চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় এবার সম্পত্তির দখল নিতে ভাই নয় বোনের শত্রু হলো আপন বোন।ছোট বোন ও বোনের জামাই মিলে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা করে রক্তাক্ত ও জখম করিয়েছে আপন বিধবা বোন ও বোনের মেয়েকে। শুধুমাত্র সহায় সম্পত্তি দখলে নিতে প্রাণে মেরে ফেলতে এই হামলা।
এলাকাবাসী ও আদালতে অভিযোগ সূত্রে জানা যায় বিধবা নাসিমা আক্তারের(৫৫) পরিবারে পুরুষ সদস্য ও ছেলে সন্তান না থাকায় তাদের উপর এমন জোর খাটাচ্ছে ভূমিদস্যুরা।
বিগত ২৪ শে জুন ২০২২ সালে ভিকটিম নাসিমা আক্তার ও মেয়ে রোজি আক্তার এক নিকট আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে গেলে তাদের বসতবাড়ি ঘর খালি পেয়ে এজহারে উল্লেখিত আসামি ছোট বোন শাহীনা আক্তার (৩৫), স্বামী সাদ্দাম হোসেন (৪৫) মোঃ আরিফ (২৬) জেসমিন আক্তার (২১) ও মোঃ আলী(২৭) মিলে ভিকটিমের অনুপস্থিতিতে দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে ঘরের দামি মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। নারিকেল গাছের, ডাব, নারিকেল পেড়ে নিয়ে যায়।
মামলার বাদী বিধবা নাসিমা আক্তার ফিরে এসে ঘরের আসবাবপত্র এই অবস্থা দেখে ছোট বোন শাহিন আক্তার কে জিজ্ঞেস করলে সে স্বামী সহ মারমুখী হয়ে তেরে এসে তুমুল ঝগড়ার একপর্যায়ে হত্যার হুমকি দিয়ে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। ভিকটিম বিষয়টি স্থানীয় আনোয়ারা থানা কে লিখিতভাবে জানান।
ইতিপূর্বে আসামিগণের বিরুদ্ধে স্থানীয় গ্রাম আদালতে অভিযোগ দায়ের করলেও আসামিগণ বেপরোয়া হওয়ায় সমস্যার সমাধান হয়নি। সর্বশেষ পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে গত ২৪শে মার্চ শুক্রবার বার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন ভিকটিমের ভিটে বাড়ির গাছের ডালপালা কেটে গেলে সেই ডালপালা ভিকটিম কুড়িয়ে এনে নিজ বসত ভিটায় স্তূপ করে রাখলে আসামিগণ হঠাৎ করে এসে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দাঁড়ালো দা, কিরিচ দিয়া অতর্কিত হামলা চালায় ওই সময় ইটের আঘাতে বাদীনি ভিকটিমের চোখে ও দায়ের কোপে পায়ে গুরুতর জখম হয়।
বেলা ১১ টার সময় ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনাটি ঘটে। চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া ইউনিয়নে বিধবা নাসিমা আকতার ও তার মেয়ের উপর এই হামলায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পর বাপ-দাদার ভিটে বাড়ীর কাগজপত্র নাসিমা আকতারের হওয়া স্বত্তেও গায়ের জোরে দখল করতে চায় এলাকায় ভুমিদস্যূ হিসেবে পরিচিত ছোট বোন জামাই সাদ্দাম হোসেন (৪৫)। বিধবা নাসিমাকে মেরেই ক্ষান্ত হয়নি তারা। সন্ত্রাসী হামলার এ ফুটেজগুলো মোবাইলে ধারণ করায় ধারালো দা, ইট ও হাতের লাঠি দ্বারা মারাত্মকভাবে আঘাত করেছিল নাসিমা আকতারের বিধবা মেয়ে রোজী আক্তার কেও। এ সময় ভিকটিমের গলার স্বর্ণের চেইন, কানের দুল, মোবাইল সহ নগদ ৫ টাকা ছিনিয়ে নেয়। ইট ও দায়ের আঘাতে নাসিমা আকতারের পায়ে গুরুতর জখম হয় এবং চোখের কোনে ইট দিয়ে আঘাত করায় প্রচুর রক্তপাত ঘটে।
পরবর্তীতে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় মা মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীদের সংগঠাপূর্ণ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে রেফার করেন।
এ ঘটনায় ছোট বোনের জামাই সাদ্দামকে প্রধান আসামী করে ৫ জনকে আসামী করে এটেম টু মার্ডারের অভিযোগ এনে স্থানীয় আনোয়ারা থানায় একটি মামলা করা হয়।
নাসিমা আকতার জানান, বহিরাগত সন্ত্রাসী ভাড়া করে আঘাতের পর আঘাত করার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল হত্যা করা যাতে করে আমার সম্পদ দখলে নিতে পারে। উল্লেখ্য যে চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানার অন্তর্গত ৯ নং বুরুমছড়া ইউনিয়নের বুরুমছড়ার ব্যাগ্যার বাড়িটির অংশসহ পার্শ্ববর্তি জমিগুলো মূলত বিধবা নাসিমা আকতারের বাপ- দাদার পৈতৃক সম্পত্তি। আর উক্ত জমিটিতে ভাইবোনসহ রয়েছে চার ওয়ারিশ।
তবে এ সম্পত্তির পুরোটাই দখলে নিয়ে ভোগ বিলাস করতে মরিয়া এলাকায় চিহৃিত ভূমিদস্যু আপন ছোট বোনের জামাই সাদ্দাম হোসেন। আর এতে সহোযোগিতা করছেন বিধবার আপন ছোট বোন সাদ্দাম হোসেনের স্ত্রী শাহিন আক্তার।
এই ঘটনার পর পর স্থানীয় থানা প্রশাসন হামলাকারীদের এলাকায় অবস্থান জেনেও গ্রেফতার না করায় ভুক্তভোগীর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানান।
হামলা শিকার বিধবা নাসিমা জানান মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামলার ৫নং আসামি মোঃ আলী (০১৮৬৪৫৩৯৭২৬) নাম্বার থেকে ফোনে ভিকটিমকে একাধিকবার হুমকি প্রদান করায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিধায় চিকিৎসককে অনুরোধ করে আত্মীয়ের বাসায় থেকে চিকিৎসার অনুমতি সাপেক্ষে বাসায় ফেরত আসেন।
পরবর্তীতে হামলার শিকার বাদীনি ও ভিকটিম বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব এড:জিয়া হাবিব আহসানের শরণাপন্ন হলে তিনি মানবাধিকার আইনবিদদের সাথে নিয়ে মানবিক বিবেচনায় চট্টগ্রাম চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ফৌজদারী অভিযোগটি উপস্থাপন করলে আদালত এফআইআর হিসেবে মামলাটি গ্রহণ করতে আনোয়ারা থানা কে নির্দেশ দেন।
পত্রিকা একাত্তর/ ইসমাইল ইমন