নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা প্রচেষ্টায় বিপন্ন প্রায় ২০টি খাল পুনঃখননে কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় শস্য উৎপাদন বাড়াতে এমন উদ্যোগ নিয়েছেন।
জানা গেছে এসব খাল খননের ফলে বর্তমানে পর্যাপ্ত পানি থাকায় চলতি শুষ্ক মৌসুমে প্রত্যন্ত বিলের বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলে নিরবচ্ছিন্ন সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে। এতে ফসল উৎপাদন কয়েকগুন বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিদের মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার। এলাকার আর্ত-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে নেয়া খাল খনন প্রকল্পের সার্থকতা মিলেছে বলছে, খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ক্রিকেটার হলেও কৃষিজীবী পরিবারে বেড়ে ওঠা মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে খুব সহজেই উপলব্ধি করেন কৃষি নির্ভর নড়াইলের সিংহভাগ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে জরুরি কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি। তাইতো উদ্যোগ নেন, নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ফসলের মাঠে শিরা উপশিরার মতো ছড়িয়ে থাকা মৃতপ্রায় বিভিন্ন খালনালা পুনর্জীবিত করার। মাশরাফীর স্বপ্নের সারথী হয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড পক্ষ থেকে মৃতপ্রায় ২০টি খাল চিহ্নিত করে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়।
গেল ২০২১/২২ অর্থ বছরে নেয়া মধুমতি নবগঙ্গা পুনর্বাসন প্রকল্পের অধীন এসব খালের পরিধি ও গভীরতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে প্রকল্পের শতভাগ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হয়েছে। অস্তিত্ব সংকটে নিপতিত খালগুলো খননের ফলে সেখানে পানি প্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে প্রানের সঞ্চার হয়েছে। চলতি শুষ্ক মৌসুমে খালে পর্যাপ্ত পানির সংস্থান পানির জন্য হাহাকারের গতানুগতিক দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। খালের পাড়ে চাষিরা নিজেদের প্রয়োজন মতো সেচ পাম্প বসিয়ে বোরো ধান, পাটসহ বিভিন্ন ফসলে স্বাচ্ছন্দ্যে সেচ দিতে পারায় খাল পাড়ের ফসলের মাঠ শস্য-শ্যামলা হয়ে উঠেছে। এতে কম খরচে উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে চাষিরা ব্যাপক লাভবান হচ্ছে।
অন্যদিকে বর্ষায় বিলে জমে থাকা পানি খাল দিয়ে যথাসময়ে নদীতে অপসারণ হয়ে জলাবদ্ধতা দূর করে বিলের বহু অনাবাদী জমি আবাদ যোগ্য হয়ে উঠেছে। সরেজমিন বিভিন্ন এলাকায় গেলে মাশরাফীর প্রচেষ্টায় কৃষির অভূতপূর্ব এ উন্নয়নে নিজেদের উচ্ছ্বাস-অভিব্যক্তির কথা সময় সংবাদকে জানান চাষিরা।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়াইল পওর (পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল কুমার সেন বলেন, মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার প্রচেষ্টায় লোহাগড়া উপজেলায় মধুমতি নবগঙ্গা পুনর্বাসন প্রকল্পে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ২০টি খালের ৭০ কিমি সংস্কার সম্পন্ন হয়।
খননকৃত এসব খাল বিভিন্ন ফসলে সেচ সুবিধার পাশাপাশি মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি, ফসল পরিবহন ও বিলের জলাবদ্ধতা দূর করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখায় মানুষ প্রকল্পের সুফল পেতে শুরু করেছে। এরমধ্য দিয়ে আর্ত-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে নেয়া খাল খনন প্রকল্পের লক্ষ্য শতভাগ পূরণ হয়েছে।
পত্রিকা একাত্তর/ হাফিজুল নিলু
আপনার মতামত লিখুন :