সড়কের দু'পাশই দখল করে ধান মাড়াই, ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

উপজেলা প্রতিনিধি, রাণীশংকৈল

২৫ মে, ২০২২, ১ year আগে

সড়কের দু'পাশই দখল করে ধান মাড়াই, ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

ঠাকুরগাঁওয়ের প্রধান প্রধান সড়কসহ জেলার গ্রামাঞ্চলের পাকা সড়ক গুলোতে বর্তমানে ধান মাড়াই, ধান ও খড় শুকানো হচ্ছে। প্রধান সড়কের অর্ধেক রাস্তা খর ও ধান দিয়ে ব্লক করা হয়েছে। এ নিয়ে সড়কে চলাচল করতে চরম বিপাকে পড়েছেন ও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন সব রকমের যানবাহনের গাড়ি চালকরা।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। সকাল হলেই বিশেষ করে জেলার ঠাকুরগাঁও-বালিয়াডাঙ্গী রাণীশংকৈল - নেকমরদ মহাসড়কের কৃষষকরা ক্ষেত থেকে ধান কেটে রাস্তায় মাড়াই করে ও রাস্তার উপরে দু'পাশেই ধান ও ধানের খড় শুকাচ্ছেন বিকাল অব্দি।

আর বিকাল থেকে শুরু হয় রাস্তায় ঢেলে দেওয়া ধান বস্তায় করে তুলে বাড়ি নিয়ে যাওয়া। খর গুলোকে জড়ো করে রাস্তার পাশেই বড় বড় স্তুপ করে রাখেন। শুকিয়ে গেলে অনেকে আবার বাড়িও নিয়ে যান। বিগত কয়েক বছর ধরে এভাবেই বিভিন্ন ফসল মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছেন স্থানীয়রা।

প্রতিবছর জেলার বিভিন্ন সড়কে বিভিন্ন ফসলের মৌসুমে এ ভাবে রাস্তাগুলোর অর্ধেক জায়গা দখল করে ফসল শুকানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। তাতে সড়ক গুলোতে গাড়ি চলাচলের রাস্তা সরু হয়ে যায়। গাড়ি অভারটেকিং করাসহ নানা ধরনের সমস্যা হয়। ফলে সড়কে চলাচলে বিঘ্নতা সৃষ্টির কারনে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা দুর্ঘটনার শিকার হন। এতে অনেকের প্রাণনাশের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।

এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন সড়কে চলাচলকারীরা ও গাড়ি চালকরা। রাস্তা থেকে এসব দ্রুত অপসারণ করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন তারা।

সড়কে যেন এভাবে কোন ফসল শুকানো না হয় সে বিষয়ে প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে মাসুদ রানা নামে এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, 'রাস্তার উপর দু'পাশে বিভিন্ন সময় ধান,গম, ভূট্টা, ধানের খর শুকানোর ফলে অনেক ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।,

মাহিন্দ্র গাড়ী চালক বাবুল হক বলেন, 'এভাবে রাস্তার উপরে ধান ও খর শুকানোর ফলে গাড়ির ব্রেক ঠিকভাবে ধরে না গাড়ি স্লিপ করে চলে যায়। এভাবে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে ফলে মানুষ আহত ও নিহত হন।,

মোটরসাইকেল আরোহী ফারুক হোসেন বলেন, 'সড়কে এভাবে ধান ও খর শুকানোর ফলে অনেক মানুষের বিপদ হচ্ছে। এ বিষয়ে জরুরিভাবে প্রশাসনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।,

আমিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, 'ধান খর দিয়ে রাস্তায় মরণ ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে। এভাবে এক্সিডেন্ট করে মানুষ মারা যাচ্ছে কিন্তু প্রশাসন এগুলো কিছুই দেখে না।,

জীবনের ঝুঁকি থাকলেও বাড়িতে জায়গা সংকটের কারণে কৃষকরা বাধ্য হয়ে রাস্তার উপর ধান মাড়াই করে ধান ও খর শুকাচ্ছেন বলে জানান তারা। লুৎফর রহমান নামে এক কৃষকের কাছে রাস্তায় ধান ও খর শুকানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বাড়িতে জায়গা নেই। তাই উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে রাস্তায় এগুলো শুকাচ্ছি।,

আইয়ুব আলী নামে এক কৃষক বলেন, 'এখন বর্ষাকাল। বৃষ্টির কারণে বাড়ির আঙিনা গুলো কাদা হয়ে গেছে। এজন্য জীবনের ঝুঁকি থাকলেও ও কষ্ট হলেও ধান ও খর রাস্তায় শুকাইতে হচ্ছে।,

জেলা প্রশাসককে রাস্তার উপরে ধান ও খর শুকানোর বিষয়টি অবগত করা হলে জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, 'রাস্তার উপর এভাবে ধান শুকানোর কোনো সুযোগ নেই। রাস্তায় ধান ও খর শুকানোর ফলে দুর্ঘটনার প্রবণতা অবশ্যই সৃষ্টি হতে পারে। তাই এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দের মাধ্যমে মানুষদের সচেতন করা হবে। যাতে তারা রাস্তায় ধান ও খর না শুকায়।

পত্রিকা একাত্তর /আনোয়ার হোসেন আকাশ

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news