পাহাড়, ঝরনা আর সবুজের প্রাচুর্যে ভরা সিলেটে ছড়িয়ে আছে দৃষ্টিনন্দন সব পর্যটনকেন্দ্র। সবুজে মোড়া পাহাড়ের কোলঘেঁষা পাথুরে নদী, বন, ঝরনা, চা-বাগান কী নেই এখানে! সিলেটের বৈচিত্র্যে ভরা সৌন্দর্য দেখতে ছুটে আসেন পর্যটক আর ভ্রমণপ্রিয় মানুষ।
সিলেটে কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকা থেকে সিলেটে তিন ভাবে যাওয়া যায়। সড়ক, রেল এবং আকাশ পথ। আকাশ পথে প্রতিদিন কয়েকটি ফ্লাইট চলাচল করে। সড়ক পথে হানিফ, শ্যামলী, গ্রিনলাইন পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি পরিবহন ঢাকা থেকে সিলেটে যায়।
ভাড়া নন এসি ৪৭০ টাকা, এসি ১২০০ টাকা। প্রতিদিন কয়েকটি ট্রেনও যায়। এর মধ্যে উপবন এক্সপ্রেস, পারাবাত এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা ও কালনি এক্সপ্রেস অন্যতম। ভাড়া এসি চেয়ার স্নিগ্ধা ৬৩০ টাকা।
এসি কেবিন ১১৪৯ টাকা। চেয়ার ৩২০ টাকা। আমরা ঠিক করলাম উপবন এক্সপ্রেসে যাবো। বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ঠিক ৯টায় ছেড়ে যায় ট্রেনটি। সিলেট গিয়ে পৌঁছে ভোর ৫টায়।
কোথায় খাবেন?
সিলেটে জিন্দাবাজার এলাকায় খাবারের জন্য বেশ কয়েকটি ভালো মানের হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ ভাই হোটেল ও পানসি হোটেল অন্যতম। তবে পাঁচ ভাই হোটেলে খাবারের মান খুবই ভালো এবং তুলনামূলকভাবে কম দাম।
হরেক রকম ভর্তা, মাংস, মাছ, খিচুরি খুবই মজার। এদের পাঁচ মিশালী আইটেম দারুন। আমরা গিয়ে পাঁচ ভাই ও পানসিতে খেয়েছি। সিএনজি অটোরিকশা চালককে বলে স্পট থেকে সোজা হোটেলে গিয়েছি।
সুরমা নদী সিলেট শহরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বাংলাদেশের অন্যতম নদী সুরমা। শহরের চাঁদনী ঘাট থেকে সুরমা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। তবে দিন দিন নদীটি দূষিত হয়ে পড়ায় এর সৌন্দর্যে ভাটা পড়ছে। আলী আমজদের ঘড়িঘর ক্বিন ব্রিজের উত্তর পাড়ে সুরমা নদীর তীরের চাঁদনীঘাটে প্রাচীন ঘড়িঘর। এটি নির্মাণ করেছিলেন সিলেটের কুলাউড়ার পৃত্থিমপাশার জমিদার আলী আমজদ খান।
দিল্লির চাঁদনীচকে শাহজাদী জাহানারা কর্তৃক নির্মিত ঘড়িঘর দেখে মুগ্ধ হয়ে তিনি এটি তৈরি করেছিলেন বলে কথিত আছে।
ক্বিন ব্রিজ সুরমা সেতু নামেও এটি বেশ পরিচিত। লোহার তৈরি এ সেতুটি ১৯৩৬ সালে নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন ইংরেজ গভর্নর মাইকেল ক্বিনের নামে এর নামকরণ।
১১৫০ ফুট লম্বা এবং ১৮ ফুট প্রস্থ এ সেতুটি দেখতে ধনুকের মতো বাঁকানো। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী ব্রিজটির একাংশ উড়িয়ে দেয়। পরে ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের অর্থায়নে বিধ্বস্ত অংশটি পুনঃনির্মাণ করা হয়।