আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে আশ্রয় নেয়নি উপকারভোগীরা

স্টাফ রিপোর্টার, গোমস্তাপুর

২৯ মে, ২০২২, ১ year আগে

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে আশ্রয় নেয়নি উপকারভোগীরা

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনস্থ একটি সরকারি প্রকল্প যার মাধ্যমে ভ্থমিহীন ও গৃহহীন এবং যার জমি আছে ঘর নেই, এমন পরিবারের জন্য বাসস্থান নির্মান করা হয়। বরাদ্দকৃত আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ হচ্ছে তার বিশেষ উদ্যোগের অন্যতম।

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সেই লক্ষ্য নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের ৬৫৮ টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে।তার মধ্যে ১৩ টি বাড়ি এখনো নির্মাণাধীন রয়েছে।

বাড়িগুলোর মধ্যে ১ম পর্যায়ে ৯৫টি, ২য় পর্যায়ের ১ম ধাপে ৩০০ টি, ২য় ধাপে ২০০টি, ৩য় ধাপের ১ম পর্যায়ে ৫০টি ও ২য় ধাপে ১৩ টি। নির্মাণাধীন বাড়িগুলো উপকার ভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০টির অধিক বাড়িতে উপকারভোগীরা আশ্রয় নেয়নি। তবে এর মধ্যে আবার কেউ কেউ রাত্রে বাড়িতে ঘুমাতে আসে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছ।

সরেজমিন পরিদর্শন গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার চৌডালা, গোমস্তাপুর, বোয়ালিয়া, রহনপুর ও পার্বতীপুর এই ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০টির অধিক বাড়িতে উপকারভোগীরা আশ্রয় নেয়নি।এর মধ্যে ৫টি বাড়ি বরাদ্দ প্রাপ্তদের নিকট থেকে নিয়ে অন্যদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান।

বাড়িতে না থাকার বিষয়ে উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাড়ি সংলগ্ন রাস্তা, পানীয় ও জলের সমস্যা, বিদ্যুৎতের সমস্যা,কর্মস্থল থেকে অনেক দূরে হওয়ায় এবং বাড়িগুলো বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় তাদের পৈত্রিক বাসস্থান ছেড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িতে যেতে আগ্রহী নই তারা।

নয়াদিয়াড়ী গ্রামের এক উপকারভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গোঙ্গলপুরে নির্মাণাধীন বাড়িতে থাকতে ভালো লাগছে না। তাই কর্তৃপক্ষকে বলবো আমার প্রাপ্ত বাড়ি অন্য একজনকে দিয়ে দিতে।

গোমস্তাপুর ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন মন্ডল জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িতে না থাকার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন পত্র পায়নি। তবে জানতে পেরেছি ইউনিয়ন তহসিলদারদের পত্র দিয়েছে ইউএনও ।

এদিকে রহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সোহরাব বলেন, কিছু বাড়িতে থাকছে না।তা আমরা জানতে পেরেছি।ইতিমধ্যে ইউএনও আমাদের তাদের তালিকা তৈরি করে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

গোমস্তাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান জানান,আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িগুলোতে যারা থাকছে না তাদের তালিকা তৈরি করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের'কে বলা হয়েছে। তালিকা হাতে পেলে যারা বাড়িতে থাকতে চাইছে না তাদের বাসস্থানের বরাদ্দ বাতিল করা হবে।

বাড়িগুলোতে পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা, সংযোগ রাস্তা না থাকার কারণে উপকারভোগীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। প্রতিবেদকের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের রাস্তা করার জন্য কোনো বরাদ্দ না থাকায়, বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে কিছুটা সময় প্রয়োজন। আর পানির সমস্যা সমাধানের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে। বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের জন্য নেসকো'কে বলা হয়েছে।

গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা খাতুন বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িগুলোতে যারা থাকছে না। তাদের তালিকা চেয়ে আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে পত্র দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ আমাদের সেই তালিকা পাঠালে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গোঙ্গলপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সঙ্গে ইটভাটা রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রকল্পের মধ্যে ইটভাটা যদি থেকে থাকে, তাহলে আমি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। উল্লেখ্য, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িগুলোতে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ইতিপূর্বে পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।

পত্রিকা একাত্তর / ইয়াহিয়া খান রুবেল

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news