৩ শতাধিক যুবকের স্বপ্নভঙ্গ প্রতারক এখন কোটিপতি

কালুখালী, রাজবাড়ী প্রতিনিধি

২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ২ years আগে

৩ শতাধিক যুবকের স্বপ্নভঙ্গ প্রতারক এখন কোটিপতি

শিক্ষা জীবন শেষ করে পরিবারে সচ্ছলতা আসবে বলে সেই আশায় বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে লোন নিয়ে চাকুরীর আশায় টাকা দিয়েছিল ৩ শতাধিক যুবক ছেলে তাদের মধ্যে সাদিকুল ইসলাম, আব্দুল আলিম, পারভেজ, সুমন ইসলাম, বকুল হোসেন, চৌধুরী, ইমন, সজীব, সাইদুল, রাজিব কুমার, সাগর হোসেন, আলম বিশ্বাস, আশরাফুল, বিপুর রানা, কাজল সহ অন্যান্য শিক্ষিত বেকার যুবক প্রত্যেকেই ২ থেকে ৪ লক্ষ টাকা করে দিয়েছিল একটা ভালো চাকরির আসায়। কিন্তু চাকুরী করেছে রাস্তায়, গার্মেন্টস ফ্যাক্টারীর সামনে দাড়িয়ে থেকে গাড়ী গননা করেছেন তারা। অভিনব কায়দায় চাকুরীর ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন একটি প্রতারক চক্র।

”ডি.সি এ.এ” নামক একটি ভ’য়া কোম্পানির নামে রাজবাড়ী জেলার পাংশা ও কালুখালী উপজেলার প্রায় ২ শতাধীক ও মাগুড়া, পুরাদাহ এলাকা থেকে শতাধীক বেকার যুবকদের প্রতারনার ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা ওই নাম মাত্র কোম্পানি ”ডি.সি এ.এ” । রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের চরঝিকড়ী ঢেকিপাড়া, কাচারীপাড়া, চরআফড়া, হাবাসপুর গ্রামেই রয়েছে প্রতারনার শিকার শতাধীক যুবক। প্রতারনার শিকার একাধীক ভূক্তভ’গী জানান রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মাজবাড়ী গ্রামের মোঃ নাদের মন্ডলের ছেলে মোঃ সুরুজ মন্ডল এ প্রতারনা চক্রের মূল হোতা তার সাথে পাংশা ও কালুখালীর আরো বেশ কয়েকজন জড়িত আছে যারা ওই টাকায় বর্তমানে ফুলে ফেপে উঠেছে।

ভ’ক্তভ’গি বকুল হোসেন জানান- প্রতারনার ধরন ছিল নিজেদের লোক দিয়েই, প্রথমে যে চাকুরী করতে গিয়েছে তাকে প্রমোশন ও বেশী বেতনের লোভ দেখিয়ে তার মাধ্যমে আরো বেশ কয়েকজনকে নেওয়া হয়েছে, এরুপ করেই প্রতারনার জাল বিছানো হয়েছিল, প্রথম প্রথম ২-১ মাসের বেতন দিয়েছিল তারা ওই বেতন পেয়ে নিজেদের লোক কোম্পানিতে ঢুকাতে আমরাও কাজ করেছি তবে বুঝতে পারিনি তাদের ফাদ, সম্পূন্য ভুয়া একটি প্রতিষ্ঠানের নামে আমাদের চাকুরী দিয়ে আমাদের সাথে প্রতারনা করেছে আমরা এর সঠিক বিচার দাবী করছি।

এ বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে কর্মচারী নিয়োগের একটি দলিল আমাদের হাতে আসে সেখানে দেখা যায় কোম্পানির মালিক মোঃ সুরুজ মন্ডল, পিতাঃ নাদের মন্ডল, সেখানে তিনি উল্লেখ্য করেছেন আমার নিজ তৈরী প্রতিষ্ঠান ”ডিসিএএ” পরিবর্তে নাম চেঞ্জ হইতে পারে। আমি এক মাত্র মালিক বাকি সবাই আমার নিয়োগ দেওয়া বেতন ভুক্ত কর্মচারী।

আমি সুরুজ মন্ডল চাকুরী দেওয়ার আগে সবার কাছে অঙ্গীকার করেছিলাম যে, এই চাকুরী আধা সরকারীর মত সুজোগ সুবিধা দিব। সর্বনিম্ম বেতন ২৫ হাজার টাকা এ্যাসিটেন্টে সুপার থেকে শুরু করে পর্যায় ক্রমে পদ অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি হইবে আলোচনা সাপেক্ষে। চাকুরীতে জয়েন্ট করার ৬ মাসের মধ্যে কোম্পানির আইডি কার্ড প্রদান করিব। এরুপ ২২টি লোভনীয় অফার ও শর্তের জাল বিছিয়ে প্রতারনার ফাঁদ পেতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা কোম্পানির মালিক সুরুজ মন্ডল। এদিকে ভ’ক্তভ’গীরা যাদের মাধ্যমে প্রতারনার শিকার হয়েছে তাদের নিকট ধর্ণা দিচ্ছে তারাও নানা তালবাহানা করছে।

ভ’ক্তভোগী পারভেজ সহ ৫০ এর অধীক ভ’ক্তভ’গীর সাথে কথা হলে তারা জানান পাংশা, কালুখালী, মাগুড়া, পুরাদাহসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এই চক্রটি ৫-৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, আমাদের এলাকার ৮০ -১০০ জন প্রতারনার শিকার হয়েছি প্রত্যেকের নিকট থেকে ২ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা। আমরা অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান, আমাদের এখন কোন উপায় নেই আমরা কি করব।

বুকুল হোসেন বলেন এর সাথে আরো যারা জড়িত তারা এখন অনেক টাকার মালিক আমরা পথের ভিকারী, আমি এখন একটি ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করে কোন মতে চলছি। আমরা গরীব অসহায় তাই বিচার পাচ্ছি না। এ ব্যাপারে কোম্পানির মালিক রাজবাড়ীর কালুখালীর মাজবাড়ী গ্রামের সুরুজ মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করা হলে তার একাধীক নাম্বার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায় পরে তার নিজ গ্রামের বাড়ী গিয়ে খোজ নিলে তারাও বলতে পারেনি সরুজ কোথায় থাকে।

এ বিষয়ে আইন সংশ্লিষ্ঠ সকলের সু দৃষ্ঠি কামনা করে ক্ষতিগ্রস্থরা বলেন আপনারা আমাদের বাচান আমরা খুব বিপদের মধ্যে আছি আমরা বাচতে চাই আমরা কিস্তির টাকা পরিষদ করতে পারছি না, আমরা মহা সমস্যার মধ্যে আছি আপনারা আমাদের রক্ষা করুণ।

পত্রিকা একাত্তর / শাকিল আদনান

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news