বিনামূল্যে ঈদের পোশাক পেয়েছে অটিজম ও প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর


জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল প্রকাশের সময় : ১৬/০৪/২০২৩, ১২:১৪ অপরাহ্ণ /
বিনামূল্যে ঈদের পোশাক পেয়েছে অটিজম ও প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর

নড়াইলে বিনামূল্যে ঈদের নতুন পোশাক পেয়ে উচ্ছ্বসিত অটিজম ও প্রতিবন্ধী শতাধিক শিশু-কিশোর। শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে শহরের রূপগঞ্জস্থ মুস্তারী কমপ্লেক্সে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন-নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাফিজ খান মিলন, নড়াইল প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ, স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মোঃ ফয়সাল মুস্তারী, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মির্জা গালিব সতেজ, সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহ পরানসহ সদস্যরা। মুস্তারী কমপ্লেক্সের সাজানো-গোছানো শোরুম থেকে পছন্দ মতো নতুন পোশাক নিচ্ছে শিশু-কিশোররা। নতুন পোশাকসহ ঈদে সাজ-সজ্জার উপকরণ পেয়ে মহাখুশি সবাই।

নড়াইল সদরের বোড়ামারা অটিজম ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রমজান (১৩) বলে, নতুন পাঞ্জাবী পেয়ে খুশি হয়েছি। রাজিবুল ইসলাম বলে, জানায়, আমি খুব আনন্দিত যে ঈদের দিন পরার জন্য নতুন একটা পোশাক পেলাম।

নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম এলাকার শিশু তৃষা, রাইসা, জান্নাতি ও আব্দুল্লাহসহ অন্যরা জানায়, ঈদের আগে বিনামূল্যে নতুন পোশাক পেয়ে খুব খুশি হয়েছে তারা। সতেজ ভাই আমাদের এই সুযোগ করে দিয়েছেন। ফাউন্ডেশন উপদেষ্টা মোঃ ফয়সাল মুস্তারী বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য নিজেদের তুলে ধরা নয়। অন্যদের ভালো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা, উবুদ্ধ করা। দেশের বিত্তবানরাও এভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবেন, ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করেন নিবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা।

স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহ পরাণসহ সদস্যরা বলেন, ২০১৭ সালের ফ্রেব্রুয়ারি থেকে অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে ফাউন্ডেশনের সদস্য সংখ্যা ৪৫ জন। যাদের বেশির ভাগই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী।

স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মির্জা গালিব সতেজ বলেন, শিশুদের মন সব সময় রঙিন। তবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কষ্টে থাকে। বিশেষ করে ঈদের সময় নতুন পোশাক কেনার সুযোগ পায় না। তাদের মাঝে নতুন পোশাক দিয়ে একটু হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেছি। এতিম, প্রতিবন্ধী, সুবিধাবঞ্চিতসহ ১২০ শিশু তাদের পছন্দ মতো পোশাব বেছে নিয়েছে।

সমাজের অন্যরা এভাবে এগিয়ে আসবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। বিভিন্ন পেশার অনেকে বলেন, তরুণ উদ্যোক্তা মির্জা গালিব সতেজ সব সময় অসহায় ছিন্নমূল মানুষের পাশে আছেন। ২০১৭ সাল থেকে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। করোনার সময়ও অসহায় মানুষকে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন।

এছাড়া বিনামূল্যে সবজি বাজার, গরিব কৃষকের বোরো ধানকর্তন, শিশুদের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, রোজায় ইফতার বিতরণ, গাছের চারা বিতরণ ও বাড়ি বাড়ি বৃক্ষরোপন, দরিদ্র মেধাবীর মাঝে শিক্ষাউপকরণ, ভাসমান বেদে সম্প্রদায়কে শিক্ষাদানসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছেন সতেজ।

এছাড়া ২০২২ সালে সিলেট ও সুনামগঞ্জ এলাকায় বন্যা দুর্গতদেরও পাশে ছিলো স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন। আমরা তাদের পাশে থেকে সবসময় উৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করি। নড়াইলের নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক টৌধুরী বলেন স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন ২০১৭ সাল থেকে সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। করোনার সময়ও অসহায় মানুষের পাশে ছিলো।

এছাড়া ভাসমান বেদে সম্প্রদায়কে শিক্ষাদানসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজের জন্য ‘জয় বাংলা ইয়ুথ পুরস্কার-২০২১’ লাভ করেছে ফাউন্ডেশনটি।

পত্রিকা একাত্তর/ হাফিজুল নিলু