নড়াইলে চেয়ারম্যানের করা জরিমানার টাকা পরিশোধ না করায় হামলায় শিকার হয়েছে একটি ঋষি পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের ঋষি পাড়ায়। হামলার শিকার আহত পরেশ দাস অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবেশীদের বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলাকে কেন্দ্র করে গত ৪ এপ্রিল বিকালে কথা-কাটাকাটি এক পর্যায়ে মারামারি হয়। মারামারিতে পরেশ দাস, অন্জনা দাস, নন্দিনি দাস এবং অপর পক্ষের তপন দাস সহ কয়েকজন আহত হয়।আহতদের নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার কথা জানতে পেরে শেখহাটির ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলক বিশ্বাস আমাকে ডেকে চেপে ধরে একপক্ষীয় কথা বলে আমাকে ৩০ হাজার টাকা চিকিৎসা বাবাদ জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা ২ দিনের ভিতর দেওয়ার নির্দেশ ও দেন চেয়ারম্যান। অতিরিক্ত জরিমানার টাকা সঠিক সময়ে দিতে ব্যার্থ হওয়ায় নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখান চেয়ারম্যানসহ তার লোকজন।
এহেন পরিস্থিতিতে পরেশ দাসের ছেলে মানিক দাস পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শেখহাটি পুলিশ ক্যাম্পে দায়িত্ব দেওয়া হয়৷ শেখহাটি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ দুই পক্ষকে ১৫ এপ্রিল ৩ টায় ক্যাম্পে হাজির হতে বলেন। ক্যাম্পে পরেশ হাজির হলে ও বিরোধী পক্ষ হাজির না হওয়ায় ওই সময় এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয় না।
১৬ এপ্রিল রবিবার সকালে পরেশ বাজরে গেলে পুলিশ ক্যাম্পের সামনে তাকে চেয়ারম্যান গোলক বিশ্বাস নিজে দাড়িয়ে থেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তখন চেয়ারম্যানের লোক লাভলু সহ ৬/৭ জন পরেশকে বেধড়ক মারপিট করেন। জরিমানার টাকা না দেওয়ায় এই হামলা করেছেন বলে অভিযোগ করেন পরেশ দাস।
এহেন পরিস্থিতিতে বিচারের দাবিতে দারে দারে ঘুরছে অসহায় এই ঋষি পরিবারটি।
খোজ নিয়ে দেখা গেছে, পরেশের বাবা অনেক আগে মারা গেছেন। মা টকর দাস ভিক্ষাবৃত্তি করে কোন রকম ভাবে জীবিকা নির্বাহ করেন। সরকারি ভাবে ভিক্ষুক পূর্ণবাসনের একটি ঘর পেয়ে কোন রকম ভাবে মাথাগোজার ঠাঁই হয়েছে। যখনই একটু সুন্দর ভাবে ঘরটিতে বসবাসের স্বপ্ন দেখছেন ঠিক তখনই চেয়ারম্যানের অশুভ দৃষ্টি পড়েছে ভিক্ষুক বাড়িতে। ভিক্ষা বৃত্তি করে ৩০ হাজার টাকা যোগার করা কি এতই সহজ? যার দাবি দার এখন চেয়ারম্যান নিজেই। ভিক্ষুক পরিবারে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ইতিমধ্যে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে টকর দাস বলেন, নিজেদের ভিতর ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে মারামারি হয়েছে। আমার মত গরীব অসহায় ভিক্ষুক কিভাবে ৩০ হাজার টাকা দেব? টাকা সঠিক সময়ে দিতে না পারায় আমার অসুস্থ ছেলেকে চেয়ারম্যান সহ তার লোকজন মারপিট করেছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করি।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান গোলক বিশ্বাস বলেন, আহতদের চিকিৎসার জন্য টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাকে দুই- একটা চড় ধাপড় মেরেছে আমি ঠেঁকিয়েছি। পরেশ এক জন খারাপ প্রকৃতির লোক।
পত্রিকা একাত্তর/ হাফিজুল নিলু
আপনার মতামত লিখুন :