নেপালের কাঠমুন্ডুতে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবারের নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ। শুক্রবার সেমিফাইনালে ৮-০ গোলো জিতেছে বাংলাদেশ। প্রমার্ধে চারটি এবং দ্বিতীয়ার্ধে চারটি মিলিয়ে আটটি গোল করে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। আজ ঠিক একই একাদশ নিয়ে মাঠে নামে ভুটান নারী ফুটবল দলের বিপক্ষে। মাত্র ১ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের মাথায় ভুটানের জালে গোল জড়ায় সিরাত জাহান স্বপ্না ; এক মনোমুগ্ধকর শট।
সিরাত জাহান স্বপ্নার ১ গোল আর হ্যাট্রিক উপহার দেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। গোলের সৌরভ ছড়ালেন কৃষ্ণা-ঋতুপর্ণারাও। এক মনমুগ্ধকর খেলার মধ্য দিয়ে ভুটানকে গুঁড়িয়ে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল । এর আগে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের নারীরা প্রথম সাফ চ্যাম্পিয়নের ফাইনাল খেলে। এবার নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো দেখা হলো সাফের ফাইনাল।
খেলার শুরু থেকেই গোল দেওয়ার মতো হুঙ্কার নিয়েই খেলছিলো বাংলাদেশের নারীরা। ব্যতিক্রমও হয়নি সেটা। মনিকার থ্রু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোলরক্ষককে ধাঁধা দেখিয়ে নিখুঁত শটে লক্ষ্য ভেদ করে সিরাত জাহান স্বপ্না। আশাহতভাবে পঞ্চম মিনিটের সময় মারিয়া মান্দার শটটি ভুটানি গোলরক্ষকের হাতে ধরা দেয়। তাতে কি, ফের গুটি গুটি পায়ে অসম্ভব সুন্দর খেলার জাদুর মাঝেই গোলরক্ষকের চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দ্বিতীয় গোল করে বসে সাবিনা৷ মাঝমাঠ থেকে নিখুঁত একটি ক্রসে সুর বেঁধে দিয়েছিলেন মারিয়া।
২৪ তম মিনিটের সময় ভালো সুযোগ নষ্ট করলেও ৩০ মিনিটের মাথায় মনোমুগ্ধকর গোলে ম্যাচটি নিজেদের হাতের তালুই নিয়ে নেয় বাংলাদেশের নারীরা। বৃষ্টিভেজা ভারি মাঠে বল পায়ে পায়ে রেখে পাসিং ফুটবল খেলার মাধ্যম ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে ভুটান নারী ফুটবলাররা। বেজে ওঠে মধ্যবিরতীর বাঁশি। দ্বিতীয়ার্ধে মনিকা আর শিউলি আজিমকে তুলে দুটি পরিবর্তন করে। মাঠে আসে শামসুন্নাহার আর নিলুফা ইয়াসমিন নীলা।
বরাবরের মতোও এ অর্ধেও ভুটানের উপর চাপ ফেলে বাংলাদেশ। সানজিদা-সাবিনার দুর্দান্ত মনমিলনে ৫৪তম মিনিটে আবারও গোল করে বসে বাংলাদেশ। ডান দিক হতে আড়াআড়ি বক্সের মাঝে ক্রস বাড়ান সানজিদা। সাবিনা সেটা দেখে-শুনে ঠাণ্ডা মেজাজে নিয়ে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন ঢুকিয়ে দেয় ভুটানিদের জালে । ফের উদযাপনে মেতে যায় বাংলার বাঘিনী বাহিনীরা।
দুই মিনিট পর আবারও গোলের আনন্দে নেচে ওঠে বাংলাদেশ দল। পরবড়তীতে ৮০তম মিনিটের সময় বাংলাদেশের জালে বল জড়ালেও বাজে অফসাইডের বাঁশি দিয়ে দেয় রেফারি। ধীরে ধীরে দ্বিতীয়ার্ধে যোগ করা হয় সময়৷ এই সময়টুকুকে কাজে লাগিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন সাবিনা।
চলতি আসরে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সাবিনা, গোল হলো ৮টি। টানা চার জয়ে ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। এভাবেই টানা চার জয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ফাইনালে জায়গা করে নিলেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।
পত্রিকা একাত্তর /মাহমুদ রাফি