মনিরামপুরের পাচাকড়িতে কিশোরী বধূর রহস্যজনক মৃত্যু


উপজেলা প্রতিনিধি, মনিরামপুর প্রকাশের সময় : ১৯/০২/২০২৩, ৯:০৩ অপরাহ্ণ /
মনিরামপুরের পাচাকড়িতে কিশোরী বধূর রহস্যজনক মৃত্যু

যশোরের মনিরামপুরে নাওয়াদ জামান বরিশা (১৭) নামে এক কিশোরী বধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার পাঁচাকড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শ্বশুর পক্ষের দাবি, ভাত খাওয়া নিয়ে স্বামী আরশীল কবিরের সাথে ঝগড়া হওয়ায় বরিশা গলায় ওড়না জড়িয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

সন্দেহ হওয়ায় থানা পুলিশ আজ রোববার দুপুরে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। প্রকৃত ঘটনা জানতে গৃহবধূর স্বামী আরশিল কবির, শ্বশুর আজমত ফকির, শাশুড়ি আসমা বেগম ও চাচি শাশুড়ি শিল্পি বেগমকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

বরিশা খাতুন যশোর সদর উপজেলার সাতিয়ানতলা এলাকার কলেজ শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান সবুজের মেয়ে। প্রেমের সম্পর্কের জেরে পরিবারের অমতে ৮ মাস আগে আরশিল কবিরের হাত ধরে বাবার বাড়ি ছাড়েন বরিশা।

এরপর ধরে অভিমানে মেয়ের খোঁজ নেননি শিক্ষক বাবা। বরিশা খাতুনের আত্মহত্যার ঘটনায় রোববার সকালে মনিরামপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা করেছেন শ্বশুর আজমত ফকির। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, আরশিল কবির ও বরিশাকে বাড়ি রেখে শনিবার তাঁরা স্বামী-স্ত্রী আত্মীয়র বাড়ি যান।

রাত ১১ টার দিকে বাড়ির পাশের বাজার থেকে বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে নিয়ে রাতের খাবার সারতে চান কবির। কিন্তু অভিমান করে স্ত্রী খাবার খেতে চাননি। এতে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে স্ত্রীকে ঘরে রেখে ফের বাজারে যান কবির। কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফিরে ঘরের প্রধান ফটকে তালা ঝুলতে দেখেন।

পরে আশপাশের লোকজনের সহায়তায় তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে গলায় ওড়না জড়িয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখেন বরিশাকে। দ্রুত তাঁকে নামিয়ে স্থানীয় এক পল্লি চিকিৎসকের কাছে নিলে তিনি বরিশাকে মৃত ঘোষণা করেন। নেহালপুর ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুজ্জামান বলেন, গৃহবধূর দেহে নির্যাতনের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

প্রকৃত ঘটনা জানতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ চার জনকে আমরা হেফাজতে নিয়েছি। এসআই আতিকুজ্জামান বলেন, কবিরের সাথে চলে আসায় কলেজ শিক্ষক বাবা আর মেয়ের খবর রাখেননি।

এ বিষয়ে বরিশার পরিবারের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মনিরামপুর থানার ওসি (সার্বিক) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, প্রাথমিকভাবে সন্দেহ হওয়ায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর নিহতের স্বামী আরশিল কবির বাদে তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পকত্রকা একাত্তর/ কে,এম,মোজাপ্ফার