যশোরের বাঘারপাড়ায় ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের দায়ে নাজমুল হককে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন যশোরের বিজ্ঞ আদালত। এবং জরিমানা করা হয়েছে একলাখ টাকা। ঘটনার একবছর ৩ মাসের মাথায় রোববার যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এক এর বিচারক গোলাম কবির এ আদেশ দেন।
ফাঁসির দন্ড প্রাপ্ত আসামি নওশের আলীর ছেলে নাজমুল হক ওরফে বান্দে আলী বাঘারপাড়া উপজেলার দোহাকুলা ইউনিয়নের ঠাকুরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা।
আদালতের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপি এডভোকেট সেতারা খাতুন। ধর্ষনের শিকার নিহত রিক্তা খাতুন (৬) একই গ্রামের মুক্তার হোসেনের মেয়ে। রিক্তা স্থানীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মক্তব ভিত্তিক শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানাযায় , নাজমুল ও রিক্তা একই এলাকায় থাকতেন। ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর সকাল থেকে এলাকায় রিক্তাকে খোঁজ করে পায়না তার পরিবার। বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজির এক পর্যায় পুকুরে এবং আশেপাশের খানা গর্তের ভেতর তল্লাশি চালায়।
তাদের সাথে মিশে আসামি নাজমুলও খোঁজাখুজি করতে থাকেন। এর মোধ্যে নাজমুলকে তার বাড়ির কাছে একটি ফাঁকা যায়গায় গর্ত করতে দেখতে পান এলাকাবাসীর।
তার কাছেই শিশুটির স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। পরে নাজমুলকে জিজ্ঞাসা করলে সে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে এলাকাবাসীরা তাকে আটক করেন।
পরে তিনি এলাকাবাসীর কাছে স্বিকার করেন রিক্তার লাশ তার নিজের ঘরের খাটের নিচে বস্তার ভেতর লুকানো আছে। তিনি আরো জানান, রিক্তাকে প্রথমে তিনি ধর্ষণ করেন এবং পরে তাকে হত্যা করে লাশ ওই গর্তের ভিতর পুতে রাখার চেষ্টা করছিলেন।
পরে থানা থেকে পুলিশ এসে শিশুটির লাশ উদ্ধার করেন এবং নাজমুলকে আটক করেন। এ ঘটনায় রিক্তার বাবা মুক্তার আলী বিশ্বাস বাদী হয়ে যশোরের বাঘারপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আটকের পর পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করলে, হত্যা ও ধর্ষণের বিষয়টি তিনি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
তখন থেকেই আটক রয়েছেন নাজমুল। এরপর মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ১৭ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আওয়াল হোসেন। এ মামলায় ১৬ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৫ই মার্চ রবিবার বিজ্ঞ আদালত বাদী এবং আসামির উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষনা করেন। রায় শোনানোর পর আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন ।
এ বিষয়ে মামলার বাদীসহ তার পরিবারের সদস্যরা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সেইসাথে দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকারের দাবি জানান বাদী পক্ষ।
আসামি পক্ষে এমামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। আসামি পক্ষ এ রায়ে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানিয়েছেন।
পত্রিকা একাত্তর/ মোজাপ্ফার হুসাইন