জীবন বাঁচাতে বাড়ি ফিরতে পারছেন না রিজাউলের পরিবার


জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল প্রকাশের সময় : ১৮/০৫/২০২৩, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ /
জীবন বাঁচাতে বাড়ি ফিরতে পারছেন না রিজাউলের পরিবার

নড়াইলে জীবন বাঁচাতে ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না রিজাউল করিম মোল্যার পরিবার। ১৮মে বৃহস্পতিবার নড়াইল প্রেসক্লাবে এসে অভিযোগ করেন লোহাগড়া উপজেলার বাড়িভাঙ্গা গ্রামের রিজাউল করিম মোল্যা।

রিজাউল করিম মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রীকে প্রতিবেশি পুরুষেরা মেরে হাতপাঁ ভেঙ্গে দিয়েছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে লোহাগড়া থানায় আমার মেয়ে মামলা করেছে। আর এ কারনে তারা আমি ও আমার পরিবারকে বাড়ি যেতে দিচ্ছেনা। মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন কি করবো ? আমরা আপনাদের মাধ্যমে এর বিচার চাই। বর্তমানে আমার স্ত্রী ও মেয়ে রিয়া ও তার মেয়ে ফারিয়া নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

তিনি আরো জানান, একই গ্রামের ঝিকু শেখ, রকি শেখ, মোঃ তোয়েবুর শেখ, মোঃ জসিম শেখ, মোঃ আকতার শেখ, এরশাদ শেখ, গত ১৫ই মে ২০২৩ ইং তারিখ সকাল ১০ দিকে পুর্ব শত্রুতার জেরে দেশিয় অস্ত্র রামদা, ছ্যানদা, লোহার শাবল, লোহার রড,
লোহার হাতুড়ি নিয়ে আমার বাড়িতে এসে আমাদের নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

আমার স্ত্রী রুপালী বেগম (৪৫) ঘর থেকে বের হয়ে গালিগালাজ করতে নিশেধ করলে মোঃ ঝিকু শেখ আমার স্ত্রীকে ছ্যানদা দিয়ে মাথায় কোপ দেয়। আমার স্ত্রী মাথা বাচাতে হাত দিয়ে ঠেকালে বৃদ্ধাঙ্গুল ও শাহাদত আঙ্গুলে লেগে গুরুতর যখম হয়। মোঃ রকি শেখ রামদা দিয়ে আমার স্ত্রীকে কোপ দিলে মাথার পিছনের যখম হয়। অন্যান্যরা আমার স্ত্রীকে উপর্যুপরি বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে বাম হাত ও বাম পাঁ ভেঙ্গে যায়।

আমার স্ত্রীকে এভাবে মারতে দেখে আমার মেয়েসহ অন্যরা ঠেকাতে গেলে তাদের ও মারপিট করে। তারা এসময় আমার ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার লুট করে নিয়ে ঘরের আসবাবপত্র টিভি ভাংচুর করে চলে যায়।

মামলার বাদী লাকি আক্তার রিয়া (২০) বলেন, আমার বাবা চাকুরীর কারনে বাড়িতে থাকেনা। ওরা প্রায়ই আমাদের নির্যাতন করে। আমার মাকে কিভাবে নির্যাতন করেছে মেরে হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছে। আমি সহ্য করতে না পেরে ঠ্যাকাতে গেলে আমাকে ও মেরেছে। আমার ৫ বছরের শিশু মেয়ে ফারিয়াকে ও ছাড় দেয়নি। আমি বচার চেয়ে মামলা করেছি। সেজন্য আমাদের বাড়িতে যেতে দিচ্ছেনা। আমি আপনাদেরর কাছে এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোঃ ঝিকু শেখ রুপালী বেগমকে কোপানোর কথা স্বীকার করে বলেন, তাদের বাড়ি যেতে বাধা দিচ্ছিনা। তাদের বাড়ি তারা যাবে। মহিলাকে কেন মারলেন এমন প্রশ্নে বলেন, ওই মহিলা খারাপ। লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, ১৫ তারিখে বাড়িভাঙ্গা গ্রামে মারামারির ঘটনায় লাকি আক্তার রিয়া মামলা দিয়েছে। আমরা নিয়মিত মামলা হিসাবে গ্রহন করেছি। আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে। রুপালী বেগম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সুস্থ্য হলে বাড়ি যেতে পারবেন। কেউ বাধা দিতে পারবে না বলে আশ্বাস দেন।

পত্রিকা একাত্তর/ হাফিজুল নিলু