অটোরিকশার দৌরাত্ম মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু

চট্টগ্রাম মহানগর প্রতিনিধি

২ জুন, ২০২২, ১ year আগে

অটোরিকশার দৌরাত্ম মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ বৃহত্তর বাকলিয়া থানাধীন বউ বাজার এলাকায় খাজা হোটেলের সামনে বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় এক মাদ্রাসার ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

গত পহেলা জুন বুধবার সকাল ৯ টার দিকে বউ বাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। নিহত শিশুর নাম ওমর ফারুক (৭) সে চরচাকতাই স্কুল মাঠ সংলগ্ন বাদশামিয়া কলোনির বাসিন্দা রমজান আলীর ছেলে বলে জানা যায়।একই সময়ে শিশু ওমর ফারুকের মৃত্যুর রেশ না কাটতেই

একই স্থানে অপর আরেকটি ব্যাটারি চালিত রিকশার ধাক্কায় দূর্ঘটনার শিকার হন ফাতেমা নামের এক পথচারী।তাহার পায়ের আঙ্গুলের উপর দিয়ে অটোরিকশা যাওয়াতে তার বাম পায়ের আঙ্গুল থেতলে যায়।এই বিষয়ে তাৎক্ষণিক কর্তব্যরত পুলিশ বাকলিয়া থানার এসআই সিরাজকে অবহিত করলে ও কোন প্রকার অদৃশ্য কারণে বিষয়টি কর্নপাত না করে উল্টো ৯৯৯ ফোন করতে বলেন তিনি।

নগরীর বেশ কয়েকটি পাড়া-মহল্লায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে নগরবাসী এবং প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।এই বিষয়ে

স্থানীয়রা জানান দ্রুতগতি সম্পন্ন হওয়ার এইসব যানের চালকরা সহজে ব্রেক কষতে না পারায় প্রতিনিয়ত ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এবং ঝরে যাচ্ছে অকালে অনেক তাজা প্রাণ, অকালে পঙ্গুত্ব বরণ করছে অনেকে।স্থানীয়রা এলাকাবাসী জানায়, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার মালিক কথিত যুবলীগ নেতা মোঃআবু মোর্শেদ। তার একাই আছে অন্তত ৫০টির বেশী ব্যাটারি চালিত রিকশা।

ঘটনার পরপরই মোর্শেদের ছোট ভাই আবু তারেক রিকশাটি সরিয়ে গ্যারেজে নিয়ে লুকিয়ে রাখে। পরে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর তোপের মুখে পুলিশ সেই গ্যারেজ থেকে ব্যাটারি চালিত রিকশাটি জব্দ করে তারেক সহ গ্যারেজের কর্মীদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তবে ঘটনার পর থেকে এই রুটে ব্যাটারি রিকশা সিন্ডিকেটের মুল হোতা আবু মোরশেদ গা ঢাকা দিয়ে আছে।

একাধিক ব্যাটারি রিক্সা চালক প্রতিবেদককে জানায়, স্থানীয় থানা পুলিশকে ম্যানেজ করেই সরকার দলীয় প্রভাবশালী নেতাদের নাম ভাঙিয়ে স্থানীয় কিছু ব্যাক্তি অবৈধ ব্যাটারি চালিত রিকশা গুলো পরিচালনা করেছে দীর্ঘদিন। এছাড়াও স্থানীয় এলাকাবাসির অভিযোগে আরও জানাযায় উক্ত এলাকায় কয়েক শতাধিক ব্যাটারি রিকশা চালক স্থানীয় নেতাদের প্রভাব দেখিয়ে দাপট সাথে বেপরোয়া গতিতে অটোরিকশা গুলো চালায়।

এই সবের কারণে প্রতিদিন কোন না কোন দুর্ঘটনা ঘটছে। ওমর ফারুকের মৃত্যুর ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।সরেজমিনে গিয়ে ঘঠনার তথ্য জানতে গিয়ে তলের বিড়াল বেড় হয়ে আসে। অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা বাকলিয়া ১৯ নং ওয়ার্ড নতুন ব্রিজ সংলগ্ন রোড তুলাতুলি ব্রিজ দখল করে অটোরিক্সার স্টেশনে পরিণত হয়েছে যা সুস্পষ্ট ও স্থায়ীভাবে ভাসমান দোকানের উপস্তিতি।

যার কারণে স্থানীয় জনসাধারণ, পথচারীদের প্রতিনিয়ত দীর্ঘ যানজট ও নানা ধরনের ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। এই বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিল নুরুল আলম মিয়ার কোন নজরদারী নেই যা রীতি মতো হতবাক হওয়ার মতো ঘঠনা। এই সব অবৈধ অটোরিক্সা মাননীয় হাইকোর্ট থেকে চলাচলের অবৈধ ঘোষনা করা হলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এলাকাবাসী জানান।

সরকার দলীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগের নেতা, পুলিশ প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যাক্তি এবং বাকলিয়া বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারী মাসিক ২০০০ হাজার টাকা করে নিয়ে রাস্তায় এই সব অবৈধ অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দিয়ে, তদারকি করে থাকেন। এতে বেশ কিছু অসাধু কর্মকর্তার নাম উঠে আসে।সাবেক কাউন্সিলর শহীদুল্লাহর ভাই মহিবুল্লাহ,দেলোয়ার,রাশেদ সোলেমান,মুন্সি আরো অনেকেই এই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত বলে জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন সন্ধ্যার পর তুলাতুলি থেকে বউবাজার পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে ভাসমান দোকান থেকে দৈনিক মোটা অংকের হারে চাঁদাবাজি করে আসছে সরকারদলীয় নামধারী কিছু স্থানীয় নেতাদের পরিচালিত কিশোর গ্যাং, অবাধে বিক্রি করছে মাদক।এই সব বিষয়ে সত্যতা যাচাই করতে বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদুল ইসলামকে একাধিক বার ফোন করলেও পাওয়া যায়নি ও ফোন রিসিভ করেননি।

পত্রিকা একাত্তর /ইসমাইল ইমন

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news