আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর ৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনাদর্শ ও তার সৃষ্টিকর্ম শোষণ-বঞ্চনামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে চিরদিন বাঙালিকে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি বাঙালির চেতনা ও মননের প্রধান প্রতিনিধি। বাংলা সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই তিনি নির্দেশকের ভূমিকা রেখেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র ও গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করা হবে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ি, কাচারিবাড়িসহ তার সকল স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
সোমবার (৮ মে) সকালে কবিগুরুর ১৬২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কবির স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ি আঙিনায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিশ্বকবির ১৬২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী রবীন্দ্রমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় হানিফ এমপি বলেন, এখানে গবেষণা করার মতন যথেষ্ট স্কোপ আছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে।প্রশাসনে এই ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক এবং যথেষ্ট সহায়তা করে থাকেন। আমরা মনে করি বর্তমান সরকার যে কোন জ্ঞানধর্মীক বিষয়ে যেমন সাহিত্যিক ও অন্যান্য সকল বিষয়ে সহায়তা করতে প্রস্তুত।
এই সময় হানিফ এমপি আরো বলেন, গগন হরকরা বা গগন চন্দ্র দাস বাংলা লোকসঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত রচয়িতা ও বিশিষ্ট বাউল গীতিকার ছিলেন। গগন হরকরার বাস্তব ভিটাকে কেন্দ্র পর্যটন কেন্দ্র ও গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করা হবে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কাজী নুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি’র সভাপতি হাজী রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব প্রমুখ। এছাড়াও প্রশাসন, রবীন্দ্র গবেষক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন বিশ্বকবির ১৬২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এবারের আয়োজনে কুঠিবাড়ির মূল মঞ্চে প্রতিদিনই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলার সংগঠনসহ জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা কুঠিবাড়ির মূল মঞ্চে রবীন্দ্রসংগীত, কবিতা আবৃত্তি, দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করবেন।
এর আগে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের কন্ঠে সুচনা সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।
এদিকে তিনদিনব্যাপী রবীন্দ্রমেলাকে ঘিরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আঙিনা হাজারো দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখর হয়ে ওঠেছে।
এদিকে কুঠিবাড়ি চত্বরে বসেছে বিশাল গ্রামীণ মেলা। নানারকম পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ঐতিহাসিক এই উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জমিদারি দেখাশোনার জন্য ১৮৯১ সালে প্রথম এই কুঠিবাড়িতে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নিরিবিলি পরিবেশ, জমিদারি আর ব্যবসার কারণে বার বার কুষ্টিয়ার এই কুঠিবাড়িতে ফিরে আসতেন তিনি। নিভৃত বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কবির জীবনের বেশ কিছু মূল্যবান সময় কেটেছে। এখানে বসে রচিত গীতাঞ্জলি কাব্যই রবীন্দ্রনাথকে এনে দিয়েছে নোবেল পুরস্কার আর বিশ্বকবির মর্যাদা। এছাড়াও তিনি এখানে বসেই বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতসহ অসংখ্য কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। কুঠিবাড়িতে সংরক্ষণ আছে সেসব দিনের নানা স্মৃতি।
পত্রিকা একাত্তর/ আনোয়ার হোসেন
আপনার মতামত লিখুন :