ঈদে ঘর মুখ মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে যাত্রী সাধারণ কে জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের চরম অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঈদে পরিবহন শ্রমিকরা নায্য পরিবহনের নির্ধারিত ভাড়ার থেকে অতিরিক্ত দুই থেকে তিন গুণ বাড়তি ভাড়া আদায় প্রতিবাদ করলে যাত্রী সাধারণকে হেনাস্তা করার ঘটনা ও ঘটেছে একাধিক বাস ষ্টেশনে। ঈদ পরবর্তী এসব ঘটনার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা এই প্রতিনিধিকে জানান একাধিক ভুক্তভোগী।সিটি ও দূরপাল্লার যানবাহন শ্রমিক, মালিক সমিতির নামে একাধিক সিন্ডিকেটের হাতে বিভিন্ন ঈদ উৎসবে হয়রানি ও লান্চনার শিকার হয় সাধারণ যাত্রীরা।
এ নতুন কিছু নয়,দৃশ্য-অদৃশ্য সিন্ডিকেটের হাতে যাত্রীরা জিম্মি। অসহায় ভুক্তভোগী যাত্রীসাধারন এই বিষয়ে প্রতিবাদ করে প্রতিকার চায়লেই পদেপদে বিপদ ও হেনস্থার শিকার হয় ঐ সব ষ্টেশনের শ্রমিক সংগঠনের পালিত কিশোর গ্যাংয়ের হাতে। এমনকি ন্যায্য ভাড়ার চার্ট চেয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়েও হেনস্থার হাত থেকে রক্ষা হয়নি এক গনমাধ্যম কর্মীর। একজন গনমাধ্যম কর্মী যেখানে সঠিক তথ্য জানতে গিয়ে হয়রানির শিকার সেইখানে সাধারণ যাত্রীরা কতটুকু নিরাপদ। পরিবহন শ্রমিকদের নিত্য নতুন হয়রানি ভোগান্তি ও নানান অনিয়মের ফাঁদে সাধারণ যাত্রীরা।
গত ২১ এপ্রিল শুক্রবার রাতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী যাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে ঘটনার বিষয় অনুসন্ধানে সত্যতাও মিলে।যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা নিজেই সববিস্তারে স্বীকারও করেছে। তবে তাদের দায়ভার নিতে চাই না কেউই। সমিতি বলছে ঘটনায় অভিযুক্ত জড়িতরা তারা নাকি তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।
গত ২০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাত ১:৩০ মিনিটে আলিফ এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের বাড়তি ভাড়া আদায় সংক্রান্ত টিকেট কে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম কদমতলী আলিফ পরিবহন কাউন্টারে এই ঘটনা ঘটে।
সপ্তাহখানেক আগে অগ্রীম টিকিটের মূল্য দেওয়া হয় ৯শত টাকা। সরকারি চার্টে রয়েছে চট্টগ্রাম থেকে ভৈরব দুরুত্ব ২৪৩কি.মি.এ ভাড়া হয় ৫২৮ টাকা। তাদের দেখানো চার্টে ৭৩২টাকা। কিন্তু ভুক্তভোগী দর কষাকষি করে অনেক ভাবে বুঝিয়ে ১০০টাকা কমে ৮০০টাকায় টিকিট ক্রয় করেন। গাড়ি ছাড়ার আগে অন্যান্য যাত্রীরা বলাবলি করছে যে ৪শত টাকার টিকেট ৯শত টাকা নিয়েছে কিন্তু ঠিক টাইমে বাস ছাড়ছে না। সাড়ে ১২টা বাজে, অথচ যাত্রীদের ১১.৩০ টায় টাইম দেওয়া হয়েছে।এখনো গাড়ি ছাড়ছেনা। কদমতলীর মোড় থেকে সিআরবির ভিতরে গিয়ে যাত্রীদের উটতে হচ্ছে আলিফ এন্টারপ্রাইজ বাসে।
তখন ভুক্তভোগী ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তার যাত্রীকে গাড়িতে তুলে দিয়ে কাউন্টারে বিষয়টি জানতে চাইলে কাউন্টার মাস্টার সাগর ভাড়ার বিষয়ে জানায়,সে নির্ধারিত হারের চেয়ে ৫০টাকা কম ধরে ভাড়া কাটছে সবযাত্রীর কাছ থেকেই। তখন বিনয়ের সাথে তার কাছে ভাড়ার চার্ট দেখানোর জন্য অনুরোধ করলে। সে আরো অশুভনীয় খারাপ আচরণ করতে থাকে।
