গোমস্তাপুরে মৌ-মৌ গন্ধে গাছে গাছে আমের মুকুল! ঝাঁকে-ঝাঁকে মৌমাছি

স্টাফ রিপোর্টার, গোমস্তাপুর

৮ মার্চ, ২০২২, ২ years আগে

গোমস্তাপুরে মৌ-মৌ গন্ধে গাছে গাছে আমের মুকুল! ঝাঁকে-ঝাঁকে মৌমাছি
গাছে গাছে আমের মুকুল!

আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার প্রতিটি গাছে আমের নতুন মুকুলে বাংলার প্রকৃতি এক অপরূপ সাঁজে সেজেছে। আমের মুকুলের মৌ মৌ ঘ্রাণ পাগল করেছে সকলকে। মৌমাছির দল গুণ গুণ শব্দে, মনের আনন্দে আহরণ করছে মধু। মৌমাছির এ গুণ গুণ সুরও কেড়ে নিয়েছে অনেক প্রকৃতি প্রেমীর মনকে। ফাগুন এলেই বাংলার পত্রহরিৎ অরণ্যে নতুন এ পত্র-কুড়ি দেখা যায়। নতুন ফুলে-ফুলে ভরে উঠেছে গাছের শাখা প্রশাখা। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এ মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ।

গোমস্তাপুরে সবুজ প্রকৃতির আমেজ এখন অনেকটা এমনই আবেগের হয়ে উঠেছে। বসন্তের ফাগুন আর আমের মুকুল যেন একই সুতোয় গাঁথা। বছরের নির্দিষ্ট এ সময়জুড়ে তাই চাষী তো বটেই, কমবেশী সব শ্রেণির মানুষেরও দৃষ্টি থাকে সবুজ পাতায় ঢাকা আমগাছের শাখা-প্রশাখায়। সদ্য মুকুল ফোটার এমন দৃশ্য এখন ইট-পাথরের গড়া নগর থেকে শুরু করে বিস্তৃত উপজেলার গ্রামীণ জনপদেও।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন তেলিপাড়া, গোমস্তাপুর ইউনিয়নের নয়াদিয়াড়ী, বালুগ্রাম, রাজারামপুর, পার্বতীপুর ইউনিয়নের রাহোগ্রম, দামকুড়া, আড্ডা, চৌডালা ইউনিয়নের সহ অন্যান্য ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ল্যাংড়া, ফজলী, হিমসাগর ও আশ্বিনা জাতের আমগাছগুলো মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে।

এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় গোমস্তাপুরে বাম্পার ফলনের আশা করছেন আম চাষীরা। মুকুলের সমারোহ দেখে চাষীদের বাড়ির লোকদের মনে-প্রাণে আনন্দ বইছে। অনেকেই মুকুল রক্ষার জন্য কৃষি অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিচ্ছেন। কেউ কেউ গাছের যতেœ বেশ মনোযোগী হয়ে উঠেছেন। আমগাছগুলোতে মুকুলের ব্যাপক সমারোহ দেখে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন এবার আমের ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

বোয়ালিয়া ইউনিয়নের আমচাষি রুহুল আমিন জানান, এবারের আবহাওয়া আমের মুকুলের জন্য বেশ উপযোগী। আমরা এখন সারাদিন গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি। আবহাওয়ার কারণে এ বছর মুকুল এসেছে একটু দেরিতে। ইতিমধ্যে আমরা গাছে একাধিকবার কীটনাশক স্প্রে করেছি, যাতে করে গাছের মুকুলগুলো পোকা ও মহালয়া থেকে রক্ষা পায়।

গোমস্তাপুর ইউনিয়নের নয়াদিয়াড়ী গ্রামের আমচাষি আবুল কালাম জানান, গত বছরের তুলানায় এ বছর আমের মুকুল কিছুটা কম। গত বছর করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের ব্যাপক লোকসানে পড়তে হয়েছিল। আশা করছি আবাহাওয়া ভালো থাকলে গতবারের লোকসান কাটিয়ে উঠব।

গোমস্তাপুর উপজেলার আমচাষি ও আম ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি আফতাব হোসেন লালান বলেন, এবারের আবহাওয়া আমের মুকুলের জন্য বেশ উপযোগী। আশাকরছি আমের বাম্পার ফলন হবে এবং কৃষকরা গতবারের লোকসান কাটিয়ে উঠবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার বলেন, এবার উপজেলায় ৪ হাজার ২'শ ২০ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদন হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৭৬% আমের মুকুল ফুটেছে। আমের ভালো ফলনের জন্য আমরা কৃষকদেরকে সব সময় পরামর্শ ও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। এছাড়া কৃষকদেরকে যেকোন পরামর্শের জন্য উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অথবা কৃষি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। কৃষকদের সুবিধার্থে আমরা একটি হট লাইন নাম্বার চালু করতে যাচ্ছি। আশা করি এ হটলাইন নাম্বার চালু হলে কৃষকরা অনেকাংশে লাভবান হবেন।

পত্রিকাএকাত্তর/ ইয়াহিয়া খান রুবেল

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news