কুলিয়ারচরে লটকনের বাম্পার ফলন

নিজস্ব প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিনিধি

১৭ জুলাই, ২০২২, ১ year আগে

কুলিয়ারচরে লটকনের বাম্পার ফলন

লটকন চাষে আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলছে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার চাষিদের মধ্যে। বাজারে এ ফলের ব্যাপক চাহিদা এবং দেশি ফলের প্রতি মানুষের আকর্ষণের পাশাপাশি খরচ কম ও অল্প সময়ে লাভজনক হওয়ায় বাড়ছে এ আগ্রহ।

বছর কয়েক আগেও পাশের জেলা নরসিংদীতে লটকনের চাষাবাদ হলেও নরসিংদী জেলাঘেঁষা কুলিয়ারচর উপজেলার চাষিদের মধ্যে এই সুস্বাদু ফলটির আবাদ নিয়ে তেমন কোনো উৎসাহ ছিল না ।কিন্তু ব্যাপক চাহিদা আর ভালো মুনাফা দেখে তিন-চার বছর ধরে এখানকার চাষিরাও শুরু করেছেন এ ফলের আবাদ।

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার আব্দুল্লাহপুর ও সালুয়া ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ দুটি ইউনিয়নজুড়ে প্রতিটি বাড়ির আঙিনাসহ বাগানের গাছ লটকনের হলুদ রঙে রঙিন হয়ে গেছে। পুরো এলাকায় এখন গাছভর্তি লটকন আর লটকন। লটকন চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে এখানে লটকনের আবাদ বেশ ভালো হয়েছে। এ ছাড়া এখানকার লটকন অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেক মিষ্টি হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

উক্ত গ্রামের লটকন চাষি আবদুল খালেক মিয়া জানান, তার এক বিঘা জমির লটকনের বাগানে এবার ভালো ফলন হয়েছে। তিনি এ পর্যন্ত ৪ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করেছেন। এই লটকনের বাগানের টাকায় সংসার চলে।

সিরাজ মিয়া নামে একজন জানান, এ ফলের আবাদে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। তার দেড় বিঘা জমিতে লটকন বাগান। এক বিঘায় ধান চাষ করে ২০ মণের মতো ধান হয়। সেটি বিক্রি করে খরচ বাদে তেমন কিছুই থাকে না। আবার অনেক সময় প্রাকৃতিক অবস্থার কারণে ফসল নষ্ট হলে লোকসানও গুনতে হয়। অন্যদিকে মাত্র দুটি লটকন গাছের ফল বিক্রি করেই বছরে ২০-৩০ হাজার টাকা আয় করা যায়।

প্রতিদিন কুলিয়ারচর বাজারে লটকনের বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে বসছে হাট। আশপাশের এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ও খুচরা ক্রেতা-বিক্রেতার আগমন ঘটে এখানে। এই এলাকার লটকন সুস্বাদু হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তারা এখানকার চাষিদের কাছ থেকে লটকন কিনে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করেন।

চলতি মৌসুমের শুরুতে ৮০ থেকে ৯০ টাকা এবং বর্তমান ভরা মৌসুমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে লটকন বিক্রি করেছেন বলেও জানান বিক্রেতারা। কুলিয়ারচর উপজেলা উপসহকারী কৃষি অফিসার আক্রাম হোসেন বলেন, এখানকার লটকন অনেক মিষ্টি এবং গুণগত মান অনেক ভালো।

লাভজনক ও পরিচর্যা চাষাবাদে কম খরচ হয় বলে এখানে লটকনের আবাদ বেড়েই চলছে। তিনি সহ কৃষি বিভাগ সব সময় চাষিদের পাশে থেকে পরামর্শসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে থাকেন।

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news