সময়ের আগেই কাজ শেষ হলো খুলনা-বেনাপোল রুটের লম্বা রেলসেতুর

স্টাফ রিপোর্টার

স্টাফ রিপোর্টার

১১ মে, ২০২২, ১ year আগে

সময়ের আগেই  কাজ শেষ হলো খুলনা-বেনাপোল রুটের লম্বা রেলসেতুর

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের খুলনা-বেনাপোল রুটের যশোরের শার্শা উপজেলার আমড়াখালিতে অবস্থিত রেলব্রিজের সংস্কার কাজ শেষ হলো আজ। বুধবার (১১-৫-২০২২)সকাল ১০টা ৩০ থেকে দুপুর ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত মাত্র ২ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট সময়ের মধ্যে ৩০০ জনের অধিক লোকবল নিয়ে রেলসেতুর পাইলিং সহ সেতুটিকে যথা স্থানে স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হয়।

ঈশ্বরদী-বেনাপোল রেলরুটে ১৬৮ ফুট লম্বা ব্রিজটি ৫৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৮০ দিন মেয়াদে রেলসেতুর সংস্কার কাজ শুরু হলেও পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে প্রধান প্রকৌশল বিভাগের দ্রুত তৎপরতায় মাত ৪৮ দিনেই রেলসেতু্র সংস্কার কাজ শেষ করা হয়েছে ।গত (২৩ মার্চ) বুধবার রেলসেতুর পায়ারের ওপর থেকে গার্ডার সরিয়ে সিসিক্রিপে গার্ডার বসিয়ে রেললাইনকে সচল করে ভারী যন্ত্রাংশ গ্যাংকার দিয়ে পরীক্ষা করে ট্রেন চালানো হয়।

বুধবার (২৩ মার্চ) বিকেল পৌনে ৪টায় খুলনা থেকে ছেড়ে আসা বেনাপোলগামী মেইল ট্রেন বেতনা এক্সপ্রেস অস্থায়ী ব্যবস্থাপনার রেললাইন অতিক্রম করানো হয়।সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান বেনাপোল-নাভারুন রেলসেকশনের ৯৩ নম্বর ব্রিজের ৪ পায়ারের পাঁচটি স্প্যানের ২ পিলার মাটিতে বসে যাওয়ায় রেলব্রিজের দুইটি পিলারের বেডব্লকে ফাটল ধরে রেলসেতুটি ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়ে যার কারণে ঝুঁকিতে ট্রেন চলাচল করছিল।

১৮৬২ খ্রিস্টাব্দের ১৫ নভেম্বর কলকাতা থেকে কুষ্টিয়া প্রথম রেলপথ চালুর পর খুলনা-বেনাপোল রুটে রেল চলাচল শুরু হয়। তাছাড়া ১৮৮৪ সালের শেষের দিকে ব্রিজটি নির্মিত করা হয়।এ সময়ে সংস্কার কাজে উপস্থিত ছিলেন- পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) লিয়াকত শরীফ খান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে প্রকোশলী-১ বীরবল মণ্ডল, সেতু প্রকৌশলী নাজিব কায়সার, সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী যশোর, কাজী ওয়ালীউল হক, সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী, রাজবাড়ি গৌতম বিশ্বাস, ঊর্ধ্বতন উপ সহকারী প্রকৌশলী (কার্য) চাঁদ আহমেদ, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সেতু) হাসান আলী, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অনিক এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রবিউল ইসলাম রবি।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ঊর্ধ্বতন উপ সহকারী প্রকৌশলী (পথ) ভেরামারা সাইফুল ইসলাম, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) যশোর, মাহাবুব হাসান, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (কার্য) রাজবাড়ি হাফিজুল রহমান, ঊর্ধ্বতন উপ সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মোবারকগঞ্জ, সুমন কুমার বসু, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ), খুলনা উৎপল মণ্ডল, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাজবাড়ি (পথ) জিহাদ হোসেন।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সেতু) হাসান আলী জানান, ঈশ্বরদী-বেনাপোল রেলরুটের ৯৩ নম্বর ব্রিজটি একটি মেজর ব্রিজ। এই রুটে একটি আন্তদেশীয় দুটি আন্ত:নগর ট্রেনসহ মালবাহী কয়েক জোড়া ট্রেন চলাচল করে। রেলরুটটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী দফতর সংস্কারের উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়। এছাড়াও

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে প্রকোশলী-১ বীরবল মণ্ডল বলেন, বৃটিশ আমলে রেল চালু করার পর ১৮৮৪ সালের দিকে খুলনা-বেনাপোল রেলরুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল।দীর্ঘবছর পর ব্রিটিশ আমলে নির্মিত রেলসেতুর মোট চারটি পিলারের দুইটি পিয়ার মাটিতে ডেবে বসে যায়, এটা রেললাইন পরিদর্শনের সময় নজরে আসে।

বিষয়টি দ্রুত প্রধান প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করে তার নির্দেশে ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেনগুলো চালানো হয়। তারপর টেন্ডারের মাধ্যমে মেরামতের উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়।

এই রেলরুটটি আন্তঃদেশীয় রেলরুট। ১৮০ দিন মেয়াদের কাজ আগামী ৬০ দিনের মধ্যে দ্রুতই কাজ শেষ করা হবে বলে আশা করছি। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) লিয়াকত শরীফ খান বাংলানিউজকে জানান, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হওয়ার পর রেলসেতুটিতে কোন সংস্কার করা হয়নি। ব্রিজের ৪ পিলারের ৫টি স্প্যানের ২ পিলার মাটিতে বসে গিয়ে হেঁলে পড়ছিল।

রেলব্রিজের দুইটি পিলারের বেডব্লকে ফাটল ধরার কারণে ঝুঁকিতে ট্রেন চলাচল করছিল। তাই সংস্কারের উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়েছে।এছাও স্থানীয় বসিন্দা মোঃ কবির সরদার, মোঃ হযরত আলী সহ, মোঃ মিকাইল ইসলাম বলেন, ঘূর্নিঝড় আশানীর প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে সেতুর কাজ সম্পন্ন করায় আমরা সকলে রেলওয়ে বিভাগকে ও ঠিকাদা প্রতিষ্ঠান অনিক এন্টারপ্রাইজকে ধন্যবাদ জানাই। তাদের এমন কাজে আমরা এলাকাবাসী গভির সন্তোষ প্রকাশ করছি।

পত্রিকা একাত্তর /নাজমুল তালুকদার

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news