কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্রিড প্রাথমিক বিদ্যালয় তথা ক্রিড সংস্থার রেকর্ডীয় জমি জোরপূর্বক দখল করে অবকাঠামো নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ও ঢাকার কয়েকজন প্রভাবশালী স্কুলের জমি দখল কান্ডে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিকার চেয়ে ক্রিড-প্রধান কার্যালয়ের প্রোগ্রাম অফিসার (শিক্ষা) মো: শামসুল আলম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও টেকনাফ উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর জবর দখলের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করে। যাহার স্বারক: ক্রিড,পক/১/১-২০২৩-৯৩৫ তারিখ: ২৭/০২/২০২৩ ইং ।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ক্রিড (সেন্টারফর রিহ্যাবিলিটেশন এডুকেশন আরনিং ডেভেলপমেন্ট) সরকারের সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তারে উপজেলা শিক্ষা অফিসের একাডেমীক সহযোগিতা নিয়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে বিগত ১৯৯৪ ইং সাল হতে অদ্যাবধি পরিচালনা করে আসছিল। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য বিগত ১৩/১০/২০১০ ইং তারিখে সেন্টমার্টিন মৌজার বি,এস খতিয়ান ১০০৭ এর ৪৫৭ দাগের ৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করে সীমানা পেলারসহ চৌহার্দ্দি চিহ্নিত করে একটি ঘর নির্মাণ করে।
ক্রীড এর দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জমির প্রতি লোভে বশ্বীভুত হইয়া একই এলাকার সাবেক মেম্বার শামসূল ইসলাম এর নেতৃত্বে স্থানীয় ও ঢাকাস্থ কতিপয় ব্যক্তিবর্গ ক্রীড পরিচালিত স্কুলের ক্রয়কৃত ভোগদখলীয় সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে স্থাপনা ভাংচুর করে। একপর্যায়ে গত ২৫/০২/২০২৩ ইং তারিখে শামসূল ইসলাম গংয়ের নেতৃত্বে স্থানীয় ও ঢাকাস্থ কতিপয় ব্যক্তিবর্গ স্কুলের জমি জোরপূর্বক প্রভাব খাটিয়ে দখলের চেষ্ঠা করে এবং কেয়ারটেকারকে এলোপাতাড়ি মারধর করিয়া গুরুতর আহত করে।
এদিকে গত ১ লা ফেব্রুয়ারী বিকাল ৩ টায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের একমাত্র বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্রিড প্রাথমিক বিদ্যালয় তথা ক্রিড সংস্থার রেকর্ডীয় জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টার প্রতিবাদে প্রতিবাদ সভা করেছে এলাকাবাসী।
এলাবাসীরা জানায়, উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত ও ভোগ দখলদার থেকে ক্রিড সংস্থার নামে বিগত ২০১০ সালের দিকে দলিল সম্পাদন করা হয় এবং ওই দলিল মুলে সৃজিত খতিয়ান চুড়ান্ত হয়। ওই জমিতে বাউন্ডারি বেষ্টনি ও সীমানা পিলার করে একটি ঘর নির্মাণ করে। সেন্টমার্টিন ক্রিড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপদেষ্টা আব্দুর রহমান বলেন, প্রায় ১৫ বছর আগে উত্তরাধিকার ও ভোগ দখলে থাকা জমির প্রকৃত মালিক থেকে ক্রিড নামে একটি সংস্থা জমি খরিদ করেন। স্কুলের নামে সৃজিত খতিয়ান চুড়ান্ত আছে।
প্রায় এক যুগের পর সেন্টমার্টিনের পশ্চিম পাড়ার মোহাম্মদ হাছানের ছেলে সাবেক মেম্বার শামসুল আলমগং উক্ত জমি দখল করার পাঁয়তারা শুরু করে। এবং ওই জমি ঢাকার দুই প্রভাবশালী ব্যক্তিকে বিক্রি করার চেষ্টা চালায়।
বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে আসলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি রক্ষা করার জন্য ওই সামশুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা করে। এলাকাবাসী ক্রিডের জমি রক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সামশুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে, জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ঢাকার এডভোকেট মো: নুরুল আমিনের ২০০৯ সালে খরিদকৃত জমিতে কেয়ারটেকার হিসেবে কর্মরত রয়েছি। ক্রীড কর্তৃপক্ষ যেখানে জমি দাবী করছে সেখানে তাদের কোন জমি নেই। তিনি আরো বলেন এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন যুবলীগ এর সভাপতি আখতার কামালকে ফোন দিয়ে জেনে নিন।
উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখ জনক।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আবদুল হালিম এর সরকারী নম্বরে কল দিলে সংযোগ পওয়া যায়নি।
পত্রিকা একাত্তর/ মোস্তাক
আপনার মতামত লিখুন :