বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন ও ঋণ এবং উন্নয়ন বিষয়ক এশীয় গণআন্দোলনের উদ্যোগে খাদ্য ও জলবায়ু প্রশ্নে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের পূর্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড বদরুল আলম ও পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এএএ ফয়েজ হোসেন, রেডিমেট গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডেরেশনের সভাপতি লাভলী ইয়াসমিন, মাদারল্যান্ড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সালেহা ইসলাম শান্তনা,
বাংলাদেশ ভাসমান নারী শ্রমিক ইউনিয়ন এর সভাপতি হোসনে আরা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক জাহানারা বেগম,’৯০ এর ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতা রাজু আহমেদ,বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ইঞ্জিনিয়ার বাদশা ফয়সাল আহমেদ,বিশিষ্ট সমাজকর্মী খলিলুর রহমান , বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি রেহেনা বেগম, কৃষক নেতা জামাল হোসেন হাওলাদার, টেলি কনজুমার অ্যাসোসিয়শন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব) আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক, শ্রমিক নেতা নাসির উদ্দিন প্রমূখ প্রমুখ।
সভাপতি কমরেড বদরুল আলম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড ১৯ ও রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রাক্কালে বিশ্বব্যপী খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারন করেছে। মুদ্রা স্ফীতি আশংকাজনক। চলমান ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতির অভিঘাতে দেশে দেশে দুর্ভিক্ষের ধ্বনি বাজছে। তিনি বলেন, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ১৬ অক্টোবর বিশ্বখাদ্য দিবস পালন অর্থহীন হয়ে যাচ্ছে যখন ক্ষুধা ও দারিদ্র্য সর্বত্র সাধারণ একটি বাস্তব্তা।
বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় কোভিড উওর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার , জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও যুদ্ধের কারনে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলা একটি জরুরী কাজ। এ কাজগুলো না করলে ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত উন্নয়ন লক্ষ্য প্রহসনে পরিণত হবে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কমরেড আলম জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানী প্রবর্তনের উপর গুরত্ব আরোপ করেন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ খাদ্যের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে খাদ্য ও খাদ্য উৎপাদনের উৎস যথা-ভূমি, সমুদ্রকে মুনাফা তৈরির ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। খাদ্য ও কৃষি মানুষের মানবাধিকার । যেকোন মূল্যে এ অধিকার সংরক্ষণ করতে হবে। তাঁরা বলেন, সম্প্রতি খাদ্য মুল্য বৃদ্ধি জনজীবনে চরম সংকট তৈরী করেছে।
এ সংকট মোকাবেলায় সরকারের উদ্যোগ খুব বেশি সন্তোষজনক নয়। তার উপর সরকার দফায় দফায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধি করে একের পর এক সংকট বাড়িয়ে তুলছে। বিদ্যুৎ ও তেলের দাম বাড়ানো সত্ত্বেও ঘন ঘন ও দীর্ঘমেয়াদী লোডশেডিং জনজীবনে নাভিশ্বাস এনেছে। বিদ্যুতের অভাবে কৃষি ও শিল্প উভয় ক্ষেত্রই ক্ষতিগ্রস্ত। পরবর্তী বছর একটি কঠিন দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির সম্ভাবনা প্রতীয়মান হচ্ছে।
সমাবেশ হতে নিম্নোক্ত দাবীসমুহ তুলে ধরা হয়ঃ ১। খাদ্য, ভুমি ও পানির উপর অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখ ২। মৎস্য ও সমুদ্র রক্ষা কর ৩। ভুমির ব্যবহার হতে হবে খাদ্য উৎপাদনের জন্য, বিলাসিতার জন্য নয় ৪। জলবায়ু সংবেদনশীল খাদ্য ব্যবস্থা চাই এখনই ৫। জলবায়ু ও খাদ্য ন্যয়বিচার এখনই ৬। অভিযোজনের জন্য সরকারী অর্থ ও কর্মসূচী গ্রহন কর ৭। জনগণ ও সমাজের জন্য জলবায়ু সংবেদিনশীলতা চাই।
বার্তাপ্রেরক –
জায়েদ ইকবাল খান
সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন
পত্রিকা একাত্তর