বরগুনার বেতাগীতে উজ্জ্বল ঢাকী (১৯) নামের এক কলেজ ছাত্রকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। পাওনা টাকা পরিশোধে দেরী হওয়ায় তাকে শিকলে বেধেঁ নির্যাতন করে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী।শনিবার (২৯ জানুয়ারী) সকালে কলেজ ছাত্রর শিকলে বেধে নির্যাতনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্র উজ্জল ঢাকী (১৯) বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের পুলেরহাট এলাকার পরিমল ঢালীর ছেলে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ব্যবসায়ী আরাফাত হোসেনের কাছ থেকে ২৪ হাজার ৫'শত টাকা ধার নিয়ে বিকাশের মাধ্যমে নিজের এক বন্ধুকে পাঠায় কলেজছাত্র উজ্জল। ধার নেয়া টাকা দিতে দেরী হওয়ায় গত সোমবার (২৪ জানুয়ারী) স্থানীয় এক সাবেক ইউপি সদস্য রাজু মৃধার সহায়তায় কলেজছাত্র উজ্জ্বলকে লোহার শিকল দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে আরাফাত হোসেন।
মধ্যযুগীয় কায়দায় কোমড়ে শিকলে বাঁধা অবস্থায় একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয় বরগুনা জেলা জুড়ে। অনেকেই এঘটনার নিন্দা জানিয়ে ব্যাক্তিগত মত প্রকাশ করেছে।বেতাগী পৌরশহরের বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসাইন, বলেন, ছবিটি আমি বেতাগীর একটি ফেসবুক গ্রুপে দেখলাম। মধ্যযুগীয় কায়দায় সামান্য কয়টা টাকার জন্য শিকলে বেঁধে মারধরের কোন প্রশ্নই আসে না।
কলেজছাত্র উজ্জ্বলের বাবা পরিমল ঢাকী জানান, আমার পোলাটা কলেজে পড়াশোনা করেন শিকল দিয়ে বেঁধে মারধর করে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরিয়ে দিয়েছে। আমি ঘটনার দিনই পুলিশের কাছে অভিযোগ দিছেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্র উজ্জ্বল বলেন, আমি বিকাশে ব্যবসায়ী আরাফাতের কাছ থেকে টাকা পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু টাকাটা ভুল নাম্বারে যায়। ভাবছি কয়েকদিন পরে টাকা দিয়ে দিবো। কিন্তু সে এবং সাবেক ইউপি আমাকে একা পেয়ে শেকল দিয়ে বেঁধে মারধর করেন। আমরা সংখ্যালঘু বলে আমার সাথে এমন অমানবিক নির্যাতন করলো। আমাকে ও আমার পরিবারকে সামাজিক ভাবে হেনস্থা করলো। একজন ছাত্র হিসেবে আমি এর বিচার চাই।
ব্যবসায়ী আরাফাত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, উজ্জ্বল ভালো ছেলে কলেজে পড়াশোনা করে আমি উজ্জ্বলকে দোকানে বসিয়ে রেখেছি। কিন্তু কে বা কারা শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলো আমার জানা নেই সাবেক ইউপি সদস্য রাজু মৃধা তখন উপস্থিত ছিলেন।সাবেক ইউপি সদস্য রাজু মৃধা জাগো নিউজকে বলেন, উজ্জ্বল ভালো পোলা কলেজ পড়ুয়া ছাত্র, বিষয়টি একটু খারাপ দেখালেও টাকা উঠানোর জন্য এছাড়া আর কোন উপায় ছিলোনা।
বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহআলম হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, এঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মামলাটি তদন্ত চলো নাম রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় অপরাধীদের আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পত্রিকা একাত্তর/ তাওহীদুল ইসলাম