ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ যতই এগিয়ে আসছে ততই আতংক বাড়ছে সুন্দরবন উপকূলসহ মোংলার জনপদে। এই অবস্থায় মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
শুক্রবার (১২ মে) দুপুর থেকে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. হারুনুর রশিদ এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মোংলা থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখা ৯৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে।এছাড়া চট্রগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১০০৫, কক্সবাজার থেকে ৯৩৫ এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে মোখা। বঙ্গোপসাগরে যেসব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার রয়েছে সেসব নৌ যানের মাঝিদের নিরাপদ আশ্রয় চলে আসার জন্য আবাহাওয়ার সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ৪ নম্বর হুশিয়ারি সতর্ক সংকেত জারির পর মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব এলার্ট নম্বর -‘২’ জারি করেছে জানিয়ে হারবার মাষ্টার কমান্ডার শাহিন মজিদ বলেন, এখনই তারা জরুরি বৈঠক করবেন। তবে বন্দরে অবস্থানরত বাণিজ্যিক জাহাজে পণ্য ওঠা-নামার কাজ এখনই স্বাভাবিক রয়েছে।
সতর্ক সংকেত আরও বাড়ানো ঘূর্ণিঝড় মোখা’র প্রভাবে সুন্দরবনে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দেড় থেকে দুই ফুট পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন করমজল বন্যপ্রাণী ও পজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা আজাদ কবির। এছাড়া করমজলে বন্যপ্রানীদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তত রয়েছে কোস্টগার্ড।
কোষ্টগার্ড পশ্চিম জোন (মোংলা সদর দপ্তর) অপারেশন কর্মকর্তা লেফট্যানান্ট কমান্ডার তারেক আহমেদ বলেন, ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় থেকে উপকূলবাসীদের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সতর্কাবার্তার প্রচার চলছে। এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলসমূহ, সুন্দরবন ও তৎসংলগ্ন ঝুকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে সাইক্লোন শেল্টারে নেওয়ার পাশাপাশি কোস্ট গার্ড স্টেশনে আশ্রয় প্রদান করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মোখা চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় কোস্ট গার্ডের সকল জাহাজ, বোট, স্টেশন, আউটপোষ্ট এবং ডিজাস্টার রিসপন্স এন্ড রেস্কিও টিম প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহন করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দীপংকর দাশ বলেন, এখানে ১০৩টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এরমধ্যে ছয়টি ইউনিয়নে ৮৪ টি এবং পৌরসভায় ১৯টি। এছাড়া সিপিপির ৬৬টি ইউনিটের প্রায় ১ হাজার ৪০০ স্বেচ্ছাসেবকসহ, দুর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত শুকনো খাবারও মজুদ করে রাখা হয়েছে।
পত্রিকা একাত্তর/ আনোয়ার হোসেন
আপনার মতামত লিখুন :