ঢাকা - চরফ্যাশন (বেতুয়া) নৌপথে নাব্যতা-সংকট

নিজস্ব প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিনিধি

১৯ মে, ২০২২, ১ year আগে

ঢাকা - চরফ্যাশন (বেতুয়া) নৌপথে নাব্যতা-সংকট

ভোলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে নদীর বুকে অসংখ্য ডুবোচর জেগে উঠেছে। ফলে লঞ্চ ও ফেরিসহ নৌযান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। নাব্যতা সংকটের কারণে ভোলা-ঢাকা, ঢাকা-চরফ্যাশন(বেতুয়া) ও ভোলা-লক্ষ্মীপুরসহ অন্তত ২০ টি রুটে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে নৌযান।

এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ভোলার ২০লাখ মানুষ। অবশ্য কিছু পয়েন্টে ডেজিং করা হলেও সঠিক ভাবে সেই ড্রেজিং না হওয়ায় বেশিরভাগ রুটের বেহাল দশা। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে লঞ্চ মালিকদের। তবে নাব্যতা রোধে বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে ডেজিং করা হচ্ছে বলে জানায়।

ভোলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের একমাত্র সহজ মাধ্যম নৌপথ। এখান থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী লঞ্চে করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু শীতের শুরুতেই নদীতে অসংখ্য ডুবোচর জেগে ওঠায় নৌযান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

নির্ধারিত সময়ে গন্তব্য যেতে পারছে না নৌযানগুলো। লঞ্চের সাধারণ যাত্রীরা জানায়, ডুবোচরের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই জোয়ার ভাটার ওপর নির্ভর করে চলতে হচ্ছে নৌযানগুলোকে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে এ অঞ্চলের নৌপথ। এ অবস্থায় নৌপথের রক্ষণাবেক্ষন ও সঠিক জায়গায় ড্রেজিংয়ের দাবি তোলেন ভুক্তভোগীরা।

ভোলার ফারহান নেভিগেশন কোম্পানী লিমিটেড এর ফারহান-৬ লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার ও ঢাকা-ভোলা রুট কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃকামরুল হাসান জানায়,ঢাকা-চরফ্যাশন যাতায়তের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে নদীপথ। এই রুটে ৬ টি লঞ্চ চলাচল করে আসছে। কিন্তুু নদী পথে নাব্যতা সংকটের কারনে প্রায় আটকে যাচ্ছে লঞ্চ।

নির্ধারিত সময় লঞ্চ ছাড়লেও নাব্যতা সংকটের কারনে সি-ট্রাক ঘাট হতে তজুমদ্দিন থেকে বেড় হতে সময় লেগে যাচ্ছে কয়েক ঘন্টা। মঙ্গলসিকদার ঘাট থেকে তজুমুদ্দিন ঘাট থেকে হাতিয়ার ম্যানগ্রোভ বনের চ্যানেল পার হতে হয়,একদিকে যেমন বনের ক্ষতি, আরেক দিকে সময়ের অপচয়, নদীপথে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে নাব্যতা সংকট।

শুধু ভোলা নয় জেলার ২০ রুটের একই সমস্যা এখন নাব্যতা সংকট। ফলে লঞ্চ গুলো নিয়মিত চলাচল করতে বিঘ্ন হচ্ছে।ফলে লঞ্চ মালিকরা যেমন আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যাত্রীরাও তেমনি হয়রানি হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীদের সাথে লঞ্চের স্টাফদের মারামারি হচ্ছে।

তাই কৃর্তপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলতে চাই ঢাকা-চরফ্যাশন রুটটি সচল রাখতে হলে সঠিক ভাবে সঠিক জায়গার ড্রেজিং করতে হবে। তাহলেই এই রুটটি সচল থাকবে। তা নাহলে যে কোন সময় এই রুটটি বন্ধ হয়ে যাবে।

একই সঙ্গে বয়া ও মার্কার বাতি না থাকায় শীতে ঘন কুয়াশার সময়ে লঞ্চ চালাতে বিপাকে পড়তে হয়। তাই বিভিন্ন পয়েন্টে বয়া বাতি স্থাপনের দাবী লঞ্চের মাষ্টারদের।

এছাড়াও নৌ পথের অনেক পয়েন্টেই নেই বয়া বাতি। অন্যদিকে নদীতে নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এ কারণে গন্তব্য যেতে অতিরিক্ত সময় লাগছে। তাই এ নৌপথে ড্রেজিং জরুরি হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ভোলা মেঘনা নদীর মাঝখানে বেশ কিছু ডুবো চর পড়ছে ঐ চর থেকে বালু উত্তলন করে অন্যত্র সরিয়ে নিতে সক্ষম হলে পানি প্রবাহ সঠিক ভাবে ধাবিত হতে থাকবে। ফলশ্রতিতে নদীর পাড়ে যে বাঁধ নির্মাণ করা হবে সেটা ভাংগনের ঝুঁকি বহুলাংশে কমে যাবে।

বর্ষাকাল হলেও সংকটটা হচ্ছে খুব বড় নদীর। যেটা অনেক চ্যানেলে প্রবাহিত হয় এবং তার কোনো কোনো চ্যানেলে প্রাকৃতিকভাবেই সেডিমেন্ট (পলি) লোড বেশি যায় এবং সেগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা থেকে ভোলা ও চরফ্যাশন(বেতুয়া) যাওয়ার রুট কিছু দিন পর পর কিছু কিছু জায়গায় আটকে যায়।

তবে এখানকার সঙ্গে নদী শাসন কিছুটা যোগ না করলেও এই ঘটনাটা ঘটতেই থাকবে বলে জানান এলাকাবাসিপ্রতিবছর এ শুষ্ক মৌসুমে নদীর তলদেশে পলিজমে ডুবচরের সৃষ্টি হচ্ছে।এর বিপরতী কমবেশি ড্রেজিং করছে বিআইডব্লিউটিএ। তবে হচ্ছেনা এর কোন স্থায়ী সমাধান।

নৌপথের দ্রুত ড্রেজিং করে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা। উল্লেখ্য, ভোলার ২০ রুটে প্রতিদিন ঢাকা সহ বিভিন্ন রুটে অর্ধশতাধিক লঞ্চ চলাচল করছে।একটা দীর্ঘমেয়াদি মডেল করে কাজ করতে হবে। ড্রেজিং লাগবেই। কিন্তু ড্রেজিং কীভাবে দীর্ঘস্থায়ী হয়, সেটা দেখতে হবে।

পত্রিকা একাত্তর /মোঃ সোহাগ হাওলাদার

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news