চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ডে রাতের অন্ধকারে লাউ বাগানের লাউ গাছের গোড়া কেটে দিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে লাউ বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল হতভাগ্য কৃষক নুরুল গনি খোকনের।
সীতাকুন্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মধ্যম মাহমুদাবাদ গ্রামের দীঘিরনামা এলাকার মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে কৃষক নুরুল গনির সাথে কথা বলে জানা যায়, জমির মালিক থেকে প্রায় ৪০ শতক জমি বছরে ৮ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে তাতে লাউয়ের বীজ রোপণ করেছিলেন তিনি। অতি যত্ন দিয়ে গাছগুলো মাচা ভর্তি হয়ে মাত্রই ফুলে ফলে ভরে উঠতে শুরু করেছিল। কিছু কিছু গাছে লাউ ধরতেও শুরু করেছিল।
গতকাল ১৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতের যেকোন সময় গাছগুলো কেটে দেয় দুষ্কৃতকারীরা, আজ ১৪ ডিসেম্বর বুধবার লাউ বাগানে সকালে গিয়ে তিনি দেখেন মাচার গাছগুলো নুঁইয়ে পড়েছে। প্রথমে ভেবেছিলেন রোদের কারণে এমনটা হয়েছে হয়তো। কিন্তু পরে দেখতে পান সব গাছের গোড়া কাটা।
তিনি জানান, জমি লিজ নিয়ে বছরজুড়েই সবজির আবাদ করেন। অক্টোবরের শুরুতে এবার হাইব্রিড লাউয়ের বীজ রোপণ করেছিলেন। অল্পদিনেই গাছ বড় হয়, ফলনও আসতে শুরু আগামী কয়েক দিনের মধ্যে লাউ বিক্রির উপযোগী হত। চারা রোপণ, সার, পানিসহ নিজ পরিশ্রম বাদে তিনি ২০ হাজার টাকা খরচ করে তাতে মাচা দিয়েছেন। ক্ষেতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। তিনি ব্যাংক থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে এই লাউ চাষ করেন।
তিনি বলেন, গত দেড় মাসে ক্ষেতটিতে রাত-দিন কাজ করেছি। প্রতিটি গাছেই আমার হাতের ছোয়া রয়েছে। আমার আশা ছিল এ বছর ক্ষেত থেকে ভাল ফল পাবো। ঋণ পরিশোধ করে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ করবো। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেছে। এখন কীভাবে দেনা পরিশোধ করব জানি না।
সীতাকুণ্ড উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালমা সুলতানা খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ক্ষেত পরিদর্শনে যান। এমন গর্হিত কাজের জন্য তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গাছের সঙ্গে যাদের শত্রুতা তারা কেমন মানুষ।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
তিনি আরো বলেন, এমন অভিযোগ মাঝে মধ্যে আসে, এইটা দুঃখজনক। শত্রুতা নানান কারনে থাকতে পারে তবে প্রতিশোধ এভাবে নেয়া অমানবিক ও নিস্কৃষ্ট কাজ, এইসব কাজ থেকে বিরত থাকতে এলাকাবাসীকে আহবান জানান।
পত্রিকা একাত্তর/ ইসমাইল ইমন