গত প্রায় এক যুগ ধরে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকুরি করেন তিনি। বাড়িতে রয়েছে টিন ও আধাপাকা বসত ঘর ছাড়াও কয়েক একর সম্পত্তি। চলতি মওসুমে পেয়েছেন কয়েকশ মন ধান। এরপরও তাঁর স্ত্রীর নামে হয়েছে দুঃস্থনারীদের জন্য বরাদ্ধের ভিজিডি(সাবেক নাম) বর্তমানে ভিজিডি উবি (ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট)কার্ড।
এমন ঘটনা ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নের ভালুকাপুর গ্রামে। তাছাড়াও মোট কার্ডের বেশীরভাগই সচ্ছল ও ধনী ব্যক্তি ছাড়াও চেয়ারম্যান মেম্বারদের আত্মীয়স্বজন ও পছন্দের নামে হয়েছে।
গৌরীপুর উপজেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট উপকারভোগির সংখ্যা ৩ হাজার ২৬ জন। তারমধ্যে সহনাটি ইউনিয়নে রয়েছে ৩শ ১৮জন। অভিযোগ রয়েছে মোট কার্ডের বেশীর ভাগই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের আত্মীয়স্বজন ও পছন্দের ব্যক্তিদের নামে। তাছাড়া দলীয় ৪৫ ভাগ তো রয়েছেই। ওইসব কার্ডের তদারকি স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছে। এ অবস্থায় এলাকার অনেক দুঃস্থ ও অসহায় নারীরা সরকারে দেয়া বিনা পয়সায় প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্ধ থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১নং ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি নামের অনুসন্ধান করে দেখা যায় ভালুকাপুর গ্রামের জনৈক লাটে আহম্মেদের ছেলে আলমগীর কবির ওরফে রোমান। তিনি গত প্রায় ১২ বছর ধরে চাকুরি করছেন পুলিশের কনস্টেবল পদে। বর্তমানে সিলেটের একটি থানায় কর্মরত রয়েছেন। তাঁর স্ত্রী কল্পনা আক্তারও স্বামীর সাথেই থাকেন। তাঁর নামে রয়েছে একটি কার্ড। বাড়িতে গিয়ে তাঁদের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে কনস্টেবলের ছোট ভাই জহিরুল ইসলাম রানা কার্ড হয়েছে সত্যতা স্বীকার করে বলেন,এটা কেমনে অইলো আমরা কেউ বলতে পারি না। তবে খুব দ্রæতই কার্ড কাইট্টা পালবাম। চেয়ারম্যন ভাইয়ের ( সর্ম্পকে চাচাতো ভাই) ইচ্ছায় একটা কার্ড আমরার পরিবাররে দিছিন।
জানতে চাইলে কার্ডধারী কল্পনা আক্তারের স্বামী কনস্টেবল আলমগীর কবির রোমান বলেন, ভাইরে আমরাই তো দুঃস্থ অসহায়দের দেই। এখন আমরার কার্ডের কি দরকার। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানিয়ে বাতিল করার রব্যবস্থা করা হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন,আমার বরাদ্ধের ১০টি কার্ডের মধ্যে এই নাম নেই। কে করেছেন তা আমার জানা নেই। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানস সালাহ উদ্দিন কাদের রুবেলকে একা:িধকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এ ছাড়াও ওই এলাকায় চিহ্নিত অনেক সচ্ছল ব্যক্তির স্ত্রীদের নামে কার্ড হয়েছে তার মধ্যে খুররম আলীর স্ত্রী পাপিয়া সুলাতানা, আব্দুল্লাহ’র স্ত্রী কোহিনুর আক্তার, আজিজুলের স্ত্রী হোসনে আরা, আব্দুর রহিমের স্ত্রী মরিয়ম, নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার, ইমরান হাসানের স্ত্রী মোছাম্মৎ আশিক নুর, হাসিম উদ্দিনের স্ত্রী শামীমা আক্তার। তাঁদের সকল্ইে এলাকায় ধনী হিসাবে ব্যাপক পরিচিত। তাঁদের রয়েছে কয়েক একর করে ফসলি জমি ছাড়াও নিজেদের বিশাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।রয়েছে পাকা-আধাপাকা বসত ঘর।চলতি বোরো মওসুমে অনেকেই শতশত মন ধান পাবেন। কিন্তু নামের তালিকার পাশেই লেখা রয়েছে তাঁরা সকলেই দিনমজুর। অথচ প্রধানমন্ত্রী ভিজিডি কর্মসূচির মাধ্যমে দেশে অসচ্ছল মহিলাদের সচ্ছল করার লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও সদস্যরা নির্দেশনা উপক্ষো করে অসচ্ছল মহিলার তালিকায় সুবিধা লাভের বিনিময়ে সচ্ছল মহিলাদের অর্ন্তুরভুক্ত করেন। এতে অসচ্ছল মহিলাসহ জনসাধারনের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তুষ্ঠি সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৌরীপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেহেনা আক্তার খাতুন জানান, তিনিও অনেক ইউনিয়নের এ রকম অসঙ্গতির খবর পেয়েছেন।হাতে নাতে ধরতে পারলে তাদের কার্ড আটকে দেওয়া হচ্ছে। সহনাটি ইউনিয়নের এ রকম সত্যতা পাওয়া গেলে ওই সব কার্ড বাতিল করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৌরীপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেহেনা আক্তার খাতুন জানান, তিনিও অনেক ইউনিয়নের এ রকম অসঙ্গতির খবর পেয়েছেন।হাতে নাতে ধরতে পারলে তাদের কার্ড আটকে দেওয়া হচ্ছে। সহনাটি ইউনিয়নের এ রকম সত্যতা পাওয়া গেলে ওই সব কার্ড বাতিল করা হবে।
পত্রিকা একাত্তর/ হুময়ু
আপনার মতামত লিখুন :