৮ বছরের শিশু হত্যা মামলার প্রধান আসামী আটক


নিজস্ব প্রতিনিধি প্রকাশের সময় : ২০/০৫/২০২৩, ৯:৪৮ অপরাহ্ণ /
৮ বছরের শিশু হত্যা মামলার প্রধান আসামী আটক

ইয়ামিন নামের ৮ বছরের শিশু হত্যা মামলার প্রধান আসামী কে আটক করেছে র‌্যাব-১। নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে শিশু ইয়ামিন কে শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলার প্রধান আসামী ফরিদ’কে রাজধানীর নর্দ্দা (গুলশান) হতে গ্রেফতার করে মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করেছে র‌্যাব-১ ।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১৬ মে) আনুমানিক সকাল সাড়ে ১০ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার মধুখালী বালুর মাঠ থেকে অজ্ঞাতনামা একটি শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। পরবর্তীতে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ শিশুটির লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসাপাতালে প্রেরণ করে। ইতিমধ্যে শিশুটির লাশের ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হলে ওই দিন আনুমানিক বিকাল ৩টার সময় শিশুর পিতা ফিরোজ আলম মাসুম সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি দেখে তার ছেলে ইয়ামিন (৮) এর মৃতদেহ সনাক্ত করে। নিহত ইয়ামিনের পিতা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার নম্বর-৫৩ তারিখ ১৭/০৫/২০২৩, ধারা-৩০২/ ২০১/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। এই নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয়। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১ তাৎক্ষনিকভাবে এই হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনা উম্মোচনের জন্য ছায়া তদন্ত  শুরু করে এবং আসামী গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

ঘটনাসূত্রে জানা যায়, গত ০৩/১১/ ২০২১ ইং তারিখে ইয়ামিন এর মা আমেনা বেগম পিতা ফিরোজ আলম মাসুম কে ডিভোর্স প্রদান করে। পরে আমেনা বেগম ইয়ামিন কে নিয়ে ধৃত আসামী ফরিদ (৪০) এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসার করতে থাকে। বিবাহের পর তাদের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে  প্রায় সময় ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। এক পর্যায়ে আমেনা বেগম ফরিদকে ডিভোর্স প্রদান করে। এতে ফরিদ ক্ষিপ্ত হয়ে আমেনা কে শায়েস্তা করার জন্য শিশুটিকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।

গত সোমবার (১৫ মে) সকাল আনুমানিক ১১ টায়  রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে শিশু ইয়ামিন নিখোঁজ হয়। তার মা বিভিন্ন জায়গায় অনেক খোঁজাখুজি করে না পেয়ে ডিএমপি, বাড্ডা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন, যার জিডি নাম্বার-১১৩০ তারিখ ১৫/০৫/২০২৩ ইং। এরই ধারাবাহিকতায় (১৯ মে)  বিকাল ৪টার সময় র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন করে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিএমপি ঢাকা’র গুলশান থানাধীন নর্দ্দা বাজার গুলশান-২ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী ফরিদ কে গ্রেফতার করে । আটক ফরিদ লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানার সারপুকুর গ্রামের মজনু হকের ছেলে। বর্তমানে সে রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকার আনন্দ নগর ঝিলপাড় কলোনী তে থাকতেন এবং সেখান থেকেই তাকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইয়ামিন কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে মর্মে স্বীকার করেছে।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, সে গত ১৫ মে সকাল অনুমান ১১ টার সময় মেরুল বাড্ডা এলাকা হতে একটি সিএনজিযোগে ইয়ামিন কে নিয়ে বিভিন্ন জায়গা বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বেড়ানো শেষে ওই দিন আনুমানিক সন্ধা ৭ টায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ইয়ামিন কে রুপগঞ্জ থানাধীন মধুখালী বালুর মাঠে নিয়ে যায় এবং তার কাছে থাকা কাপড়ের টুকরা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যায় মর্মে স্বীকার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামী ফরিদ কে আইনি ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

পত্রিকা একাত্তর/ রবিউল ইসলাম