কদমতলীর পশ্চিম মোহাম্মদবাগ এলাকার ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন করে মূল ঘাতককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা-ওয়ারী বিভাগ।
সোমবার (৫ জুন) বরিশালের হিজলা থানার গোবিন্দপুর খন্না এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত মূল ঘাতক আল-আমিন শেখ কে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, গত শনিবার কদমতলীর পশ্চিম মোহাম্মদবাগ সোনা মারিয়া জামে মসজিদের দক্ষিণ পাশে একটি অজ্ঞাতনামা বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে লাশটি সনাক্ত হলে নিহতের বাবা কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ছায়া তদন্ত শুরু করে ডেমরা জোনাল টিম। মামলাটি তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যার সাথে জড়িত মূল ঘাতককে শনাক্ত করা হয়। এরপর অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আজহারুল ইসলাম মুকুল, পিপিএম এর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় ডেমরা জোনাল টিম।
আটককৃত আসামি কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে এই কর্মকর্তা আরো বলেন, নিহত ইমন কাজী ও ঘাতক আল-আমিন শেখ পেশায় অটোরিকশা চালক। সেই সুবাদে আল-আমিনের বাড়িতে ইমনের যাতায়াত ছিলো। নিয়মিত যাতায়াতের একপর্যায়ে আল-আমিনের স্ত্রীর সাথে ইমন পরকিয়া শুরু করে। আল-আমিন বিষয়টি জানতে পারে এবং মনে মনে প্রতিশোধ নেয়ার ছক আঁটে।
এরপর আল-আমিন ইমনের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে আর সুযোগ খুঁজতে থাকে কিভাবে তাকে ঘায়েল করা যায়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইমনকে ৫ হাজার টাকা ধার দেয় আল-আমিন। কয়েকদিন পর ধারের টাকার জন্য ইমনকে চাপ দিতে থাকে। গত ৩০ মে ঘাতক আল-আমিন ইমনকে কৌশলে তার বাসায় নিয়ে আসে। সেখানে ইমনকে দেয়া কোকের বোতলে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ায়। পরে তাদের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় ও ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে ইমনকে জোরে ধাক্কা দিলে দেয়ালে আঘাত পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়।
পরবর্তীতে ইমনের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে আল-আমিন। হত্যার পর ইমনের অটোরিকশাটি গেন্ডারিয়ার গঙ্গা শাহ মাজার এলাকায় ফেলে দেয়। পরদিন সন্ধ্যায় ইমনের মৃতদেহ বস্তায় ভরে কদমতলীর হেনোলাক্স গলির একটি ডোবায় ফেলে রেখে পালিয়ে বরিশাল শ্বশুর বাড়ি চলে যায় আল-আমিন। গতকাল সেখান থেকে তাকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে আসে গোয়েন্দা পুলিশ।
পত্রিকা একাত্তর/ রবিউল ইসলাম