছু কথা

যিনি রাজনৈতিক জীবনের অধিকাংশ সময়টা দলের জন্য ব্যায় করেছেন, এখনও করছেন।

একজন আওয়ামীলীগ নেতা আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান মিয়ার রাজনীতির কিছু কথা! নানা ষড়যন্ত্র,অসাধু, হাইব্রিড কালো টাকার ধাবার হাত থেকে তাঁর রাজনীতি সামনে অগ্রসরমান।

৩ নং আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের মরহুম কাঞ্চন মিয়ার সাত সন্তানের মধ্যে তিনি হলেন জেষ্ঠ পুএ।এক সমভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। তিনি নিজেও আপাদমস্তক মুজিব আদর্শে বিশ্বাসী । ১৯৯৭ সালের ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে প্রথম বারেই বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

আসলে এলাকার জনগন মনে করেন, যেই মানের নেতা তাতে ইউনিয়ন পরিষদে খুবই বেমানান। তবুও সততার সাথে চেয়ারম্যানী করে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যে ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচন চলে আসে। আওয়ামীলীগের মনোনয়নের জন্য নেতাকর্মীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। আমতলীতে নিজের অর্থায়নে উপজেলা আওয়ামিলীগের দলীয় অফিস ভবন স্থাপন করেন। কিন্তু মনোনয়ন পান মরহুম মজিবুর রহমান তালুকদার। আমাদের আঠারগাছিয়া ইউনিয়নেরই গাজীপুর বন্দরে নির্বাচনী প্রচারনা চলা কালে হৃদরোগে জনাব মজিবুর রহমান তালুকদার ইন্তেকাল করেন।

পরবর্তীতে ২০০১ সালের সেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই আমতলী-তালতালী আসনের প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচিত হন। কিন্তু দল ক্ষমতায় আসেনি। নির্বাচন পরিচালনায় জনাব ফোরকান মিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। অথচ ১ম নির্বাচনে যদি জনাব গোলাম সরোয়ার ফোরকান সাহেব কে মনোনয়ন দেয়া হত তখন এক চান্সে তিনিও এমপি হতেন। যা হোক তখন শেখ হাসিনা এমপি হলেও ক্ষমতায় আসে বিএনপি।

এবার উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন পান জনাব গোলাম সরোয়ার ফোরকান। আবারও বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করেও দল ক্ষমতায় না থাকায় এমপি হওয়া হলোনা ফোরকান মিয়ার। অপজিশন পার্টি ক্ষমতায় থাকায় ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ। এর মধ্যেও ২০০৩ সালে অাঠারগাছিয়া ইউপি নির্বাচনে তারই ছোটভাই জনাব রফিকুল ইসলাম রিপন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দল ক্ষমতায় না থাকায় ইউপিতে তেমন কোন ভালো উন্নয়ন করতে পারেননি।এমনকি ২০০৩ সালে নিজ অর্থায়নে আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ পার্টি অফিস তৈরি করেন।এরপর দেশে ওয়ান ইলেভেন আর সিডর আসে।

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য জনাব ফোরকান মিয়া জনমত জড়িপে এগিয়ে থাকলেও তিনি মনোনয়ন পাননি। কিন্তু দলের হাল ছাড়েননি । এমনকি ২০১১ সালের ৩নং আঠারগাছিয়া ইউপি নির্বাচনে তার ভাই রিপন মিয়াও আওয়ামীলীগের দলীয় সমর্থন পাননি। জনমত থাকলেও চেয়ারম্যান হওয়া আর সম্ভব হলোনা। ছিটকে যান ইউনিয়ন থেকেও।

এবার আসে ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচন। আবারও ভাগ্য বিড়ম্বনায় জনাব গোলাম সরোয়ার ফোরকান। এমপির টিকিট পায় ধীরেন্দ্র দেবনাথ সম্ভু বাবু। একই বছর দলীয় টিকিটে উপজেলা চেয়ারম্যান হন প্রয়াত নেতা জিএম দেলোয়ার হোসেন। ভাগ্যের চাকা যেন ঘুরছেই না তার। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও একই গান। এমনকি উপজেলা চেয়ারম্যান পদেও নমিনেশন চেয়েও পেলেন না। কিন্তু তাতে কি? হয়ত জনগণের ভালবাসার কারনে এবার যে আর দলীয় সিদ্ধান্ত মানতে পারলেন না তিনি। উপজেলা চেয়ারম্যান পদে হলেন বিদ্রোহী প্রার্থী।

দলীয় ভাগ্য বিড়ম্বিত জনগণের নেতা গোলাম সরোয়ার ফোরকান এবার বিপুল ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন। বিজয় হলো জনগণের ভালবাসার। কিন্তু চেয়ারে যাতে বসতে না পারে তাই এবার তার দলের ক্ষমতাসীনদেরই একাংশ উঠেপড়ে লাগে। শপথগ্রহনও ছিল অনিশ্চয়তায়। হাইকোর্টের মাধ্যমে বিজিত হয়ে শফতগ্রহন ও চেয়ার পেলেন। দীর্ঘ বছর পরে যেন বন্ধ্যাত্ব কাটলো। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। এ যেন সারাদিন রোজা রাখার পরে ইফতারির সময়ে সামনে থেকে খাবার কেড়ে নেয়ার অবস্থা।

এরই মধ্যে বহু চড়াই উৎড়াই পাড়ি দিতে হচ্ছে তার। তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা হলেও দলীয় প্রতিপক্ষের মামলা ফেস করতে হচ্ছে। এ যেন দলীয় শ্রমদাস তিনি ও তার পরিবার।

২০২১ এ আসলো আবার ইউপি নির্বাচন। তারই আপন ছোটভাই আবারও দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশায়। কিন্তু ভাগ্য সহায় নেই। এবার ইউপিতেও বিদ্রোহী হতে হলো জনাব রফিকুল ইসলাম রিপন মিয়াকে। তাতে কি! জনগণ কে তাদের পক্ষে। দলীয় সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে জনগণ আবারও সেই আনারস মার্কাকে বিজয় করলো। যেমনটা উপজেলায়ও ছিলো আনারস!

একজন রাজনীতিবীদ হয়ে যদি এতবার দলীয়ভাবে বঞ্চিত হন তাহলে হতাশা ছাড়া আর কিইবা করার থাকে। এতকিছুর পরও তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারন করে আওয়ামীলীগে আছেন এবং দেশের মানুষের কল্যানের জন্য আজীবন কাজ করে যাবেন।

মোঃ মনিরুল ইসলাম: স্টাফ রিপোর্টার।

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news