গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, হিমসাগর বোম্বাইসহ স্থানীয় নানা জাতের আমে জমে উঠেছে যশোর/সাতক্ষীরার বাগুড়ী বেলতলা বৃহত্তম আমের বাজার। আম পঞ্জিকা অনুযায়ী ৫ই মে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাত শুরু হওয়ার পর স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি সারা দেশে চলে যাচ্ছে মানে ও গুণে সেরা সুস্বাদু আম।
সোমবার (১৩ মে) যশোর/সাতক্ষীরার বৃহত্তম আমের বাজার বেলতলা ঘুরে দেখা গেছে, গোবিন্দভোগ আম ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা মণ, গোলাপভোগ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা মণ, বোম্বাই আম ১১০০ থেকে ১৪০০ টাকা মন ও হিমসাগর ৮০০ থেকে ২০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম নিয়ে হতাশ উঠে গেছে চাষীদের।
তাদের অভিযোগ, দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির ফলে আম উৎপানের জন্য ব্যবহারিত সার ও কীটনাশক সামগ্রী মূল্যবৃদ্ধি, আমের পরিচর্যা ও পরিবহন খরচ গত মৌসুমের তুলনায় ৩০ ভাগ বেশী হওয়ায় এবার সব মিলিয়ে খরচ অনেক বেশী, সে তুলনায় আমের দাম গতবারের তুলনায় প্রায় অর্ধেকের বেশি নেমে এসেছে। এতে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। এজন্য তারা জেলায় ঘোষিত আম পঞ্জিকাকেও কিছুটা দায়ী করেছেন।
তারা বলেন, আবহাওয়া ও ভৌগোলিক কারণে সাতক্ষীরার ও যশোরের আম অন্যান্য জেলার তুলনায় কমপক্ষে দুই সপ্তাহ আগে পাকে। এজন্য সাতক্ষীরা ও যশোরের আম বিদেশে রপ্তানি হওয়াসহ সারা দেশে বিপুল চাহিদা সৃষ্টি করে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এবছর আম বাজারজাতকরণের তারিখ দুই সপ্তাহ পেছানো হয়। এতেই মূল ক্ষতিটা হয়েছে। কারণ রাজশাহীর নওগাঁর চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাজারে চলে এসেছে। এজন্য এ জেলার আম নিয়ে বাইরে এখন আর মাতামাতি নেই।
আড়ৎদাররা জানান, প্রথম দিন থেকেই বাজারে আমের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। আড়ৎ গুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সরবরাহ বেশি হওয়ায় আমের দরপতন হয়েছে।
আম চাষি আব্দুল মান্নান বলেন, চলতি মৌসুমে প্রতিটি বাগানেই আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বাজারে দাম কম। এমন দাম চলতে থাকলে লোকসান গুণতে হবে।
কায়বা ইউনিয়নের দীঘা গ্রামের টুটুল নামের এক আম চাষি বলেন, আমি হিমসাগর আম নিয়ে বাজারে এসেছি। সাইজ অনুযায়ী ৮০০ দরে বিক্রি হয়েছে।
শংকরপুর ইউনিয়নের বকুলিয়া গ্রামের ইয়াসিন নামের এক আমচাষি বলেন, হিমসাগর ও গোবিন্দভোগ আম নিয়ে এসেছিলাম। বাগুড়ী বেলতলা অনেক বড় আমের বাজার কিন্তু তীব্র যানজটের কারণে সকাল সকাল বাজার ধরতে পারিনি। এজন্য আমের দাম পাইনি।
শার্শা উপজেলা কৃষি অফিসার প্রতাপ মন্ডল জানায়, চলতি মৌসুমে ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এ বছর আমের বাম্পার ফলন হওয়ায় দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। আমের মূল্য কম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূল্যের বিষয়টা তো আমাদের এখতিয়ারে নাই।
পত্রিকা একাত্তর/ আবু বকর
আপনার মতামত লিখুন :