patrika71
ঢাকাশনিবার , ১৭ জুন ২০২৩
  1. অনুষ্ঠান
  2. অনুসন্ধানী
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আবহাওয়া
  7. ইসলাম
  8. কবিতা
  9. কৃষি
  10. ক্যাম্পাস
  11. খেলাধুলা
  12. জবস
  13. জাতীয়
  14. ট্যুরিজম
  15. প্রজন্ম
আজকের সর্বশেষ সবখবর

২ লাখ টাকার বিনিময়ে দলিল জালিয়াতিতে ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি, চট্রগ্রাম
জুন ১৭, ২০২৩ ১২:২৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নগরীর হালিশহর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল ওয়াহেদ ২০১৭ সালে আর্থিক প্রয়োজনে হালিশহর এলাকায় একখন্ড জমি বিক্রির জন্য হালিশহর বি ব্লক এলাকার মিজানুর রহমান মিজান নামে এক জমির দালালকে জমি বিক্রি করে দেয়ার প্রস্তাব দেন। দালাল মিজান জমি বিক্রি করে দেয়ার নাম করে হালিশহর থানাধীন ঈদগাহ এলাকার মৃত রফিকুল হান্নানের ছেলে শাহরিয়ার ও মেহেদী হাসান সুমনকে ক্রেতা সাজিয়ে আব্দুল ওয়াহেদের দলিলের ফটোকপি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সংগ্রহ করে দেয়।

পরবর্তীতে অজুহাত দেখিয়ে ফটোকপি নেয়া সমস্ত কাগজপত্র ফেরত দেন। তবে কিছুদিন কাগজপত্র নিজেদের কাছে রাখার সুবাধে সমস্ত কাগজের কপি করে ফেলেন পুরো সিন্ডিকেট চক্র। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো জালিয়াতির
মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিঃ এর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ঋণ নেয়া এবং ঋণের বোঝা জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল ওয়াহেদ (৬৭) উপর চাপিয়ে দেয়া। এই কাজে প্রধান সহযোগী হিসেবে সহযোগীতা করেন ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিঃ এর এসএমই শাখার সিনিয়র নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহজাহান। পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাংক কর্মকর্তা শাহজাহান জাল দলিলকে নিজ ক্ষমতা বলে ব্যাংকে উপস্থাপন করে ২লক্ষ টাকার বিনিময়ে ২৫লক্ষ টাকা ঋণ পাশ করে প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেন। যা জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল ওয়াহেদ কোনো ভাবেই জানতে
পারেনি।

সর্বশেষ ২০১৯ সালের মে মাসের ৫ তারিখে আব্দুল ওয়াহেদের কাছে ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিঃ থেকে ঋনের কিস্তির জন্য একটি নোটিশ আসে। নোটিশে আব্দুল ওয়াহেদকে ২৫ লক্ষ টাকা ঋনের ১ম জামিনদার হিসেবে দেখানো হয়। এই নোটিশ পেয়ে আব্দুল ওয়াহেদ আতঙ্কে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। পরে পুরো বিষয়টি আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে গণমাধ্যমকর্মী মোঃ জসীম উদ্দিন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য নোটিশ নিয়ে ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিঃ এ যোগাযোগ করেন। এবং ব্যাংক কর্মকর্তা এসএমই শাখার সিনিয়র নির্বাহী অফিসার ও প্রতারক চক্রের সদস্য শাহজাহান জানায়, “তার বাবা (আব্দুল ওয়াহেদ) প্রতারক দুই ভাইয়ের ২৫লক্ষ টাকার ঋনের জামিনদার হিসেবে দুইটি দলিল অফিসে জামানত হিসেবে রেখেছে বিধায় ব্যাংক জামিনদার হিসেবে নোটিশ পাঠিয়েছে।

এমন তথ্য পেয়ে আদালতের মাধ্যমে আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে মোঃ জসিম উদ্দিন একটি মামলা দায়ের করেন যার সিআর মামলা নং:৮১৮/২০২১ এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কাছে তদন্ত দেয়ার আর্জি করেন।

পিবিআই তদন্তে নেমে জাল দলিল সৃজন, প্রকৃত মালিকের ছবির পরিবর্তে প্রতারক চক্রের সদস্য বাবুলের ছবি বসানোসহ সাক্ষর জালিয়াতির প্রমান পায়। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে সমস্ত দলিল জব্দ করে ফোরেনসিক রিপোর্টের মাধ্যমে প্রতারকদের জালিয়াতির বিষয়টি প্রমান হয়। যা দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ হিসেবে প্রকাশিত হয়।

আদালত পুরো বিষয়টি আমলে নিয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে ৬/৩/২০২২সালে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর থেকে ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান সহ পুরো সিন্ডিকেট চক্র পালিয়ে বেড়ান। গত ১২জুন রাতে গোপন সংবাদের মাধ্যমে বন্দর থানার একটি চৌকস আভিযানিক দল নগরীর চকবাজার এলাকার গনি বেকারির সামনে থেকে ব্যাংক কর্মকর্তা শাহজাহানকে গ্রেফতার করেন।

গ্রেফতারের বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সেন গণমাধ্যমকে বলেন “আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা ভুক্ত আসামী মোঃ শাহজাহানকে বন্দর থানার এএসআই মহারাজ হোসেন (নিঃ) এবং তার সঙ্গীয় ফোর্স গ্রেফতার করেন। এবং গত (১৩জুন) বিজ্ঞ আদালতে তাকে প্রেরণ করা হয়।

তবে এই বিষয়ে ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিঃ এর হেড অব লিগ্যাল (কর্মকর্তা) ফরহাদ আবেদীন বলেন “জাল দলিলের মাধ্যমে কোনো ঋণ আমাদের প্রতিষ্ঠান প্রদান করেনা। তবে এমন যদি হয়ে থাকে প্রতিষ্ঠান ও দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

পত্রিকা একাত্তর/ ইসমাইল ইমন