সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য অঞ্চল খানসামাশ চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। আর কদিন পরই মর্ত্যে আসছেন- দেবী দুর্গা। উপজেলা জুড়েই যেন সেটাই জানান দিচ্ছে। ১ অক্টোবর ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা।
তাই এবার খানসামা উপজেলায় ১৪৮ টি মন্ডপ থাকলেও একটি মন্ডপে এলাকাবাসী। উল্লেখ্য যে টংগুয়া কুমারপাড়ায় মেয়ে উপো বালা হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার না পাওয়া তার এভাবেই প্রতিবাদ জানিয়েছে। সে কারণেই খানসামা উপজেলায় ১৪৭ টি মন্ডপে জন্য প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন খানসামার প্রতিমা শিল্পীরা।
তবে দ্রব্য মূল্যের সাথে তাল মিলিয়ে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে রং, তুলি ও সাজসজ্জার দাম বেশি হওয়ায় এবং প্রতিমা তৈরির মজুরি কম পাওয়ায় কিছুটা অসন্তোষ রয়েছে শিল্পীদের। আজ সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, যেন দম ফেলার সময় নেই কারিগরদের। সুনিপুণ হাতে মাটি ও রংতুলির ছোঁয়ায় দেবীকে রাঙিয়ে তুলতে ব্যস্ত শিল্পীরা।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেউ কাঁদা তৈরি করছেন, কেউ কাঁদা থেকে হাত-পা বানাচ্ছেন, আবার কেউ ব্যস্ত রং করায়। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরাও বাবার কাজে সহযোগিতা করছে। বছরের এ সময়টায় কাজের চাপ বেশি থাকায় বসে নেই গৃহিণীরাও। মাটি দিয়ে সুনিপুণ হাতে তৈরি করছেন কারুকাজময় অলঙ্কার।
আর সেই অলঙ্কার প্রতিমার শরীরে জড়িয়ে দিয়ে সাজিয়ে তুলছেন অনন্যা রূপে। এমনই এক প্রতিমা শিল্পী কর্ণধার অলোক চন্দ্র পাল বলেন, আমি দীর্ঘ ১২ বছরের বেশি সময় যাবত প্রতিমা তৈরি করে আসছি। দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও সকল ধরনের প্রতিমা আমরা তৈরি করি। এবার ১২ টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছি।
তবে যে হারে পরিশ্রম সেই হারে পরিশ্রমের তুলনায় দাম অনেক কম। খানসামা উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ধীমান দাস বলেন, পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে দুর্গোৎসব পালনে মন্ডপে মন্ডপে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে এবারের দুর্গাপূজায় উৎসাহ উদ্দীপনা হবে না।
কারণ উপো বালা হত্যাকান্ডে বিচার আমরা এখনো পাইনি। ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি বেদনা কাজ করছে। সেই কারণেই হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছেন বলে তিনি জানান। খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ চিত্র রঞ্জন রায় বলেন, আমরা আশা করছি প্রতি বারের ন্যায় এবারও আনন্দ পূর্ণ দুর্গোৎসব হবে সবাই যাতে দুর্গাপূজা করে সেই জন্য সবাই উৎসাহ করছি।
দুর্গোৎসব নির্বিঘ্ন করতে খানসামা উপজেলা পর্যায়ে পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করবে এবং সকল পূজা মন্ডপে আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। শারদীয় দুর্গোৎসব সফল করতে মতবিনিময় সভাসহ সকল প্রস্তুতি দ্রুত নেওয়া হবে।
পত্রিকাএকাত্তর /আজিজার রহমান