ঘূর্ণিঝড় মোখার আতংক ছিল পুরো বাগেরহাটের উপকুলজুড়ে। তবে রোববার (১৪ মে ) সারাদিন বাগেরহাটের আকাশ জুড়ে ছিলো রৌদ্র মেঘের খুনসুটি, তবে অন্য দিনের থেকে আবহাওয়া একটু পরিবর্তন থাকলেও ছিলো ভ্যাপসা গরম। দুপুর গড়িয়ে শেষ বিকেল পর্যন্ত ছিল রোদ আর মেঘের লুকোচুরি। দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ঘুর্নিঝড়ের প্রভাব পড়ায় জেলা জুড়ে ঝুকিঁপুর্ণ বেড়িবাঁধ সংলগ্ল এলাকার বাসিন্ধাদের মাঝে বন্যা আতংক কাটতে শুরু করে।তাই বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব না পড়ায় হতাশা কেটেছে উপকুলবাসির।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ৩৩৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। যার ২১কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। এসব বাঁধ পর্যবেক্ষণে রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জিও ব্যাগ ও সিন্থেটিক ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে ।
মোরেলগঞ্জ উপজেলার ঘষিয়াখালী, বহরবুয়িা ও বারুরীখালী এলাকায় বাঁধ না থাকায় ঝুঁকিতে রয়েছে হাজার হাজার মানুষ। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদীতে দুই থেকে ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেলেই বিভিন্ন জায়গায় গ্রামরক্ষাবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছেন তারা। তবে নদী স্বাভাবিক রয়েছে। আবহাওয়াও ভালো। আকাশে কোনো মেঘ নেই।’
ঘষিয়াখালী গ্রামের দিনমজুর রহিম বলেন, চারদিকে লবণ পানির কারণে খাবার পানি সংগ্রহ করতে বেগ পেতে হয়। তাই ঝড়ের খবর পেয়ে জাহাজ থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করে ড্রামে ভরে রাখছি। বন্যা না হলে আমাদের এলাকা বেচেঁ যাব’।
এদিকে সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলবাসী আতঙ্কিত হলেও এর কোনো প্রভাব পড়েনি, নেই বৃষ্টি কিংবা ঝোড়ো বাতাস, উল্টো প্রখর রোদে অতিষ্ঠ জনজীবন। রোববার সকাল থেকে সুন্দরবনসংলগ্ন শরনখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলায় রোদ আর মেঘের লুকোচুরি চলছে।
সুন্দরবন পুর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সকাল থেকে সুন্দরবনের আবহাওয়া স্বাভাবিক রয়েছে।এখনও কোন সমস্যা নেই। তবে বনের বিভিন্ন স্থানে অফিস ও ফাড়ির বনরক্ষীদের সর্তক অবস্থা থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে মোখা’র সম্ভাব্য বিপদ সামনে রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে মোংলা সমুদ্র বন্দর কর্তৃপক্ষ।বন্দরে নিজস্ব সতর্ক সংকেত এলার্ট-২ জারি করা হয়েছে।বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।তবে বন্দররের স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আজিজুর রহমানের বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারির ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জেলা সদর ও প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলা ৮৪টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঝড়ের প্রভাব শেষ না হওয়া পর্যন্ত জেলা জুড়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে।
পত্রিকা একাত্তর/ শামীম হাসান
আপনার মতামত লিখুন :