রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আলোচিত ১৩ বছরের কিশোরী রেবেকা হত্যা মামলার দীর্ঘ সাড়ে ১৮ বছর পেরিয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর হাতে লোমহর্ষক তথ্য এসে পৌছেছে। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এ হত্যা মামলার আসল রহস্য। পিবিআই এর তথ্য অনুসন্ধান সুত্রে, রেবেকা হত্যা মামলায় বাদীই হচ্ছে আসল হত্যাকারি।
এমন তথ্য নিশ্চিত করে গত মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন রাজশাহী জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাতে জানা যায়, ২০০৪ সালের ৯ জুন রাতে খুন হয় বাঘা উপজেলার লক্ষিনগর গ্রামের আকসেদ আলীর ১৩ বছরের মেয়ে (শিশু) রেবেকা খাতুন। এরপর ১০ তারিখে রেবেকার পিতা বাদী হয়ে বাঘা থানায় দণ্ডবিধির ১৪৭/ ৪৪৭/ ৪৪৮/ ৩২৩/ ৩২৪/ ৩২৬/ ৩০৭/ ৩০২/ ৪২৭/ ৩৪ ধারায় পেনাল কোডে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নাম্বার ১৬, সেই মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখ সহ আরও ২০-২৫ জন কে অজ্ঞাত আসামী করা হয়। মামলাটি নিয়ে বাঘা থানার তদন্তকারি কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর ফজলুল হক চার্জশিট দিলে মামলার গতি থেমে যায়। পরে ২০২২ ইং সালে পিবিআই এর কাছে মামলাটি আসলে পুনরায় তদন্ত শুরু হয়।
মামলাটি নিয়ে গভীর পর্যালোচনা ও সাক্ষিদের জবানবন্দীতে মামলাটির আসল রহস্য বেরিয়ে আসে। এক পর্যায়ে জানা যায়, এই মামলার বাদী অর্থাৎ রেবেকা’র পিতা আকসেদ আলী এই শিশু কণ্যা রেবেকাকে নির্মম ভাবে হত্যা করেন। এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন বাদীর ১ম স্ত্রী ভায়লা বেওয়া (৬৫) এবং ২য় স্ত্রী আফিয়া বেওয়া (৬০)। এ সকল তথ্য উল্লেখ করে আকসেদ আলীর স্ত্রীদ্বয় গত ৯ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে ম্যাজিষ্ট্রেট এর নিকট কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। এই মামলা সম্পর্কে আরও জানা যায় যে, ওই এলাকায় বাদী এবং আসামীদের সাথে দীর্ঘদিন থেকে জমিজামা সংক্রান্ত মামলা চলছিল, যা এখনও চলমান আছে। মুলত সেই সকল মামলা থেকে ফাইদা নিতে বাদী এমন জঘন্য হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। পরে আকসেদ আলী নিজের মেয়েকে হত্যা করে পুর্বের মামলার বিবাদীদের পূনরায় এ হত্যা মামলার আসামী করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এএসপি আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, বাদী আকসেদের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী’রা মুখ খুলেছেন। বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দিও প্রদান করেছেন। এতদিন পর তার স্ত্রীরা কেন এই তথ্য প্রকাশ করলেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এতদিন তারা স্বামির ভয়ে মুখ খুলতে পারেনি। তবে মামলাটির আরও অনুসন্ধান চলছে,এই হত্যার সাথে আর কে বা কারা জড়িত রয়েছে, আমরা সেটা উদঘাটন করার চেষ্টা করছি।
পত্রিকা একাত্তর/ রবিউল ইসলাম
আপনার মতামত লিখুন :