জামালপুরে সরকারি ভবন বিক্রির অভিযোগ ২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে


জেলা প্রতিনিধি, জামালপুর প্রকাশের সময় : ১৪/০৪/২০২৩, ৩:৫০ অপরাহ্ণ /
জামালপুরে সরকারি ভবন বিক্রির অভিযোগ ২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

জামালপুরের মাদারগঞ্জ সোলাইমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবন বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এলজিইডি ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিরুদ্ধে।

দুই লাখ টাকার ভবনটির সরকারি মূল্য মাত্র ৭ হাজার ৯ টাকা ধরে ভবনটি বিক্রি করা হয়েছে ১০ হাজার টাকায়।

জানা গেছে, মাদারগঞ্জ উপজেলার জরাজীর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি ক্লাস নেওয়ার অনুপযোগী হওয়ায় বিদ্যালয়ের ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন ভবন নির্মাণে বরাদ্দ দেয় সরকার।

পরিত্যক্ত ভবনটি বিক্রি করতে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সুপারিশে উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর-কে মূল্য নির্ধারণের চিঠি পাঠায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। যার পরিপ্রেক্ষিতে ভবনের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হলে প্রকাশ্য নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা শিক্ষা কমিটি।

উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের বেঁধে দেওয়া সরকারি মূল্য দেখে অনেকেই দেশকে শায়েস্তা খাঁর আমল বলে উপহাস করেছেন। সরকারি মূল্যের এক টাকা বেশি দর হলেই বিক্রিতে বাঁধা থাকে না প্রকাশ্য নিলাম কমিটির। ফলে আলোচনা করে একটি চক্র এসব ভবন নামমাত্র মূল্যে সরকারের কাছ থেকে কিনে। এতে অনেক বড় অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

বুধবার (১২ এপ্রিল ) নয়াপাড়া সোলাইমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটির ব্যাপারে নেহোসিয়েট ব্যর্থ হয়ে হট্টগোল পাকিয়ে নিলাম বাগিয়ে নেয় নেগোসিয়েট চক্রটি।

নেগোসিয়েট চক্রটি প্রকাশ্য নিলামের সিন্ডিকেট তৈরি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এতে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, সরকারি পণ্য কেনার সময় যেমন দাম ছয় থেকে সাত গুণ বাড়ানো হয়। একই ভাবে বিক্রির সময়ও ছয় সাত গুণ কমানো হয়। সরকারি কিছু অসাধু কর্মকর্তা নিজেদের পকেট ভড়াতে গোপনে নিলাম দেন এবং নেগোসিয়েট চক্রগুলোকে লালন করেন। এজন্যই সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। বিক্রিত মূল্য দেখে মনে হচ্ছে-দেশের বাজারে শায়েস্তা খাঁ’র আমল চলছে।

নিলাম কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, প্রকৌশল বিভাগ সরকারি মূল্য নির্ধারণ করেছেন। সেই মূল্যের সমপরিমাণ হলে প্রকাশ্য নিলামে বিক্রিতে বাঁধা থাকে না। সরকারি মূল্যের ওপর দাম পাওয়ায় তা বিক্রি করা হয়েছে। তবে নিলামে নোটিশ ও ভবন নিলামের ইষ্টিমেট (বাজেট) কপি চাইলে তিনি বলেন ঐটা আমি দিতে পারবো না।

ভবনের মূল্য নির্ধারণকারী উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া তমাল বলেন, মনগরা নয়, সরকারি সিডিউল মতেই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ভবন দেখে মাপার পরই সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি মূল্যে অতিক্রম হলেই প্রকাশ্য নিলামে বিক্রির নিয়ম আছে।

প্রকাশ্য নিলাম কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলিশায় রিছিল বলেন, সরকারি মূল্যের ওপর হলে নিলামে বিক্রি করা যায়। নিলামে বিক্রি করা ভবনটি সরকারি মূল্য নির্ধারণ করেন উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। তবে নিলামে কোনো অনিয়ম হলে তা অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পত্রিকা একাত্তর/ সাকিব আল হাসান