এক পর্যায়ে সে বলে আমার কাছে কোন চ্যাটফাট নাই।আর আপনাকেই আমি কেন দেখাবো আপনি তো মেন্টেল তাই এসব জানতে চান।এসবের কোন মানে আছে? কেন জানতে চান? আমার কাছে কিছু নাই। আমাদের সমিতির অফিসে যান। প্রশ্নকারী নিজেকে গণমাধ্যম কর্মী পরিচয় দিয়ে তার কাছে সমিতির অফিস কোথায় ও সমিতির দায়িত্বশীল কারো নাম্বার দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে তখন সে আরো খারাপ ব্যবহার শুরু করে।
বিষয়টি রেকর্ড করার চেষ্টা করলে মারমূখী আচরণ সহ মোবাইল টানাটানি করে মোবাইলটি ভেঙে ফেলে।পরিস্থিতি আরো লোমহর্ষক অবনতি হলে টানাহেঁচড়ায় গায়ের জামাও পেছন দিক থেকে ছিড়ে যায়। যা তাদের ভিডিওতে ধারণকৃত।
তারা ভুক্তভোগীর মোবাইলটি জোরপূর্বক কেড়ে নেওয়ার জন্য টানাটানির শুরু করে।মোবাইল ছিনিয়ে নিতে না পেরে তারা আরো বেপরোয়া দস্তাদস্তি শুরু করে। মোবাইল না দেওয়ার কারণেই উল্টো ভুক্তভোগীকে নানা অনিয়মের জেরে অশালীন অনৈতিক অনিয়মের জড়িয়ে অশালীন ভাষায় সম্ভোধনে ব্ল্যাকমেইলের উদ্দেশ্যে ভিডিও ধারণ করে।
সরেজমিনে উক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার নেতৃত্বে থাকা আলিফ এন্টারপ্রাইজ এর কাউন্টার মাস্টার সাগর ভিডিও ধারণের বিষয়টি স্বীকার করে। সত্য বলে দাবি করে। কিন্তু সুকৌশলে সে যারা ভিডিও করেছে তাদেরকে যাত্রী পরিচয়ে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করে। প্রশ্ন যাত্রীকে কেন আরেক যাত্রী অনিয়মে জড়িয়ে ভিডিও করবে? তার রহস্যজনক উত্তরে ও অসংগতিপূর্ণ বর্ণনা সে বুঝিয়ে দিল তাদের অপরাধ ও অনিয়ম ধামাচাপা দিতেই ঘটনাটি গুছিয়ে সুকৌশলে করেছে পরিকল্পিত ব্ল্যাকমেইল।
যার হাতে মোবাইল দিয়ে ভিডিও করা হয়েছে সেও ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করেছে।ভিডিও দেখতে চাইলে মোবাইল এখন তার কাছে নেই।ভুক্তভোগীকে অপমান ও ভয় দেখিয়ে ভিডিও করেছে যা তাদের সাজানো পাতানো নাটকের অংশ। অনিয়ম ফাঁসের জেরে,সত্য জানার কারনেই
সুকৌশলে উল্টো ভুক্তভোগীকেই ভিডিও ধারণ করে ব্লেকমেইলের চেষ্টা।
ভুক্তভোগীরা পরিবহন সমিতির কাছে প্রতিকার চায়তে গিয়ে অভিযোগ করে উল্টো নিজেরাই অভিযুক্ত হয়ে যান। এ যেন গল্প সিনেমার নাটকেও হার মানায়।
বাস্তবেই যদি কারো ক্ষেত্রে এমনটি ঘটে যে ভুক্তভোগী সেই বুঝে বাস্তবতা আসলে কতটি বিভৎস?
ঈদ, উৎসব এলেই পরিবহন শ্রমিক দের নিয়মনীতির কোন বালাই থাকেনা। ইউনিয়ন, সমিতির নামে ক্ষমতার অপব্যবহারের অসহায় হয়ে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা।
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সততা ও আইনের আলোছায়ার আড়ালের ফাঁদে অসহায় সাধারণ জনগণ।
আর নয় অনিয়ম ভোগান্তি। পরিবহন সেবা হোক যাত্রী বান্ধব। বাড়তি ভাড়া আদায়ে যাত্রী হয়রানি ভোগান্তি নিরসনে যথাযথ কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সকলের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছে সাধারণ ভুক্তভোগী যাত্রীরা।
সেই সাথে অনিয়মের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি সচেতন মহলের।
পত্রিকা একাত্তর/ ইসমাইল ইমন
আপনার মতামত লিখুন :