কুষ্টিয়ায় হাসপাতালে রোগীর স্বজনের মাথায় খসে পড়ল পলেস্তারা


জেলা প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া প্রকাশের সময় : ০৯/০৪/২০২৩, ১১:২৪ অপরাহ্ণ /
কুষ্টিয়ায় হাসপাতালে রোগীর স্বজনের মাথায় খসে পড়ল পলেস্তারা

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রোববার বেলা ১১ টার দিকে দোতলায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ৩ নম্বর কেবিনে আবারও ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে এক রোগীর স্বজন আহত হয়েছেন। তাঁর মাথায় সাতটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তাঁকেও ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত সিমা খাতুন (৪৬) জেলার ভেড়ামারা উপজেলা শহরের কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা রিপন আলী শেখের স্ত্রী। তিনি তাঁর অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এসেছেন।

এর আগে ২০২১ সালের ১০ মার্চ একইভাবে পলেস্তারা খসে পড়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক ইফফাত জাহান ও জ্যেষ্ঠ নার্স মৌসুমী আক্তার আহত হয়েছিলেন। একই বছরের ৯ ডিসেম্বর হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। তবে সেদিন কেউ আহত হননি। দুর্ঘটনার পর পুরো ওয়ার্ডে রোগী খালি করে সিসিইউ সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে থাকা রোগীদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছিল।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রিপন আলী হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যান। সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ছিলেন। রোববার বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। এই পলেস্তারা বিছানার পাশে বসে থাকা সিমার মাথার ওপর পড়ে এবং তার মাথা কেটে রক্ত ঝরতে থাকে। খবর পেয়ে হাসপাতালের নার্সরা দ্রুত সিমাকে উদ্ধার করে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেন এবং হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের খবর দেন। কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভর্তি থাকা রিপন আলীকে পাশের আরেকটি কেবিনে স্থানান্তর করেন এবং ৩ নম্বর কেবিন তালা লাগিয়ে দেন।

আহত সিমা জানান, রোববার সকালে একজন চিকিৎসক এসেছিলেন। তিনি স্বামীর ইকো করানোর পরামর্শ দেন। ইকো করার জন্য যাওয়ার প্রস্তুতির সময় হঠাৎ বিকট শব্দ করে ছাদের পলেস্তারা খসে মাথার ওপর আছড়ে পড়ে। নার্সরা খবর পেয়ে ওটিতে নিয়ে যান এবং মাথায় ৭টি সেলাই দেন।

তিনি আরও বলেন, কেবিনে ওঠার পরই ছাদের পলেস্তারায় ফাটল দেখেছিলেন। সন্দেহ হয়েছিল এবং স্বামীকে বলেছিলেন ভেঙে পড়তে পারে। তার এক দিন পর ঘটনা ঘটে গেল।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, আজকের মতো এর আগেও এ রকম ঘটনা ঘটেছে। মাঝেমধ্যে এ রকম ঘটনা ঘটে। মেরামতের কাজও করা হয়। কিন্তু পুরো হাসপাতালের মেরামতের কাজে বড় আকারের বাজেট নেই। কোনটা কোনটা ঝুঁকির মধ্যে আছে, ইতিমধ্যে চেকলিস্ট করা হয়েছে। দ্রুত সংস্কারের জন্য চিঠি দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি সেখানে যাই। ভর্তি রোগীর কোনো সমস্যা হয়নি। রোগীর স্বজন মাথায় চোট পেয়েছেন। তাৎক্ষণিক রোগীকে ওটিতে পাঠিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করানো হয়েছে। ইতিমধ্যে সব ধরনের চিকিৎসা পেয়েছেন তিনি। হাসপাতাল ভবনটি অনেক পুরোনো। তাই মাঝেমধ্যে এমন ঘটনা ঘটে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে।’

কুষ্টিয়ার গণপূর্ত কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, কয়েকবার একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রাথমিকভাবে খসে পড়া জায়গা মেরামত করা হয়। পুরো ভবন মেরামতের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

পত্রিকা একাত্তর/ আনোয়ার হোসেন