জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় দুই ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে বসত-বাড়িতে ঢুকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও তাঁর মা বোনকে মারধর ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১৫) এপ্রিল) রাত নয়টার দিকে উপজেলার দেওলাবাড়ী সর্দারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত মাদ্রাসা ছাত্রী মোছা, ইয়াসমিন (১৭) তিনি ও তাঁর মা নার্গিস বেগম (৪৫) মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি রয়েছেন।
এ ঘটনায় উপজেলার নাংলা ইউনিয়নের দেওলাবাড়ী এলাকার আকবরের ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হুমায়ুন (৩০) ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মারফ (১৯) মোঃ শুক্কুর আলীর ছেলে মামুন (৪০) আবুল কাশেমের ছেলে সিফাত (২০) সহ অজ্ঞাত ৮ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা মো. জসিম উদ্দিন শেখ।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়,গত বুধবার ইফতারের পর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ইয়াসমিন ও তাঁর ভাই শামীম দুইজনে তাঁদের নানি বাড়িতে কিতাব আনতে যান। এ সময় বাড়ির পাশেই অজ্ঞাত কয়েকজন রাস্তার সামনে দাঁড়ান। এ সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরের দিন বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর ভাই (চাচাতো) শামীম তারাবি নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাচ্ছিলেন। এসময় একই জায়গায় আবার তাঁরা রাস্তায় বসে ছিলেন। সেদিনও যাওয়ার সময় আবার তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটির হয়। পরে শনিবার তারাবি নামাজের আগে ১০-১২ জন মসজিদের সামনে শামীম ও তাঁর ভাইকে মারধর করার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়রা বাধা দিলে অজ্ঞাত ১০-১২ জন মসজিদের সামান থেকে চলে গিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা করেন। এ সময় ওই মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ইয়াসমিন ও তার পরিবারের সদস্যকে মারধর করেন।
মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ইয়াসমিনের ভাই শামীম বলেন,’দুই দিন রাস্তায় কথা কাটাকাটি হয়। শনিবার তারাবি নামাজের আগে মসজিদের সামনে কয়েকজন বলতাছে যে মুন্সী কই গেছে। পরে আমি গেলে আমাকে কয়েকবার ধাক্কা দিয়ে মারধর করার চেষ্টা করে। ওই জায়গায় থাকার লোকজন ছাড়িয়ে দিয়ে বলে এদেরকে চিনেছি, এ কথা বলে এ ঘটনা পরে দেখা যাবে জানান । পরে তাঁরা ওই জায়গা থেকে চলে গিয়ে অন্য পাশ দিয়ে আমাদের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা বলছে,’এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা একটা দলের সদস্য। তাঁরা এমন ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটিয়ে থাকে। এর আগেও তাঁরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।বেশির ভাগই ছেলেই মাদকাসক্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হুমায়ুন জানান, আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। কিছু পুলাপান গিয়ে মারধর করছে এটা সত্য। আমি সেদিন মরিচ গুঁড়া করতে গিয়েছিলাম। আমার দলীয় পদ থেকে বাদ দেওয়ার পায়তারা করছে একটি মহল। ইতিমধ্যে আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রমাণ করেছি যে ওই দিনের ঘটনায় আমি জড়িত ছিলাম না।
এ বিষয়ে মেলান্দহ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খান আরিফুল ইসলাম শাওন বলেন, আমরা পরস্পরের মাধ্যমে জানতে পারলাম এই ঘটনা। যদি সে এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকে সেটা যদি প্রমাণিত হয় তাহলে আমরা জেলা ছাত্রলীগের সাথে কথা বলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এই ঘটনায় বাকী অভিযুক্তদের সাথে কথা বলতে তাঁদের বাড়িতে গেলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন,’লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এই ঘটনায় দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পত্রিকা একাত্তর/ সাকিব
আপনার মতামত লিখুন :