patrika71
ঢাকাসোমবার , ২৯ মে ২০২৩
  1. অনুষ্ঠান
  2. অনুসন্ধানী
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আবহাওয়া
  7. ইসলাম
  8. কবিতা
  9. কৃষি
  10. ক্যাম্পাস
  11. খেলাধুলা
  12. জবস
  13. জাতীয়
  14. ট্যুরিজম
  15. প্রজন্ম
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট চরমে!

বেরোবি প্রতিনিধি
মে ২৯, ২০২৩ ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

উত্তরবঙ্গের শিক্ষা দর্পণ নামে পরিচিত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষক সংকট চরমে! বর্তমান শিক্ষকের সংখ্যা ১৮৮ জন। এর মধ্যে শিক্ষাছুটিতে রয়েছেন ২৮ জন শিক্ষক। অর্থাৎ প্রতি ছয় জন শিক্ষকের একজন শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক ১৮৮ জন রয়েছেন।অর্থাৎ প্রতি ৪২ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক রয়েছে। ফলে অতিরিক্ত ক্লাসের চাপে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষকদের গবেষণা কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে রংপুরের এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। সেখানে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে মাত্র ১৮৮ জন। অর্থাৎ প্রতি ৪২ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক রয়েছে।

বৈশ্বিকভাবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতের ন্যূনতম মানদণ্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য অন্তত একজন শিক্ষক থাকবেন। জাতীয় পর্যায়েও দেশের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এ মানদণ্ড অনুসরণে উৎসাহিত করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। যদিও সে লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে দেশের বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম।

অথচ ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলে বাস্তবে সেটার উল্টো পথে হাঁটসে রংপুরের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি।

ফলশ্রুতিতে গড়ে একজন শিক্ষককেই নিতে হচ্ছে ৮-১০ টি কোর্স। অতিরিক্ত ক্লাস-পরীক্ষার চাপে গবেষণা কার্যক্রমে যথেষ্ট সময় দিতেন পারছেন না শিক্ষকরা। শিক্ষক স্বল্পতায় কার্যত ঝিমিয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষণা কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে থেকে জানা গেছে, ১৮৮ জন শিক্ষকের মধ্যে ২৮ জন শিক্ষক রয়েছেন শিক্ষা ছুটিতে এবং বাকি ১৬০ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান। এতে বিভাগ প্রতি গড়ে মাত্র ১১ শিক্ষক আছেন। ২২ টি বিভাগের মধ্যে পদার্থবিজ্ঞান, কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং, লোকপ্রশাসন, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের নাজুক অবস্থা।

জানা যায়, চার বছর মেয়াদের আট সেমিস্টারের স্নাতকে পড়ানো হচ্ছে ন্যূনতম ৪৮ টি কোর্স এবং এক বছর মেয়াদের দুই সেমিস্টারের স্নাতকোত্তরে পড়ানো হয় ন্যূনতম ১২-১৪ টি কোর্স। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় এক শিক্ষককে নিতে হচ্ছে ৮-১০ টি কোর্স। কিছু বিভাগে তারও বেশি।

শিক্ষকদের কাছ থেকে জানা যায়, গত চার বছরে বেরোবির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ইউজিসি থেকে একটি পোস্টও নিয়ে আসতে পারেননি। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বছর জন্য সরকার হতে বিশেষ অনুদান খুবই প্রচলিত হয়েছিল। সেমসয় যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় অনুদান প্রাপ্তির জন্য গিয়েছিল তারা অনুমান পেয়েছে কিন্তু তৎকালীন সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় বান্ধব, শিক্ষার্থীবান্ধব কোন কর্মসূচি নিয়ে ইউজিসি বা মন্ত্রণালয় প্রেরণ করা হয়নি।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ বলেন, শিক্ষক সংকটের জন্য প্রধানত একাডেমিক ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের শিক্ষকদের যেমন ব্যক্তিগত গবেষণার জায়গা থাকে, তাদের নিজেদের পড়াশোনার জায়গা থাকে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষক নিয়োগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ন্যূনতম যে নির্দেশিকা সেটা আমরা পালন করা সত্বেও ইউজিসি আমাদের শিক্ষক দিচ্ছে না।এছাড়াও ওয়ার্কলোড ক্যালকুলেশনে যে পরিমান শিক্ষক থাকার কথা সেটিও নেই।

তিনি আরও বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গত চার বছর শিক্ষকদের কোন পদ চাওয়া হয়নি। ফলে বর্তমান উপাচার্যের উপর এর প্রভাব পড়েছে। এটা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। যার ফলশ্রুতিতে আমরা পদ পাচ্ছিনা। অতীতে যদি পদ চাওয়া হতো তাহলে শিক্ষকদের সংকট এখন অনেকটা কমে যেত।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক সংকটের কারণে নবীন শিক্ষকরা ভালো মানের গবেষণা করতে পারছেন না। ডিগ্রি অর্জনের জন্য তারা বাইরে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। ফলে তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষাও পূর্ণ হচ্ছে না। আমরা ইউজিসির সঙ্গে নতুন শিক্ষকের পদ পাওয়ার জন্য যোগাযোগ করছি। আশা করি খুব দ্রুত শিক্ষক পাবো।

রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আলমগীর কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে শিক্ষক চাওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিতে চিঠি পাঠিয়েছি।

এ বিষয়ে বেরোবি উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে। শিক্ষকের পদ চেয়ে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে আবেদন করেছি। পদ পেলে নিয়োগ দেয়া হবে।

পত্রিকা একাত্তর/  ফারহান সাদিক