গত এক সপ্তাহ ধরে দিনাজপুরের খানসামায় পড়ছে শীত। দিনে প্রখর রোদ থাকলেও রাত হওয়ার সাথে সাথে বইছে ঠান্ডা মৃদু বাতাস। ভোর বেলা পড়ছে হালকা কুয়াশা। সকাল বেলা হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। হু হু করে বয়ে যাওয়া ঠান্ডা বাতাসে ভীষণ কষ্টের দিন আসছে এলাকার মানুষ।
যদিও পূর্ন শীত এখনো আসেনি কিন্তু উত্তরবঙ্গে আগাম শীত পরার কারণে কষ্ট পোহাচ্ছে উপজেলাবাসী। সবচাইতে বেশি সমস্যার পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূলরা। গরম পোশাকের অভাবে কষ্টের মধ্যে পড়তে হয় অনেকেই।
শীত নিবারণে উপজেলাবাসী ছুটছেন গরম পোশাকের দোকানে। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে কিনছেন শীতের পোশাক। কিন্তু বিত্তবানরা দামী পোশাক কিনলেও সাধারণ খেটে খাওয়া ব্যক্তিরা গরম কাপড় কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতে। হতদরিদ্রের সাধ্যের মধ্যে মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় এসব ফুটপাতে মিলছে গরমের পোশাক। যে দামের মধ্যে পুরাতন শুয়েটার, মোটা শার্ট, টুপি, মাফলার, চিকন জ্যাকেট ও ফুলহাতা গেঞ্জি।
এটাকে অনেকেই বলে সস্তায় শীতের পোশাক। অনেক ক্রেতারা যদিও খুশি আবার অনেক ক্রেতাদের কেনার সাধ্যের বাইরে। তবে ৫০০ থেকে ৩২০০ টাকার মধ্যে মানসম্মত অনেক ধরণের পোশাক ফুটপাতে বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন বিক্রেতারা।
এসব পোশাক কতটুকু স্বাস্থ্য সম্মত তা অনুমান করলেই বোঝা যায়। কিন্তু নিম্ন আয়ের দিনমজুররা স্বাস্থের বিষয়টি না ভেবেই তা ব্যবহার করছেন অনেকে। এতে করে যেমন দেখা দেয় চর্ম রোগসহ ছড়াতে পারে বিভিন্ন রোগ এমন ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে কারণে এসব পোশাক পরিধানের পূর্বে পানিতে জীবাণুনাশক এন্টিসেফটিক ব্যবহার করে তা ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন চিকিৎসকরা।
খানসামা উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে পাকেরহাট ও কাচিনীয়া বাজারের ফুটপাতের এসব বিক্রেতা ক্রেতার ভিড় জমাতে দাম হাকছেন ‘মাত্র একশত, পঞ্চাশ বলে।’ এ কারণেই শুধু নিম্ন আয়েরই নয়, ফুটপাতের এসব পোষাকের দোকানে ভিড় করছেন কৌতুহলী বিভিন্ন শ্রেণির পথচারীরাও। তবে কেউ কেউ আবার সেখান থেকে বেছে কিনছেন পছন্দের পোশাক।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকালে খানসামা উপজেলা পরিষদের মেইন গেটে ফুটপাত থেকে ক্রয় করা ওমর আলী বলেন, আমি দুটি মোটা শার্ট কিনেছি ২৭৫ টাকায়। আরো কম দামে কিনতে পারলে ভাল হতো।
বিক্রেতা জালেক বলেন, ‘শীতের এসব পোশাক লট ধরে কিনতে হয়। গড় হিসেবে ১৫ থেকে ২০ টাকা লাভ রেখেই বিক্রি করছি। এখন পুরো শীত না আসায় বেচা কেন কম। তবে সারাদিনে যা বিক্রি করি তা দিয়ে পরিবার চলছে। এ কাপড় সাধারণত গরীবরাই বেশী নেন। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার গরম পোশাকের দোকানে ভিড় বেড়েছে।
ছেলেরা মোটা শার্ট, জ্যাকেট ও শুয়েটার কিনছে। তবে অভিজাত দোকানের থেকে ফুটপাতের দোকানে ভিড় বেশি হচ্ছে। সাধ ও সাধ্যের এসব ফুটপাতের দোকান থেকে পোশাক কিনছেন মানুষ। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবার শীতের পোষাকের দাম বেশি বলেও অভিযোগ ক্রেতাদের।
পত্রিকা একাত্তর / আজিজার রহমান