অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে ২৫ দিনের মাঝে স্বামীর মৃত্যু

বাগেরহাটের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে মরমান্তিক অবস্থায় মনিরুজ্জামান মনি ওরফে আলিরাজ (১৭) নামে এক কিশোর ও তার স্ত্রী মিশকাতুল (১৮) কে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে তাদের বাগেরহাটের ২৫০ সজ্জা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মিকাতুল এর স্বামী মনিরুজ্জামান মনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।

মনিরুজ্জামান মনির এর স্ত্রী মিশকাতুলকে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিকেলে বাগেরহাট শহরের হরিনখানা এলাকার মো. নেকবার মল্লিকের টিনশেড ভাড়াবাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনার পরে মনিরুজ্জামান মনির বাবা দাবি করছেন, স্ত্রী মিশকাতুল ও তার লোকজন মনিরুজ্জামানকে হত্যা করেছে। নিহত মনিরুজ্জামান যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার মাদারডাঙ্গা গ্রামের মো. আব্দুল হালিমের ছেলে।

সে পাবনার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। আর তার স্ত্রী মিশকাতুল বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বরশিবাওয়া গ্রামের মনিরুজ্জামান মীরের মেয়ে। তিনি বাগেরহাটের একটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্কের পরিনতি হিসেবে গত ২৫ এপ্রিল তারা বয়স গোপন করে বিয়ে করেন। গেল ৭-৮ দিন ধরে হরিনখানা এলাকার মো. নেকবার মল্লিকের টিনশেড বাড়িতে তারা ভাড়া ওঠেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের পরিবার এই বিয়ে মেনে না নেওয়ায় বুধবার (১৭ মে) গভীর রাতে মিশকাতুল ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

মনিরুজ্জামানের মৃত্যু নিয়ে তার স্ত্রী মিশকাতুল বলেন, প্রেমের সম্পর্ক থাকায় আমরা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করি। গত রাতে আমাদের মধ্যে ঝগড়া হলে মনিরুজ্জামান বিয়ের কাবিনের ৬ লাখ টাকা দিয়ে চলে যাওয়ার কথা বলে। তখন পরে আমি ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কেটেছি এবং ২০টি ঘুমের ওষুধ খেয়েছি।

নিহত মনিরুজ্জামান মনি ওরফে আলীরাজের বাবা মো. আব্দুল হালিম বলেন, আমার ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে গোপনে মিশকাতুল বিয়ে করে। বিষয়টি আমাদের অনেক পরে জানায়। আমরা এই বিয়ে মেনে নেওয়ার কথাও বলেছিলাম। কিন্তু ছেলেকে আমাদের কাছে যেতে দেওয়া হতো না। আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। মিশকাতুল ও তার পরিবারের লোকজন আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।

বাগেরহাট সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ হাসান বলেন, মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য মরদেহ বাগেরহাট জেলা হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এছাড়া মিশকাতুলকে পুলিশ প্রহরায় রেখে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পত্রিকা একাত্তর/ শামীম হাসান