পটুয়াখালী থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে এই ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুরের রস। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে খেজুর রসের মতো আরো অনেক কিছু। খেজুর গাছিদের এখন আর নেই কোন তাড়া! আগের মতো দেখা যায় না কার আগে কে খেজুরের রস সংগ্রহ করতে পারে এমন কোনও প্রতিযোগিতা।এভাবেই দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেজুরের রস।
গ্রামগঞ্জে আগের মতো পাওয়া যায় না খেজুর গাছের দেখা। এক সময়ে শীত মৌসুমের শুরুতেই গ্রামগঞ্জের মানুষ গাছ কাটা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। কে কার আগে খেজুর গাছ কেটে প্রকৃতির সেরা উপহার সমূহের মধ্যে অন্যতম খেজুর রস সংগ্রহ করতে পারে এই প্রতিযোগিতায় নেমে পড়তেন। এরপর সেই রস দিয়ে অল্প সময়ে তৈরি করা হতো পাটালি গুড়, ভীড় মিঠাসহ নানা রকমের মজার মজার খাবার।
তবে সময়ের বিবর্তনে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী সেই খাবার।প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলা সব ধরনের গাছকে মাটিতে শুইয়ে দেয়। এ সময় অনেক খেজুর গাছ মারা যায়। আজ থেকে ১৫-২০ বছর পূর্বেও বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করত গাছিরা। গত ২০ বছর ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণাঞ্চলে খেজুর গাছের সংকট দেখা দেওয়ায় রস পাওয়াই যাচ্ছে না বলা যায়।
ফলে দিনে দিনে খেজুর রস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামগঞ্জের মানুষ।গ্রামগঞ্জের গাছিরা জানান, গ্রামে এখন আগের মতো খেজুর গাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ছিটেফোঁটা দুই- একটা থাকলেও সেই গাছ কাটতে পারছি না। নিজের খেজুর গাছ না থাকায় পরের গাছ কেটে রস বের করতে হচ্ছে। গাছের মালিককে সপ্তাহে তিন দিন রস দিয়ে বাকি চার দিন আমি নিয়ে বাজারে বিক্রি করে যে টাকা পাই তাতে পরিশ্রমের মূল্য হয় না।
মৌসুমি রসের স্বাদ পেতে গাছ কাটা ছাড়তে পারিনি।এদিকে বিভিন্ন চিকিৎসক এ কাছ থেকে জানাযায়, খেজুরের রসে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম ও সোডিয়াম থাকায় খেজুরের রস বা গুড় পেশীকে শক্তিশালী করতে বিশেষ কার্যকরী।এ ছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, যার ঘাটতির কারণ আমাদের অবসন্ন বা ক্লান্তি ভাব আসে। তাই খেজুরের রস বা গুড় সেবনে শারীরিক দুর্বলতা দূর হয়ে কর্মস্পৃহা ফিরে আসে।
পত্রিকা একাত্তর/মারুফ ইসলাম
আপনার মতামত লিখুন :