শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে চোরাই কাঠের ছবি তোলতে দুই সাংবাদিক লাঞ্ছিত নেপথ্যে বন কর্মকর্তা । ঘটনাটি ঘটে ১মে সোমবার বিকালে উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গুরুচরনদুধনই এলাকায় । ওই দুই সাংবাদিক হলেন,গ্লোবাল টেলিভিশনের শেরপুর প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবু হেলাল ও মানবকন্ঠের ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রতিনিধি জিয়াউল হক।
জানা গেছে, গারো পাহাড়ের অর্ধশতাধিক চোরাই কাঠ ব্যবসায়ী কাঠচোরদের সাথে আতাত করে দীর্ঘদিন থেকে অবাধে চোরাই কাঠের ব্যবসা চালিয়ে আসছে। জানা গেছে, চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীরা কাঠ চোরদের অগ্রীম টাকা দিয়ে কাঠ চুরিতে উৎসাহ যোগাচ্ছে। আর কাঠচোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা গারো পাহাড়ের শাল গজারীসহ সামাজিক বনের উডলট বাগানের গাছ কেটে নির্বিচারে সাবাড় করে দিচ্ছে। কাঠচোরদের কাছ থেকে নামমাত্র মুল্যে এসব কাঠ ক্রয়করে আসছে। ব্যবসায়ীরা এসব কাঠ শেরপুর জেলাসদরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে আসছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে এসব কাঠক্রয় বিক্রয়ের জন্য গারো পাহাড়ের কুল ঘেষে গান্দিগাঁও, বাকাকুড়া, গুরুচরনদুধনই, পনবর এলাকাসহ বিভিন্নস্থানে অর্ধশতাধিক পাল্লাহ ঝুলিয়ে ব্যবসায়ীরা চোরাই কাঠ ক্রয় বিক্রয় করে আসছে। এছাড়া গত শনিবর কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার গারো পাহাড়ের সামাজিক বনের গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। কালবৈশাখীর তান্ডবে শতশত গাছপালা উপড়ে পড়ে।
নিয়ম অনুযায়ী উপড়ে পড়া গাছ মার্কিং করে নিলামে বিক্রি করে পরে এসব গাছ নিলামে বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে একভাগ। অপরভাগ অংশিদারের মাঝে বিতরন করার কথা। কিন্তু এখানে তা না করে রাংটিয়া রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দের যোগসাজশে অংশিদারদের মাধ্যমে চোরাইভাবে সরাসরি কাঠ বিক্রি করা হচ্ছে। সোমবার বিকাল চারটায় গুরুচরনদুধনই গ্রামের আবুল কাশেমর বাড়িতে রাখা প্রায় দুইশ সিএফটি চোরাই কাঠের ছবি তোলতে যান ওই দুইজন সাংবাদিক। এসময় আবুল কাশেমসহ তার লোকজন ওই দুই সাংবাদিককে প্রথমে ছবি তোলতে বাঁধা দেন। এসময় ওই দুই সাংবাদিক রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দকে বিষয়টি অবহিত করেন। মকলরুল ইসলাম আকন্দ ঘটনার প্রায় ১ঘন্টা পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
অভিযোগ রয়েছে মকরুল ইসলাম আকন্দ কাঠ চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তার লোকজনকে দিয়ে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদের হস্তক্ষেপে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে কাঠচোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এ বিষয়ে সাংবাদিক জিয়াউল হক ৪ জনের নামে ও আরো ৭০/৮০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে ঝিনাইগাতী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অপরদিকে রাংটিয়া ফরেষ্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলামের কুপরামর্শে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের উদ্দেশ্যে কাঠচোর সিন্ডিকেটের সদস্যদের দিয়ে চার সাংবাদিকের নামে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করান। এ ছাড়া মকরুল ইসলাম আকন্দ সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা বন মামলা দায়ের করে হয়রানীর হুমকি প্রদর্শন করে আসছে।
ফলে ঝিনাইগাতীতে কর্মরত সাংবাদিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এবিষয়ে শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক আবু ইউসুফ এর সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মকরুল ইসলাম আকন্দের সাথে কথা বলতে বলেন।
পত্রিকা একত্তর/ আবু হেলাল
আপনার মতামত লিখুন :