বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২০২৩ সেশনের ভর্তি পরীক্ষায় ইউনিট প্রধান হিসেবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনদের দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও। ববি ভিসি প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনের স্বেচ্ছাচারিতায় ডিনদের সে দায়িত্ব না দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট ৩ অনুষদের ডিনরা ঢাবি ভর্তিপরীক্ষার সকল কার্যক্রম বর্জন করেছেন।
ভিসি তার আজ্ঞাবহ এক জুনিয়র শিক্ষক এবং ডিনের দায়িত্বে না থাকা অন্য এক শিক্ষক কে ইউনিট প্রধান করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষা পরিচালনা করছেন। যা ডিনদের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর এবং লজ্জার বলছেন ডিনরা।
ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি সভায় ডিনরা এই অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুললে (ববি) ভিসি তাদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এভাবেই প্রতিটি ক্ষেত্রে দিনের পর দিন ভিসি তার একনায়কতান্ত্রিক আচরণ প্রতিষ্ঠা করে আসছেন বলে জানা যায়৷ তাই ভিসির এই হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদস্বরূপ তিন অনুষদের ডিন মহোদয়রা ভর্তি পরীক্ষার সমস্ত কার্যক্রম থেকে নিজেদেরকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
গত ৬ এবং ১২ মে মানবিক ও বিজ্ঞান অনুষদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আজ, ১৩ মে অনুষ্ঠিত হবে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের পরীক্ষা। ঢাকার বাইরে যে সকল কেন্দ্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, সে সকল কেন্দ্রে ইউনিট প্রধান হিসেবে সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনরা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ সকল দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্টো নজির স্থাপন করা হয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে একজন ডিন বলেন, ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপরীক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে কাজ করেছে সেটা ডিন হিসেবে আমার কাছে অপমানজনক। ভর্তি পরীক্ষা একাডেমিক কার্যক্রমের অংশ। ডিনরা হলেন একাডেমিক প্রধান সেক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষার কোন বিষয়ে ডিনদের নিয়ে আলোচনা করা উচিত। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় খুবি, চবি, ইবি, শাবিপ্রবি সবজায়গায় ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্ব ডিনদেরকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে আমাদের সাথে কোনরকম আলোচনা না করেই অন্যদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তাই আমরা তিনজন ডিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রমের সবকিছু থেকে বিরত থেকেছি।”
ভিসির অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে অধিকাংশ শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা এক বাক্যে বলেন, ভিসি অনেক চতুর লোক, মুখে বলেন এক, কাজে পুরোটাই উল্টো। তারা আরো বলেন, বর্তমান ভিসি দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পেলে সেটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বরিশালবাসীর জন্য। কারণ, এই চার বছরে উনি বিশ্ববিদ্যালয়কে কিছুই দিতে পারেনি। বাইরের লোকদের তোষামোদী ও তেলবাজি করে তিনি সময় পার করেছেন। মোটকথা, ভিসির উপর সবাই খুবই বিরক্ত।
এ বিষয়ে জানার জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসাভ করেননি৷
পত্রিকা একাত্তর/ মামুন
আপনার মতামত লিখুন :