আওয়ামী লীগ নেতার মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদে ভোলায় সংবাদ সম্মেলন

ভোলা জেলা প্রতিনিধি

২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১ year আগে

আওয়ামী লীগ নেতার মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদে ভোলায় সংবাদ সম্মেলন

ভোলায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, আব্দুল কাদের খানের বক্তব্যে মিথ্যাচার করার প্রতিবাদে, সংবাদ সম্মেলন করেন। জেলা মুক্তি যোদ্ধা সংসদ কমান্ডার দোস্ত মাহমুদ। আজ শুক্রবার ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিযোগ করে দোস্ত মাহমুদ বলেন, আমার বাবা ভোলা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামসুদ্দিন আহমেদ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু বাকশাল প্রতিষ্ঠা করলে, আমার বাবা ভোলা জেলার সেক্রেটারী জেনারেল ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট যে রাতে দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ঘাতক চক্র বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ওই রাতে আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব ও ভোলার অভিভাবক তোফায়েল আহমেদের বাড়িতে ছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর হত্যার খবরে ওই দিন তোফায়েল আহমেদকে ভেঙে পড়তে দেখেন। তিনি ছটফট করতে থাকেন। প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন স্থানে ফোন করেন তোফায়েল আহমেদ। তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে ওই বাড়িতে মেজর জিয়াউর রহমান ডালিম গ্রুপের সেনাবাহিনী দ্বারা নজরবন্দি হয়ে পড়েন। বাড়ি থেকে কেউ বের হতে পারছিল না। বাবার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে না পেরে আমরা আতংকিত হয়ে পড়ি। তোফায়েল আহমেদকে গ্রেফতার করার পর আমার বাবা ওই বাড়ি থেকে মুক্ত হয়ে ভোলায় ফিরে আসেন।

আমার অথচ গেল সপ্তাহে ঢাকার উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে ১৫ আগষ্টের অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তরের সহসভাপতি টাইলস ব্যবসায়ী কাদের খান নিলজ্জের মত মিথ্যাচার করে বক্তব্য দিলেন। তিনি বলেছেন ওই রাতে আমার বাবা শামছুদ্দিন আহমেদ হোটেলে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ঘটনার পর খাদের খান হোটেলে গিয়ে আমার বাবার সঙ্গে দেখা করেন। আমার বাবা তাকে একটি লুঙ্গী ও একটি গামছা দেন। কাদের খানকে রিক্সা চালকের বেশে তোফায়েল আহমেদের বাড়িতে যেতে বলেন। তোফায়েল আহমেদ কি করে তা দেখার জন্য। তার এ বক্তব্য সম্পূর্ন মিথ্যা।

কেননা আমার বাবা হোটেলে ছিলেন না। ওই বক্তব্যে খাদের খান আরো বলেন , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর আগমন হবে ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট তাই আগের দিন রাত ১২ টা পর্যন্ত তিনি ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে কয়েক হাজার ব্যাজ বিতরণ করেছেন। প্রকৃত সত্য হচ্ছে কাদের খান ওই সময় ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী ছিলেন না। ঢাকার ছাত্র রাজনীতিতে তার কোন প্রকার সম্পৃক্ততাও ছিল না। ছাত্রদের মধ্যে ব্যাজ বিতরণ বিষয়টিও তার বানানো গল্প। তিনি ভোলা কলেজের ছাত্র ছিলেন।

ভোলা কলেজে ৭৪-৭৫ সালে তিনি ভিপি পদে, ব্যবসায়ী মোঃ ইউছুফ জিএস পদে নির্বাচন করেন। অথচ ওই দিন ১৫ আগষ্টের শোকগাথা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে কাদের খান অসত্য ও মিথ্যাচার বক্তব্য দিলেন। তিনি যে আদৌ ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন না তার উদাহরণ হচ্ছে ওই সময় যারা তার সঙ্গে ভোলা কলেজে পড়তেন।

এরা হচ্ছেন বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল মমিন টুলু ( যিনি ৭৩-৭৪ সালে ভোলা কলেজের ভিপি ছিলেন ), কাদের প্যানেলের জিএস বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ঢাকার ব্যবসায়ী মোঃ ইউছুফ বীর মুক্তিযোদ্ধা বাসস সাংবাদিক মাহাবুবুর আলম নিরব মোল্লা ( যিনি কাদের - ইউছুফ প্যানেলের সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন ) কাদের খানের সমবয়সী ভোলা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মোশারফ হোসেন। কাদের খানের বাড়ি ভোলার বাংলাবাজারে। তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ঢাকায় গিয়ে ব্যবসা শুরু করেন।

তিনি দুরারোগ্য রোগে অসুস্থ হলে তার চিকিৎসা করার ব্যবস্থাও করেন ভোলার অভিভাবক সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এদিকে হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রসঙ্গ টেনে এনে তার মিথ্যাচার করে বক্তব্য রাখার খবর শুনে ভোলার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ আমরা হতবাক হই। ক্ষোভ জানান জেলার সকল পেশার নুষ। দলের সভানেত্রীর সুদৃষ্টি পেতে খাদের খান এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজের অবস্থানের জাহির করেন বলেও আমরা মনে করছি। তার এ ধনের মিথ্যাচারের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা, কাদের খানের এমন মিথ্যাচার বক্তব্যে তার শাস্তির দাবি করছি। তিনি আমার বাবাকে নিয়ে ও আমাদের অভিভাবক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক তোফায়েল আহমেদকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে না পড়ে, বিশ্ব বিদ্যালয় হলে না থেকে গল্প বানিয়ে বক্তব্য রাখেন। আমরা চাই সঠিক তথ্য তুলে ধরে প্রকৃত তথ্য নিয়ে সঠিক সংবাদ প্রকাশিত হোক। ইতিহাস বিকৃতকারী খাদের খানসহ সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

পত্রিকা একাত্তর /নিয়াজ মাহমুদ

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news