পঞ্চগড়-২ আসনে ’৯১ সালে সিপিবি থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন প্রয়াত মোজাহার হোসেন। এরপর বিএনপির টিকিটেই ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন। কিন্তু ২০০৮ সালের পর থেকে আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হয়।
নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন। এবারো তিনি দলীয় প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানা গেছে। সে ক্ষেত্রে তার সামনে দলের বাইরের শক্তির বদলে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন দলের ও জোটের দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী।
এদের প্রথমজন হলেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ব্রিগেডিয়ার (অব.) শাহজাহান মন্ডল। দ্বিতীয়জন মহাজোটের শরিক দল জাসদের (আম্বিয়া-নাজমুল) কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক এমরান আল আমিন। এদিকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীর সামনে দলে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এতে কিছুটা হলেও সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন তিনি।
পঞ্চগড় জেলার বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত পঞ্চগড়-২ আসন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে এমনিতেই মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা কম। আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান সংসদ সদস্যের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত থাকলেও এবার এই আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় প্রজন্ম লীগের এক নেতা।
ইতোমধ্যে মহাজোট সরকারের শরিক দল জাসদ থেকেও একজন প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। আর পরপর তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করার পর ২০-দলীয় জোটের প্রার্থী বাছাইয়ে আপাতত কোনো ঝামেলা নেই। তাই একক প্রার্থী নিয়ে বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে বিএনপি।
’৯১-এর নির্বাচনে সিপিবি থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত মোজাহার হোসেন। এরপর তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। যোগ দেওয়ার পর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে তাকে পরাজিত করে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন। ২০১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হন। এবারো তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন এটা প্রায় নিশ্চিত।
তবে এই আসনে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের মনোনয়নপ্রত্যাশী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ব্রিগেডিয়ার (অব.) শাহজাহান মন্ডল। এরই মধ্যে তিনি বোদা-দেবীগঞ্জসহ পঞ্চগড় জেলা শহরে বিশাল শোডাউন করে পঞ্চগড়-২ আসনে তার সরব উপস্থিতি জানান দিয়েছেন।
এই আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য তিনি কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপও শুরু করেছেন। অপরদিকে এই আসন থেকে নির্বাচনের জন্য মহাজোটের শরিক দল জাসদের (আম্বিয়া-নাজমুল) কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক এমরান আল আমিন নির্বাচন করতে পারেন। ২০১৪-এর নির্বাচনে তিনি মশাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন।
এদিকে বিএনপির জেলা সভাপতি সাবেক এমপি মোজাহার হোসেন মারা যাওয়ায় এ আসনে দলের একক প্রার্থী হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী যুবদলের সহসভাপতি ফরহাদ হোসেন আজাদের প্রার্থিতা প্রায় চূড়ান্ত। আগেভাগেই তিনি নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন।
তিনি ঢাকায় অবস্থান করলেও মাঝেমধ্যেই এই দুই উপজেলায় এসে গণসংযোগ করছেন। এখন পর্যন্ত ওই আসনে বিএনপির মনোনায়ন প্রত্যাশা করে আর কাউকে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা যায়নি। দলে ও জোটে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিনিই মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া শিশির আসাদ স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষনা দিয়েছে। এলাকায় সামাজিক কর্মকান্ড ও সমাজ সেবক হিসেবে ব্যপক জনপ্রিয় । আওয়ামী কোন্দল ও বিএনপি মাঠে না থাকার সুযোগকে কাজে লাগাতে চাচ্ছেন নবীন এই রাজনীতিবিদ।
পত্রিকা একাত্তর / রিয়াদ হোসাইন
আপনার মতামত লিখুন :