চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরে সরকারি পাহাড় দখল করে বাস্তুহারা কমিটির নামে গড়ে তোলা অবৈধ বসতিতে বিদ্যুৎ-পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদে ওই এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।
প্রায় দুইঘণ্টা ধরে নগরের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগের ছিন্নমূল সড়ক আটকে বিক্ষোভ করে তারা। এসময় ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। তাদের দাবি—তিন দিন ধরে পানি, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, পানি-বিদ্যুতের সংযোগ দিতে হবে এবং উচ্ছেদের আগে পুর্নাবাসন করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকাল ১১ টার দিকে ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ লিংক সড়কে অবস্থান নেয় তারা। পরবর্তীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট বায়েজিদ লিংক রোড ও ফৌজদারহাট-টোল বন্দর সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। ঘটনাস্থলে বিপুল পরিমাণ পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি (তদন্ত) মো. হোসাইন। তিনি প্রতিনিধি কে বলেন, আলীনগরের বাসিন্দারা সড়ক অবরোধ করেছে। তবে আমরা লিংক রোড সড়কটি ব্লক করে দিলে তারা অন্য জায়গায় চলে যায়। এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’
এর আগে, চট্রগ্রাম কারাগার স্থানান্তরসহ সরকারি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরের আলীনগরে সরকারি পাহাড় দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ বসতি ও স্থাপনা মঙ্গলবার থেকে উচ্ছেদ শুরু করে জেলা প্রশাসন।
ইতিমধ্যে অভিযানে পানির লাইন ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। তবে প্রথমদিনেই উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসন যাদের অবৈধ দখলদার হিসেবে চিহ্নিত করেছে তারা উচ্ছেদে বাধা দেয়ার পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের চেষ্টা করেন।
সূত্রে জানা যায়,বিগত দুই দশক আগে নোয়াখালী থেকে এসে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে আস্তানা গাড়েন ইয়াসিন। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দাগী আসামি ও সন্ত্রাসীদের এনে গহীন পাহাড়ে গড়ে তোলে তার নিজস্ব বাহিনী। একের পর এক পাহাড় কেটে প্লট বিক্রি করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যায় দুই ভাই ইয়াসিন ও ফারুক। সম্প্রতি সরকার জঙ্গল সলিমপুরের খাস জমিতে কয়েকটা বৃহৎ কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করে।
সেই অনুযায়ী তথ্যমন্ত্রীসহ কয়েকজন এমপি, সিটি মেয়র ও বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা একাধিকবার ওই এলাকা পরিদর্শন করেন। তাতে ক্ষেপে গিয়ে গত ১৫ জুলাই স্থানীয় সরকার চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মাসুদ কামাল, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মং মারমা ও সীতাকুণ্ড উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম ও সলিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আজিজের গাড়ি বহর থেকে নামিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে বুকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মারধরের অপরাধে ইয়াসিন গ্রেফতার হন সরকারের নির্দেশে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান বর্তমানে সরকার দলীয় স্থানীয় সন্ত্রাসীরা একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্লট বরাদ্দ প্রাপ্তদের স্লিপ জমা নেয়ার নামে ৫/৭ শ টাকা নিচ্ছে, যারা আগে বরাদ্দ পেয়েছেন প্লটের কাজ করতে নির্মান সামগ্রী নিয়ে এরিয়াই প্রবেশ করতে গেলে ৫/৬ হাজার টাকা জমা না দিলে প্রবেশ করতে দেয়া হয়না।
ঐ সব চিন্থিত সন্ত্রাসীদের পাশে পুলিশ কে ও বসে থাকতে দেখাযায়। এই সব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে বা মিডিয়ার সামনে মুখ খুললে ঐ সব ব্যাক্তিদের বাস্তহারা, ছিন্ন মুল এলাকা থেকে বের করে দেয়া হয়।
পত্রিকাএকাত্তর /ইসমাইল ইমন