চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের শশুর বাড়ীর লোকজনের বিরুদ্ধে মৃত রমজান আলীর স্ত্রীর উপর নির্যাতন ও তার দুই কন্যার ভরনপোষনের ক্ষতিপুরনের ১২ লক্ষ টাকা আত্বসাৎ এর চেষ্টা অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, সাতকানিয়া উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মমতাজ মিয়ার কন্যা ফারজানা মমতাজ এর সাথে ২০১৬ সালে কেঁওচিয়া ইউনিয়নের মৃত নজির আহমদের পুত্র সৌদি প্রবাসী মৃত রমজান আলী সাথে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের সংসারে ২টি কন্যা সন্তান রয়েছে। শশুরবাড়ীর পরিবার যৌথ হওয়ায় বিদেশ থেকে সংসার চালানোর জন্য যে টাকাগুলো দেওয়া হতো আপন বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম এর মাধ্যমে আদান প্রদান করা হতো।
বিশ্বব্যাপী করোনার দুর্যোগের সময় ২০২০ সালে স্বামী সৌদি প্রবাসে থাকা কালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু ভাইয়ের মৃত্যুর পর বড়ভাই সিরাজুল ইসলামসহ তার স্ত্রী, ননদ,শাশুড়ী একত্রিত হয়ে অসহায়ের সম্পদ আর্তসাৎ করার পায়তারা শুরু করে এবং মৃত রমজান আলীর স্ত্রীকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে ২ কন্যাকে সহ সু-কৌশলে স্বামীর বাড়ী থেকে তাঁড়িয়ে দেয়।
এই ব্যাপারে রমজান আলীর স্ত্রী ফারজানা মমতাজ বাদী হয়ে সিরাজুল ইসলাম, রাশেদা আক্তার ও জামাল উদ্দিনকে বিবাদী করে সাতকানিয় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,শশুরবাড়ীতে থাকাকালীন সময়ে ফারজানা মমতাজ তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সে নিজের বাপের বাড়ী ধর্মপুরে চলে আসেন। তবে থানায় অভিযোগ দায়ের করার আগে কেঁওচিয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনির আহমদ বরাবরে অভিযোগ দিয়ে তিনি এক শালিসের মাধ্যমে মৃত রমজান আলীর স্ত্রী ও তার ২কন্যাকে ভরনপোষন বাবদ ১২ লক্ষ টাকা দিবে বলে একশত টাকা মূল্যের স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ১ বছরের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা চুড়ান্ত করে দেন এবং প্রতিমাসে তাদের খরচ বাবদ ৯ হাজার টাকা দেয়ার কথা হয়।
কিন্তু তা মৃত রমজান আলীর পরিবার দীর্ঘ ১ বছর পার হয়ে গেলেও তিনি বার বার সময় দেওয়ার পরও তারা কোন ধরনের ক্ষতিপূরণ দেয়নি বরং বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি প্রদান করতে থাকে। বর্তমানে কেঁওচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওসমান আলীকে বিষয়টি লিখিত অভিযোগ করা হলে তিনি উভয়পক্ষকে ডেকে সমঝোতার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পরে সাতকানিয়া থানায় আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন ভুক্তভোগী পরিবারকে।
এ ব্যপারে সাতকানিয়া থানায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও ভুক্তভোগী পরিবার এখনো দাবীকৃত ক্ষতিপূরনে টাকা না পেয়ে দুই কন্যাকে নিয়ে বাপের বাড়ীতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানা যায়।
ইতিমধ্যে একটি অনলাইন মিডিয়ায় অসহায় পরিবারটির কাছ থেকে স্বাক্ষাৎকার প্রচার করা হলে সিরাজুল ইসলামের পরিবারের টনক নড়ে। এ বিষয়টি সুরাহা করার জন্য রমজানের স্ত্রীকে মুঠোফোনে ক্ষতিপূরন টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আইনী আশ্রয় না নিয়ে কোথায় কোন অভিযোগ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
পরে মামা শ্বাশুড় বেলালের মাধ্যমে বার বার ফোন করলেও বিবাদীরা ক্ষতিপূরন না দিয়ে কালক্ষেপন করে যাচ্ছেন বলে জানা যায়। এই বিষয়ে ভোক্তভুক্তি পরিবার প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
পত্রিকা একাত্তর/ ইসমাইল ইমন