৭ বছর পর শুরু হচ্ছে নড়াইলবাসীর প্রত্যাশিত কলেজের কাজ


জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল প্রকাশের সময় : ২৪/০৪/২০২৩, ৯:৪৯ অপরাহ্ণ /
৭ বছর পর শুরু হচ্ছে নড়াইলবাসীর প্রত্যাশিত কলেজের কাজ

নড়াইলে ৭ বছর পর ৩৬৫ কোটি টাকা প্রকল্পের প্রকৌশলী হাতেম আলী ইজ্ঞিনিয়ারিং কলেজটির নির্মান কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। ২০১৫-২০১৬ সালে পাশ হওয়া এ প্রকল্পের কাজ ভূমিসহ নানাবিধ জটিলতায় শুরু না হওয়ায় নড়াইলের সচেতন মহল হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নির্মানের জন্য ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে একনেকে ৩শ ৬৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। সে সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নড়াইলের কৃতি সন্তান প্রকৌশলী খান হাতেম আলীর নামে কলেজটির নামকরণ করেন। অনুমোদনের পর জেলা প্রশাসন কলেজটির জন্য নড়াইল-যশোর সড়ক সংলগ্ন সদরের আউড়িয়া ইউনিয়নের মালিবাগ এলাকায় সীমাখালী ও বোড়াবাদুরিয়া মৌজায় ৮একর জমি নির্ধারণ করা হয়।

এখানে নির্মাণ কাজের মধ্যে রয়েছে ভূমি অধিগ্রহন, প্রশাসনিক ও একাডেমিক অবকাঠামো, ক্লাস রুম, অফিস ও হোস্টেলের আসবাবপত্র, ল্যাবরেটরি, মসজিদ, প্রিন্সিপ্যাল ও ষ্টাফ কোয়ার্র্টার, অভ্যন্তরীন রাস্তা,সিমানা প্রাচীর ইত্যাদি।

শুরুতে সিভিল, ম্যাকানিক্যাল, ইলেকট্রিক এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিয়ারিং এবং সফট্ওয়ার ইঞ্জিয়ারিং এই ৪টি বিভাগ নিয়ে কলেজটি চালু কবার কথা। তবে ৪১জন জমির মালিক জমির মূল্য পূনঃনির্ধারণের দাবি তুলে এখানে কলেজ নির্মানের বিরোধিতা শুরু করলে কাজটি পিছিয়ে যায়।

বোড়াবাদুরিয়া ও সীমাখালী মৌজার ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম বলেন, এখানে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হবে সেটি আমাদের স্বপ্ন পূরণ। সেজন্য আমরা সবাই অত্যন্ত খুশি। কিন্তু সরকারিভাবে শতক প্রতি মাত্র ৫৬ হাজার ৪শ টাকা নির্ধরণ করা হলেও বর্তমানে এখানে প্রতি শতকের মূল্য প্রায় ৬লাখ টাকা। আমরা জমির মূল্য পূনঃনির্ধরণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দরখাস্ত করেছিলাম। আমাদের জমির মূল্য পূনঃনির্ধারণ যদি নাও হয় তবুও আমাদের সেটা জানিয়ে দেওয়া হোক। এখন আমরা কলেজটির দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।

নড়াইল নাগরিক উন্নয়ন কমিটির নেতা, প্রাক্তন এমপি অ্যাডঃ সাঈফ হাফিজুর রহমান খোকন বলেন, তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী নড়াইলের কৃতি সন্তান প্রকৌশলী হাতেম আলী খানের নামে এ কলেজটির দ্রুত বাস্তবায়ন দেখতে চাই। এতোদিন কলেজটির কাজ শুরু না হওয়াতে নড়াইলসহ দেশের অগনিত শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

নড়াইল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অরুনাভ রায় বলেন, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের মধ্যে এ কলেজটি বাস্তবায়নের কথা ছিল।

পরে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ঢাকাস্থ প্রধান কার্যালয় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রকল্পের মেয়াদ ৩বছর বাড়ানো হয়েছে। আমাদের দিক থেকে আর কোনো বাঁধা নেই। কলেজের জন্য প্রথম অবস্থায় প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০তলা বিশিষ্ট একটি প্রশাসনিক ভবন নির্মানে দরপত্র আহবানের অনুমতি পাওয়া গেছে। অনেক বড়ো টেন্ডার প্রসেসিং-এর জন্য প্রায় ৪ মাস সময় সময় প্রয়োজন। তারপর টেন্ডার আহবান ও কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে একাডেমিক ভবন, আসবাবপত্র, সীমানা প্রাচীরসহ অন্যান্য অবকাঠামো পর্যায়ক্রমে টেন্ডার দেওয়া হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শ^াতশী শীল বলেন,২০২০ সালের৬ আগস্ট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধিগ্রহনকৃত জমির কাগজপত্র ও জমি হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে জমির মালিকরা এখনও তাদের জমির ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেননি। আবেদন করলে এক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেওয়া হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ফকরুল হাসান বলেন, সংশ্লিষ্ট আউড়িয়া ইউনিয়নের সমশ্রেণি ও সম সুবিধাযুক্ত সকল বিক্রিত জমির বিক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের আন্তরিকতা থাকা সত্ত্বেও মূল্য পূনঃনির্ধারনের কোনো সুযোগ নেই। জমি অধিগ্রহনের জন্য ৪ কোটি ৬৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

পত্রিকা একাত্তর/ হাফিজুল নিলু